জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ৯ বছর ও তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানকে ৩ বছর কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. আছাদুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন।
একই সঙ্গে আদালত তারেক রহমানের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ২ কোটি ৭৪ লাখ ৯৩ হাজার ৮৭ টাকার সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া তারেককে তিন কোটি টাকা ও জুবাইদাকে ৩৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে।
এর আগে গত ২৭ জুলাই মামলাটির যুক্তিতর্কে শুনানি শেষে রায়ের এ তারিখ ঠিক করেন একই আদালত। মামলার আসামি তারেক রহমান ও জুবাইদা রহমান বিদেশে অবস্থান করছেন। তারা বিচারের মুখোমুখি না হওয়ায় তাদের পক্ষে আইনজীবীরা আইনি লড়াই করতে পারেননি।
চলতি বছর ১৩ এপ্রিল তারেক রহমান ও ডা. জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। এরপর থেকে বিএনপি দলীয় আইনজীবীরা এ বিচারকে প্রহসনের বিচার বলে দাবি করে আসছেন। এ বিচার ঠেকাতে তারা আদালত প্রাঙ্গণে মামলার প্রত্যেক ধার্য্য তারিখে বিচারের বিরুদ্ধে মিছিল-সমাবেশ করেছেন। এমনকি সংশ্লিষ্ট আদালতের মধ্যেও একাধিক দিন তারা এ মামলার বিচার নিয়ে আওয়ামী লীগ দলীয় আইনজীবীদের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন।
ঘোষিত আয়ের বাইরে ৪ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার মালিক হওয়া এবং সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কাফরুল থানায় এ মামলা করে দুদক। ২০০৮ সালে দুই কোটি ২৩ লাখ টাকা তার অবৈধ উপার্জন এবং ৫৮ লাখ টাকার তথ্য গোপনের অভিযোগে চার্জশিট দাখিল হয়। ২০০৮ সালে তিন জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
২০২২ সালের ২৬ জুন হাইকোর্ট তারেক ও জুবাইদাকে ‘পলাতক’ ঘোষণা করে ৪ কোটি ৮২ লাখ টাকার দুর্নীতি মামলা দায়ের ও তার প্রক্রিয়ার বৈধতা নিয়ে করা পৃথক রিট আবেদন খারিজ করে দেন।
রিট খারিজ করে দেওয়া রায়ে হাইকোর্ট একইসঙ্গে ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় দায়ের করা এ মামলার স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে সংশ্লিষ্ট নিম্ন আদালতকে যত দ্রুত সম্ভব বিচার কার্যক্রম শেষ করার নির্দেশ দেন। চলতি বছর ১৩ এপ্রিল তারেক রহমান ও ডা. জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন একই আদালত। গত ২৪ জুলাই মামলাটিতে সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়। মামলাটিতে ৫৬ সাক্ষীর মধ্যে ৪২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ।