muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

জাতীয়

বরেণ্য কৃষিবিজ্ঞানী কাজী এম বদরুদ্দোজা আর নেই

বরেণ্য কৃষিবিজ্ঞানী কাজী এম বদরুদ্দোজা আর নেই

বরেণ্য কৃষিবিজ্ঞানী, কাজী পেয়ারার জনক ও স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত ড. কাজী এম বদরুদ্দোজা আর নেই। কিংবদন্তি এই কৃষিবিজ্ঞানী আজ বুধবার বিকেল ৪টার দিকে বার্ধক্যজনিত কারণে ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর।

কাজী এম বদরুদ্দোজার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। এক শোকবার্তায় মন্ত্রী বলেন, ‘কাজী এম বদরুদ্দোজা এ দেশের কৃষি গবেষণার পথিকৃৎ। দেশের কৃষি গবেষণায়, গবেষণার সম্প্রসারণে ও কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানসমূহের শক্তিশালী কাঠামো তৈরিতে তার অনন্য অবদান রয়েছে। কৃষিখাতে তার অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।’ মন্ত্রী মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।

কাজী বদরুদ্দোজা ছিলেন একজন বিজ্ঞানী, বিজ্ঞান গবেষণার ব্যবস্থাপক এবং প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার কারিগর। আর গবেষণাকে মাঠপর্যায়ে নিয়ে দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখার ক্ষেত্রেও তিনি ছিলেন ভালো সংগঠক।

১৯৫২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএসসি-অ্যাগ্রি ডিগ্রি শেষ করার আগে কাজী ১৯৪৮ সালে পাকিস্তানে বিভাগীয় পাবলিক সার্ভিস কমিশনের অনুমোদনে অ্যাগ্রিকালচার রিসার্চ ল্যাবরেটরিতে একজন রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। সেখানে সঠিকভাবে পেশাগত দায়িত্ব পালন ও নেতৃত্বের গুণাবলির জন্য তিনি ‘ফুলব্রাইট’ স্কলারশিপ পেয়ে উচ্চতর শিক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যান।

১৯৫৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ক্রপ বোটানিতে তিনি পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। দেশে ফিরে কৃষি গবেষণায় আত্মনিয়োগ করেন। এরপর থেকে সারা জীবন তিনি নিজের গবেষণা এবং এ দেশের কৃষির উন্নতির জন্যই ব্যয় করে গেছেন।

স্বাধীনতার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের কৃষি খাতের যতগুলো প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো তৈরি হয়েছে, তার প্রায় সব কাজী বদরুদ্দোজার হাত ধরে তৈরি। শুধু ধান বা ভাত খেলে হবে না, সবজি, ফল ও আলুর মতো পুষ্টিকর খাবারও লাগবে। সঙ্গে থাকতে হবে মাছ, দুধ ও মাংস। এসব খাদ্য গৃহস্থপর্যায়ে স্বল্প পরিসরে উৎপাদিত হতো। কিন্তু বড় পরিসরে বাণিজ্যিকভাবে চাষ ও উৎপাদিত হতো না। মাছ, গরু, মুরগি, ফল ও সবজির উন্নত জাত চাই। কিন্তু এগুলো কোথা থেকে আসবে? এসব চিন্তা করে কাজী বদরুদ্দোজার নেতৃত্বে একের পর এক দেশে প্রতিষ্ঠিত হলো বাংলাদেশে কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, প্রাণিসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। এসব সংস্থার জন্য বিশাল পরিসরের কার্যালয়, ল্যাবরেটরি, স্থানীয় পর্যায়ে উপকেন্দ্রের জন্য জমি অধিগ্রহণ থেকে শুরু করে আধুনিক সরঞ্জামাদি ও গবেষক তৈরির কাজেও তিনি নেতৃত্ব দেন। দেশের দুগ্ধ খামারিদের সংগঠন মিল্ক ভিটার প্রধানের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

ড. কাজী এম বদরুদ্দোজার বগুড়া জেলায় ১৯২৭ সালের ১ জানুয়ারি জন্ম গ্রহণ করেন। তার পৈতৃক নিবাস গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায়। কৃষি ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি ২০১২ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেন।

Tags: