মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ ডেস্কঃ
১০ জুন শেষ হলো নিউ ইয়র্কের জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের উচ্চ পর্যায়ের সভা। এই সভার সমাপ্তি টানা হয় ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০-এর আওতায় এইচআইভি বা এইডসকে ২০৩০ সালের মধ্যেই জনস্বাস্থ্য সমস্যার তালিকা-বিমুক্ত করা হবে’- এই প্রত্যয় নিয়ে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের প্রেসিডেন্ট মোগেনলাইকেটফটের আহ্বানে এই উচ্চ পর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত হয়। জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন উদ্বোধন অধিবেশনে বক্তব্য দেন।
তিনি বলেন, এইডস রোগের চিকিৎসা ও বিস্তার রোধে বিশ্বব্যাপী গৃহীত কার্যক্রম এবং অর্জিত সাফল্য উদ্ভাবন এবং প্রেরণার একটি দারুন উদাহরণ। আমাদের এই শক্তিকে কাজে লাগাতে হবে।
উদ্বোধন অধিবেশনে ইউএনএইডস-এর নির্বাহী পরিচালক মাইকেল সিদিবী ছাড়াও নেলসন ম্যান্ডেলার নাতি এনদাবা ম্যান্ডেলা বিশ্ব নেতৃত্বের ঐক্যের মাধ্যমে এইডস সমস্যার সমাধান করার আহ্বান জানান।
জাতিসংঘের এই সভায় অংশ নেন কমপক্ষে ৬০০ প্রতিনিধি। এর মধ্যে ছিলেন ১০ জন সরকার প্রধান, ৬০-এর অধিক মন্ত্রী ও সরকারি প্রতিনিধি, এইচআইভি আক্রান্ত ব্যক্তিসহ আন্তর্জাতিক সংস্থা, নাগরিক অধিকার ও বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধি ও বিজ্ঞানী এবং গবেষক।
সভায় দ্রুত গতিতে এইডস নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে বিশ্বকে ২০৩০ সালের মধ্যে এইডস মহামারি মুক্ত করার বিষয়ে সর্বসম্মত রাজনৈতিক ঘোষণা অনুমোদন করা হয়।
এই যৌথ রাজনৈতিক ঘোষণার তিনটি রূপকল্প হলো- ২০২০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী নতুন এইচআইভি সংক্রমণ ৫ লাখের নিচে নামিয়ে আনা, এইডসজনিত মৃত্যু ৫ লাখের নিচে নামিয়ে আনা এবং এইচআইভি সম্পর্কিত কুসংস্কার এবং বৈষম্য দূর করা।
ঘোষণায় রূপকল্প বাস্তবায়নের জন্য সর্বসম্মতভাবে নানামুখী কর্মসূচি এবং লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। সভার সাধারণ অধিবেশন ছাড়াও পাঁচটি অফিসিয়াল প্যানেল এবং ৩০টি পার্শ্বসভা অনুষ্ঠিত হয়।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের প্রতিনিধিত্ব করেন স্বাস্থ্য সচিব সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। তিনি তিন সদস্যবিশিষ্ট বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন।
স্বাস্থ্য সচিব সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে মূল অধিবেশনে বক্তব্য দেন ৯ জুন। তিনি এইচআইভি/এইডস নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের অঙ্গীকার এবং সাফল্য তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশে এইচআইভি সংক্রমণের হার শতকরা ০ দশমিক ১ ভাগেরও নিচে। তবে শহরাঞ্চলের কোনো কোনো জায়গায় সুঁচের মাধ্যমে নেশাকারী কিছু ব্যক্তির মধ্যে এইচআইভি সংক্রমণ আছে। পার্শ্ববর্তী দেশসমূহ থেকে এবং প্রবাসী জনগোষ্ঠীর মাধ্যমে এইচআইভি সংক্রমণের ঝুঁকিও আছে। তবে দুই দশকের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ তথ্য-উপাত্তভিত্তিক পরিকল্পনা এবং কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রতিরোধ, সেবা, চিকিৎসা এবং সহায়তামূলক সকল কার্যক্রমের মাধ্যমে রোগটির প্রাদুর্ভাব বাড়তে দেয়নি।
তিনি এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্ব, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সক্ষমতা এবং দাতা সংস্থাসহ এনজিওদের সঙ্গে যৌথ অংশীদারিত্বমূলক কর্মসূচি বাস্তবায়নের কথা উল্লেখ করেন। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, বাংলাদেশ অবশ্যই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এইডস বিষয়ক এই বিশ্ব রাজনৈতিক ঘোষণার সম্মিলিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে সক্ষম হবে।