ইনজুরির কারণে শ্রীলংকা দলে ছিলেন না ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, দুশমন্থ চামিরা ও লাহিরু কুমারার মতো বোলাররা। অনেকটা দ্বিতীয় সারির বোলারদের বিপক্ষে তাই টস জিতে ব্যাটিং বেছে নিয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। তবে এই বোলিং লাইনআপের বিরুদ্ধেই চূড়ান্ত ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। এক নাজমুল হোসেন শান্ত ছাড়া সবাই ছিলেন যাওয়া আসার মিছিলে। ফলে ১৬৪ রানে অলআউট হওয়ার পর শ্রীলংকার বিরুদ্ধে হার দেখতে হলো ৫ উইকেটে।
ইনজুরির কারণে শ্রীলংকার বিপক্ষে ছিলেন না নিয়মিত ওপেনার লিটন দাস। ওপেনিংয়ে নাঈম শেখের সঙ্গে নামেন অভিষিক্ত তানজিদ হাসান তামিম। তবে নিজেকে প্রমাণে ব্যর্থ তিনি। দ্বিতীয় ওভারেই তাকে হারায় বাংলাদেশ। মহেশ থিকশানার বলে কোনো রান করার আগেই এলবিডাব্লিউয়ের ফাঁদে পড়েন তিনি। উইকেটে সেট হয়েও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি আরেক ওপেনার নাঈম শেখ (১৬)। অষ্টম ওভারের চতুর্থ বলে স্পিনার ধনঞ্জয়া ডি সিলভার বলে ক্যাচ তুলে দেন তিনি।
পাওয়ার প্লেতে ওই ২ উইকেট হারিয়ে ৩৪ করে বাংলাদেশ। পাওয়ার প্লের পরের ওভারেই আবারও উইকেট পতন। পেসার মাথিশা পাথিরানার বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন অধিনায়ক সাকিব। এরপর দলের হাল ধরেন তিনে নামা শান্ত ও তাওহীদ হৃদয়। ৫৯ রানের জুটি গড়ার পর দাসুন শানাকার বলে এলবিডাব্লিউ হয়ে ফেরেন ২০ রান করা হৃদয়। ৯৫ রানে হৃদয়ের বিদায়ের পর ১২৭ রানের মাথায় পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে ফেরেন মুশফিক। আর ১৪১ রানে শান্তর সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝির পর রান আউটে কাটা পড়ে পতন হয় মিরাজের।
১৬২ রানের মাথায় সপ্তম ব্যাটার হিসেবে শেখ মেহেদী হাসানের পতনের পর যেন উইকেট বিলিয়ে আসার হিড়িক পড়ে বাংলাদেশ শিবিরে। ওই রানেই স্পিনার মহেশ থিকসানার বলে বোল্ড হন ৮৯ রান করা শান্ত। কোনো ছক্কা না মারলেও ৭ চারে ১২২ বলে এই রান করেন তিনি। দলের সঙ্গে আর ২ রান যোগ হতেই শেষ দুই ব্যাটার হিসেবে ফেরেন তাসকিন আহমেদ ও মোস্তাফিজুর রহমান।
শ্রীলংকার হয়ে ৪ উইকেট নেন জুনিয়র মালিঙ্গা খ্যাত মাথিশা পাথিরানা। দুর্দান্ত বল করেন স্পিনার মহেশ থিকশানাও। ৮ ওভারে ১ মেডেনসহ রান দেন মাত্র ১৯, উইকেট ২টি।
বাংলাদেশের দেওয়া ১৬৫ রানের ছোট লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৪৩ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে বসে শ্রীলংকা। তবে চতুর্থ উইকেটে সাদিরা সামারাবিক্রামা ও চারিথ আসালাঙ্কার দারুণ জুটি হতাশ করে বাংলাদেশকে। তৃতীয় উইকেটে এই দুজনের ব্যাট থেকে ৭৮ রান জয়ের কাছাকাছি চলে যায় লংকানরা।
এরপর ১২১ রানে সামারাবিক্রামা (৫৪) ও ১২৮ রানে ধনঞ্জায়া ডি সিলভা ফিরলেও তা জয়ের পথে বাধা হতে পারেনি। ৯২ বলে ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৬২ রান করে অপরাজিত ছিলেন আসালাঙ্কা। অধিনায়ক শানাকা ১৪ রানে অপরাজিত থেকে দলের জয় নিশ্চিত করেই মাঠ ছাড়েন।
বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে উজ্জ্বল অধিনায়ক সাকিব। ১০ ওভারের কোটা পূরণ করে ২ মেডেনসহ ২৯ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট। একটি করে উইকেট ঝুলিতে পুরেন তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম ও মেহেদি হাসান।
এই জয়ে গ্রুপ ‘বি’ থেকে পূর্ণ ২ পয়েন্ট তুলে নিল শ্রীলংকা। সুপার ফোরের লড়াইয়ে গ্রুপের অন্য দল আফগানিস্তানের বিপক্ষে পরবর্তী ম্যাচে জিততেই হবে বাংলাদেশকে।