মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ ডেস্কঃ
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনুর মরদেহ কবর থেকে উত্তোলনের ৭৪দিন পর রোববার দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দিচ্ছে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগ।
এরই মধ্যে ৩ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ডের সভায় ওই প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে তা একটি খামে সিলগালা করে নেওয়া হয়েছে।
রোববার দুপুরের আগেই বিশেষ বার্তা বাহকের মাধ্যমে তা কুমিল্লা সিআইডি কার্যালয়ে হস্তান্তরের কথা রয়েছে। শনিবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফরেনসিক বিভাগ ও ময়নাতদন্তকারী মেডিক্যাল বোর্ডের প্রধান ডা. কামদা প্রসাদ সাহা।
তবে তনুর বহুল আলোচিত দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের ফলাফলে কি রয়েছে এ নিয়ে ডা. কামদা প্রসাদ সাহা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
গত ২০ মার্চ রাতে কুমিল্লা সেনানিবাসের একটি জঙ্গল থেকে তনুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পর দিন কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজে তার প্রথম ময়নাতদন্ত করেন ডা. শারমিন সুলতানা। গত ৩০ মার্চ দ্বিতীয় দফায় ময়নাতদন্তের জন্য তনুর লাশ জেলার মুরাদনগরের মির্জাপুর গ্রামের কবর থেকে উত্তোলন ও ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়। গত ৪ এপ্রিল ২ সপ্তাহের মধ্যেই দেওয়া হয় প্রথম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন। ওই প্রতিবেদনে তনুকে হত্যা ও ধর্ষণের আলামত না থাকায় দেশব্যাপী তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে ফরেনসিক বিভাগ। গত ১৪ মে কুমিল্লার আদালতে এসে পৌঁছায় নিহত তনুর সাতটি বিষয়ের ডিএনএ প্রতিবেদন। গত ১৬ মে তনুর কাপড়ে ৩ পুরুষের শুক্রানু পাওয়া যাওয়ার খবর সিআইডি থেকে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশের পর আবারো আলোচনায় উঠে আসে প্রথম ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন। প্রথম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন এবং ডিএনএ প্রতিবেদনের এমন গরমিল তথ্যে ঝুলে যায় দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন।
দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের সহায়ক হিসেবে ডিএনএ প্রতিবেদন পেতে ফরেনসিক বিভাগের দফায় দফায় চিঠি চালাচালির পর বিষয়টি গড়ায় আদালত পর্যন্ত। গত ৫ জুন কুমিল্লার অতিরিক্ত সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জয়নাব বেগম তনুর দাঁত, চুল, কাপড়সহ সাতটি বিষয়ের পুরো ডিএনএ প্রতিবেদনই ফরেনসিক বিভাগে হস্তান্তরের নির্দেশ দিলে গত মঙ্গলবার পুরো ডিএনএ প্রতিবেদন সিআইডি থেকে ফরেনসিক বিভাগে হস্তান্তর করা হয়। এতে গত বৃহস্পতিবার ৩ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ডের সভায় দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে নেয় ফরেনসিক বিভাগ।
এদিকে হত্যাকাণ্ডের ৮৩ দিন অতিবাহিত হলেও এখনো সিআইডির তদন্তে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই। মামলার অগ্রগতির বিষয়ে একাধিকবার যোগাযোগ করেও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সিআইডির পরিদর্শক গাজী মোহাম্মদ ইব্রাহিমের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রসঙ্গে ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. কামদা প্রসাদ সাহা বলেন, ‘৩ সদস্যের ময়নাতদন্তকারী বোর্ডের ঐক্যমতের ভিত্তিতে আমরা রিপোর্ট প্রস্তুত করেছি, রোববার দুপুরের আগেই তা সিআইডির নিকট হস্তান্তর করা হবে।’