সম্প্রতি শুটিং সেটে ‘দুর্ব্যবহার’র অভিযোগ ওঠে অভিনেত্রী রুকাইয়া জাহান চমকের বিরুদ্ধে। এরপর অভিনেত্রী ‘যৌন হয়রানির’ মিথ্যা অভিযোগ তোলেন সহকর্মী অভিনেতা আরশ খানের বিরুদ্ধে, যা গড়ায় থানা পুলিশ পর্যন্ত। তবে বিষয়টি নিজেদের মধ্যে সমাধান করার জন্য এগিয়ে আসে নাট্য সংগঠনগুলো। এ নিয়ে ১৩ আগস্ট আলোচনার টেবিলে বসে নাটকপাড়ার তিন অভিভাবক সংগঠন টেলিভিশন প্রগ্রাম প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টেলিপ্যাব), ডিরেক্টরস গিল্ড ও অভিনয়শিল্পী সংঘ।
সেখানের রায়- জ্যেষ্ঠ অভিনেতা ফখরুল বাসার মাসুম, নির্মাতা আদিফ হাসানসহ ইউনিটের সবার সঙ্গে যে আচরণ করেছেন তা অভিনেত্রী চমকের ভুল ছিল এবং পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন ইন্টারভিউতে অভিনেতা আরশ খানের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এনেছেন তাও সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। শুধু তাই নয়, চমককে শাস্তি হিসেবে ক্ষমা চাওয়ার পাশাপাশি আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে হবে নির্মাতাকে।
তবে এতে সন্তুষ্ট নয় নির্মাতারা। আর সে কারণে আবারও চমকের বিষয়টি নিয়ে আজ সোমবার সকালে আলোচনায় বসে তারা।
এবার নির্মাতাদের সংগঠন ডিরেক্টরস গিল্ড থেকে নেওয়া হয়েছে নতুন সিদ্ধান্ত। আগামী তিন মাসের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে চমককে। যা কার্যকর হবে আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে। সঙ্গে থাকছে আর্থিক ক্ষতিপূরণ ও মামলা তুলে নেওয়ার বিষয়টিও। ক্ষতিপূরণ ও মামলার বিষয়টি আগামী ৩০ দিনের মধ্যেই সুরাহা করতে হবে। ক্ষতিপূরণ হিসেবে চমককে দিতে হবে ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা। এছাড়াও তার হাতে থাকা অসমাপ্ত কাজগুলো শেষ করতে হবে চলতি মাসেই।
এর আগে, ১৩ আগস্ট নাট্যপাড়ার তিন সংগঠন আলোচনায় বসে আরও সিদ্ধান্ত নেয়-
১. অভিনেত্রী রুকাইয়া জাহান চমক ক্ষতিগ্রস্ত নাটকের প্রযোজক, পরিচালক ও জ্যেষ্ঠ অভিনেতা ফখরুল বাশার মাসুমসহ সকলের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিক ভাবে দুঃখপ্রকাশ ও ক্ষমা চাইবেন।
২. শ্বশুর বাড়ির প্রথম দিন নাটকটি নির্মাণ সম্পন্ন করতে বাকি যে অর্থের প্রয়োজন হবে তা ক্ষতিপূরণ হিসেবে চমক প্রদান করতে বাধ্য থাকবেন।
৩. অভিনেতা আরশ খান ও পরিচালক আদিফ হাসানের বিরুদ্ধে চমক থানায় যে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন তা অনতিবিলম্বে নিষ্ক্রিয় করবার ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
৪. ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে না, যদি ঘটে তবে সংগঠন কর্তৃক যে কোনো শাস্তি গ্রহণ করতে তিনি বাধ্য থাকবেন বলে লিখিত ভাবে অঙ্গীকার করবেন। আগামী ৬ মাস তিনি সকল সংগঠনের পর্যবেক্ষণে থাকবেন। তার বিরুদ্ধে কোনো প্রকার অভিযোগ যেন না আসে সে বিষয়ে সচেষ্ট থাকবেন।
৫. যেহেতু সোশ্যাল মিডিয়া কিংবা অনলাইন ইন্টারভিউ ইন্ডাস্ট্রির অভ্যন্তরীণ কোনো ঘটনার সমাধান নিতে পারে না বরং যে কোনো পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করে সেহেতু এখন থেকে আন্তঃসংগঠনের কার্য নির্বাহী কমিটির এবং সকল সংগঠনের সকল সাধারণ সদস্য যেকোনো ঘটনার প্রেক্ষিতে যার যার সংশ্লিষ্ট সংগঠনে অভিযোগ করবেন। যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার প্রেক্ষিতে ইন্টারভিউ এবং সোশ্যাল মিডিয়াতে কোনো প্রকার পোস্ট করতে পারবেন না।
৬. শুটিং পরিবেশ সুষ্ঠু সুন্দর রাখার লক্ষ্যে কলাকুশলীদের বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো। কেউ যদি কোনো প্রকার অসদাচরণ, বিশৃঙ্খলা, কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ বিনষ্ট করেন তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।