muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

করিমগঞ্জ

মাদক ব্যবসা ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার অঙ্গীকার রফিকের

মাদক ব্যবসা ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার অঙ্গীকার রফিকের

মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান তিনি। দেখতে শুনতেও তিনি সুদর্শন। পারিবারিক অসচ্ছলতাও ছিল না। তারপরও অধিক মুনাফা’র লোভে কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ পৌরসভার নয়াপাড়া এলাকার আব্দুস সাত্তারের ছেলে রফিকুল ইসলাম নেশার জগতে নেমে পড়েন। এলাকায় টেম্পু রফিক নামে পরিচিত। প্রায় ৮ বছর ধরে মাদকের প্রধান ব্যবসায়ী হিসেবে মাদকের ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। তাঁর বিরুদ্ধে করিমগঞ্জ থানায় ৭ টি মাদক সংক্রান্ত মামলা রয়েছে। এ মামলাগুলোতে তিনি জামিনে রয়েছেন।

এ পরিস্থিতিতে তিনি সমাজের কাছে অবহেলার পাত্র, সম্পর্কে বিচ্ছেদ ঘটিয়েছে স্বজনরাও। হয়েছে একাধিক মামলার আসামী। পুলিশের ভয়ে ফেরারি জীবন। এমন নানা সমস্যার মাঝে জীবন অতিবাহিত করে অতিষ্ঠ তিনি। বুঝতে পেড়েছেন সমাজে বাঁচতে হলে প্রয়োজন সম্মান। তিনি মাদক জীবনের কর্মকাণ্ডে এখন অনুতপ্ত। চাইছেষ স্বাভাবিক জীবনের নিশ্চয়তা। খুঁজছেন আলোর পথ। মাদক ব্যবসা ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চান তিনি।

আজ বুধবার সকালে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। একই সঙ্গে আর কোনো দিন মাদক ব্যবসা করবেন না এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবেন—এমন অঙ্গীকার করেছেন।

বিকেল সাড়ে ৪টায় করিমগঞ্জ থানার অফিসার ইন-চার্জ শামছুল আলম সিদ্দিকী অফিস কক্ষে মাদক ব্যবসায়ী রফিক আত্মসমর্পণ করার পর সহকারী পুলিশ সুপার ( করিমগঞ্জ সার্কেল) মোঃ শাহীন মন্ডল তাঁকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। এ সময় মাদক ব্যবসায়ী রফিককে ‘আর কখনো মাদক ব্যবসা করব না’ বলে অঙ্গীকার করান। পরে ওই মাদক ব্যবসায়ী তাঁর অতীতের কর্মকাণ্ডের জন্য অনুতপ্ত হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার অঙ্গীকার করেন।

এ সময় উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান হান্নান মোল্লা, করিমগঞ্জ থানার অফিসার ইন-চার্জ শামছুল আলম সিদ্দিকী, অফিসার ইন-চার্জ (তদন্ত) খন্দকার হাফিজুল ইসলাম, এ এস আই মোঃ এমরান ভূইয়া, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও মানবিক সংগঠন 'জাগ্রত বিবেক' এর সাবেক সভাপতি মাহমুদুল হাসান রনিসহ রফিকের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

আত্মসমর্পণকারী মাদক ব্যবসায়ী রফিক বলেন, বলেন, লোভে পড়ে ও সঙ্গদোষে তিনি মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। মাদকের ব্যবসার কারণে মানুষ তাকে কখনো ভালোভাবে দেখত না। প্রশাসনের কাছেও যেতে পারতেন না। আতঙ্কে দিন কাটাতে হতো। এরপর তিনি মানবিক সংগঠন 'জাগ্রত বিবেক' এর সাবেক সভাপতি মাহমুদুল হাসান রনি' পরামর্শে আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার পরিকল্পনা করেন। পরে আত্মসমর্পণের ব্যাপারে করিমগঞ্জ থানার অফিসার ইন-চার্জ শামছুল আলম সিদ্দিকী'র সঙ্গে যোগাযোগ করেন।

করিমগঞ্জ থানার অফিসার ইন-চার্জ শামছুল আলম সিদ্দিকী বলেন, রফিকের মতো মাদক ব্যবসা ছেড়ে দিবে, এমন কেউ যদি আসে ও সহযোগীতা চায়, তাহলে আমরা অবশ্যই তাদের সহযোগীতা করবো এবং ভালো হওয়ার সুযোগ দিবো। পাশাপাশি তারা আবারও মাদক বিক্রির সাথে জড়িয়ে পড়ছে কি না; জানতে নজরদারীতে রাখবো।

সহকারী পুলিশ সুপার (করিমগঞ্জ সার্কেল) মোঃ শাহীন মন্ডল বলেন, অত্র এলাকায় যেসব মাদক কারবারি রয়েছে তারা যদি স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করতে চায় আমরা তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবো। কেউ নিজের ভুল বুঝতে পেরে অন্ধকার পথ থেকে আলোর পথে আসতে চাইলে তাকে আমরা স্বাগত জানাব। যদি মাদক কারবারিদের আমরা উদ্বুদ্ধ করে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করাতে পারি তাহলে পুলিশের সঙ্গে তাদের সামাজিক দূরত্ব হ্রাস পাবে।

Tags: