মিশরস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে ০৮ আগস্ট ২০২৩ (মঙ্গলবার) যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল-এর ৭৪তম জন্মবার্ষিকী এবং বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিনী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব-এর ৯৩তম জন্মবার্ষিকী পালন করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত এর পর বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব ও শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালসহ জাতির পিতা, তাঁর পরিবারের অন্যান্য শহিদ সদস্য এবং মুক্তিযুদ্ধে বীর শহিদদের আত্মার শান্তি কামনা এবং দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধি প্রার্থনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
মোহাম্মদ ফেরদৌস এর সঞ্চালনায় আলোচনা পর্বের শুরুতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনানো হয় এবং বঙ্গমাতা ও শেখ কামাল-এর জীবন-কর্মের উপর নির্মিত দুটি প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হয়।
আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রবাসী বাংলাদেশি, আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা এবং দূতাবাসের কর্মকর্তারা শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল এবং বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব-এর গৌরবময় জীবন নানা দিক তুলে ধরে তাদের গৌরবময় জীবন সম্পর্কে আলোচনা করেন। বক্তাগণ বিশেষভাবে উল্লেখ করেন যে, শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল মুক্তিযুদ্ধের একজন বড় সংগঠক ছিলেন এবং পরবর্তীতে স্বাধীন বাংলাদেশের ক্রীড়া, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে গেছেন।
আলোচনায় বক্তরা বলেন, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী মহীয়সী নারী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত নম্র, শান্ত ও অসীম ধৈর্যের অধিকারী ছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু এবং বঙ্গবন্ধুর প্রতিটি পদক্ষেপ ও কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য নেপথ্য শক্তি, সাহস ও বিচক্ষণ পরামর্শক হয়ে জড়িয়ে আছেন বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব। বঙ্গমাতার সততা, সাহসিকতা, মহানুভবতা, উদারতা ও ত্যাগের মহিমা বাঙ্গালীসহ বিশ্বের নারীদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।
অনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত মনিরুল ইসলাম বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের গৌরবোজ্জ্বল কর্মময় স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তাঁর অনুকরণীয় জীবন সম্পর্কে আলোচনাকালে রাষ্ট্রদূত বলেন, বহু গুণের অধিকারী শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এছাড়া, দক্ষ উদ্যোগী সংগঠক হিসেবে তিনি বাংলাদেশের রাজনীতি, ক্রীড়া ও সংস্কৃতির উন্নয়নে এবং বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে গেছেন যা বাংলাদেশের জনগণের জন্য বিশেষত যুব সমাজের কাছে অফুরন্ত অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।
বঙ্গমাতা সম্পর্কে রাষ্ট্রদূত বলেন, সংগ্রামী জীবনে জাতির পিতাকে বহুবার কারাবরণ করতে হয়েছে এবং এ সময় বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিব দৃঢ়তা, বিচক্ষণতা ও অসীম সাহসিকতার সাথে কঠিন পরিস্থিতির মোকাবেলা করেছেন এবং সারা জীবন বঙ্গবন্ধুকে সর্বক্ষেত্রে অনুপ্রেরণা এবং সাহস যুগিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, বঙ্গমাতা তাঁর প্রজ্ঞা ও বিচক্ষণতার দ্বারা বঙ্গবন্ধুকে সিদ্ধান্ত গ্রহণে, দলকে সংগঠিত করতে এবং স্বাধীনতা আন্দোলনকে সঠিক লক্ষ্যে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তিনি শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল এবং বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব-এর ত্যাগ-তিতিক্ষাপূর্ণ গৌরবময় জীবন ও আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে সকলকে জাতির পিতার ‘সোনার বাংলা’ বাস্তবায়নে একযোগে কাজ করে যাওয়ার আহবান জানান।
শুভ জন্মবার্ষিকীকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য রাষ্ট্রদূত আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ণরত বাংলাদেশী কৃতি শিক্ষার্থীদের হাতে সম্মাননাপত্র প্রদান করেন এবং তাদের নিয়ে বঙ্গমাতা ও শেখ কামালের জন্মবার্ষিকীর কেক কাটেন।