প্রতিরক্ষা সহযোগিতা নিবিড় করতে বাংলাদেশকে সরকারি নিরাপত্তা সহায়তা (ওএসএ) প্রকল্পে জাপান যুক্ত করেছে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি। দেশটির নতুন এ কর্মসূচিতে প্রথম বছরে চারটি দেশের একটি বাংলাদেশ বলেও জানান রাষ্ট্রদূত।
শনিবার (২৬ আগস্ট) জাপান দূতাবাসের মিলনায়তনে এক গোলটেবিল আলোচনার সমাপনী অধিবেশনে দেওয়া বক্তৃতায় এসব কথা বলেন রাষ্ট্রদূত কিমিনোরি।
গবেষণাপ্রতিষ্ঠান প্যান এশিয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পারি) ‘বাংলাদেশ-জাপান কৌশলগত সম্পর্ক বাস্তবায়ন: কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক ও জনগণ সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক’ শীর্ষক ওই আলোচনার আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।
রাষ্ট্রদূত বলেন, সশস্ত্র বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা জোরদার করতে বাংলাদেশকে ওএসএতে যুক্ত করা হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (ইপিএ) সইয়ের জন্য গত বছরের ডিসেম্বরে যৌথ সমীক্ষা দল গঠন করা হয়েছে। এরই মধ্যে দুই দফা আলোচনা শেষ হয়েছে।
সমীক্ষা দল তৃতীয় দফা আলোচনা শেষ করে খুব দ্রুত ইপিএ শুরু করতে চায় বলে জানান রাষ্ট্রদূত।
তিনি বলেন, ইপিএ রূপরেখার আওতায় সহযোগিতা বাড়াতে সমরাস্ত্র বিনিময় ও প্রযুক্তি বিনিময়ে সাম্প্রতিক মাসগুলোয় ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে।
জাপানের রাষ্ট্রদূত বলেন, জাপানি অর্থায়নে বাংলাদেশে বড় প্রকল্পগুলোর বিশেষ অগ্রগতি হয়েছে। এরমধ্যে আগামী অক্টোবরে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল চালু হবে। এছাড়া মেট্রোরেল প্রকল্পের প্রথম ধাপ চালু হয়েছে। ঢাকা-নারিতা বিমান যোগাযোগও চালু হয়েছে।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, কুষ্টিয়ায় জন্ম নেওয়া বাঙালি বিচারপতি রাধা বিনোদ পাল বাংলাদেশ- জাপান সম্পর্কের ভিত্তি গড়েছিলেন। তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষিতে ট্রায়ালে যে ভূমিকা রেখেছিলেন, সেটা এখনো জাপানি মানুষদেরও মনে আছে। এছাড়া ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় জাপানি শিক্ষার্থীরা টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে বাংলাদেশের শরণার্থীদের জন্য সহায়তা পাঠিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, ২০১৪ সালে জাপানি প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের ঢাকা সফর ও ২০২৩ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফর দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কে বিশেষ গতি এনেছে। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বেড়েছে। এই প্রথম বারের মতো দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য চার বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে।
তিনি আরও বলেন, ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগ বাড়ানোর কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আর এ যোগারযাগ বাড়াতে সহায়তা দিচ্ছে জাপান।
আলোচনা সভায় জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দীন আহমদ বক্তব্য দেন।