muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

খেলার খবর

রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে আফগানদের হারিয়ে সুপার ফোরে শ্রীলংকা

রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে আফগানদের হারিয়ে সুপার ফোরে শ্রীলংকা

মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে উত্তেজনায় ঠাসা এক ম্যাচ। এশিয়া কাপে আফগানিস্তান ও শ্রীলংকার মধ্যকার গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচকে এক বাক্যে এভাবেই বলা যায়। রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ের পর যেখানে শেষ হাসি হেসেছে শ্রীলংকাই। আফগানদের হৃদয় ভেঙে পৌঁছে গিয়েছে টুর্নামেন্টের সুপার ফোরে।

গ্রুপ ‘বি’ থেকে আগেই সুপার ফোর নিশ্চিত করেছিল বাংলাদেশ। অন্যদিকে ভালো রানরেট নিয়ে সুবিধাজনক স্থানে ছিল শ্রীলংকা। তাই এই ম্যাচে শুধু জয়ই না, ব্যবধানও বড় হওয়া দরকার ছিল আফগানদের। ৩৭ ওভার ১ বলের মধ্যে পৌঁছাতে হতো শ্রীলংকার দেওয়া ২৯২ রানের লক্ষে। তবে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩ রান পিছিয়ে থেকে অলআউট হয় আফগানরা।

তবে এই ম্যাচে হিসাবের গড়বড়েরও খেসারত দিতে হয়েছে আফগানিস্তানকে। ৩৭.১ ওভার শেষেও জয়ের সুযোগ ছিল আফগানিস্তানের সামনে। যদি ৩৭.৪ বলের মধ্যে দলটি ২৯৫ রান করত তাহলেও আসত জয়। সেই হিসেবে, ২৮৯ বা ২৯০ থেকে একটি ছক্কা বা ২৯১ থেকে একটি চার মারলেই চলত। তবে সেটি বুঝতে না পেরে আগেই হাল ছেড়ে দেয় আফগানিস্তান।

ম্যাচের শেষদিকের পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করলে- শেষ সাত বলে আফগানিস্তানের দরকার ছিল ১৫ রান। ৩৭তম ওভারে বলে আসেন লংকান তরুণ স্পিনার দুনিথ ভালালাগে। ওভারের তিনটি বল দিলেও বাকি ৩ বলে তিনটি চারে ১২ রান তুলে নেন রশিদ খান। তাই মহাগুরুত্বপূর্ণ ৩৮তম ওভারের প্রথম বলে দরকার হয় ৩ রানের, ২ রান নিলেও ম্যাচ গড়াবে সুপার ওভারে। তবে ধনাঞ্জায় ডি সিলভার করা সেই বলে লং অনে ক্যাচ উঠিয়ে দেন মুজিব-উর-রহমান। তখনই সুপার ফোরের উল্লাসে মাতে শ্রীলংকা। নন স্ট্রাইক প্রান্তে থাকা রশিদসহ আফগানিস্তান শিবিরে নেমে আসে বিষাদের ছায়া। এরপর গুরুত্বহীন হয়ে পড়া ম্যাচে শেষ ব্যাটার হিসেবে নামেন ফজলহক ফারুকী। তবে তিনিও দলকে নিতে পারেননি জয়ের বন্দরে। ওই ওভারেরই চতুর্থ বলে এলবিডাব্লিউ হয়ে ফিরলে শেষ হয় ইনিংস।

৩৭ ওভার ১ বলের মধ্যে ২৯২ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ৫০ রানের মধ্যেই ৩ উইকেট হারিয়ে বসে আফগানিস্তান। চতুর্থ উইকেটে ৭১ রানের জুটি গড়েন রহমত শাহ এবং অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শাহিদি। ১২১ রানের মাথায় ৪০ বলে ৪৫ রান করে ফেরেন রহমত। এরপর নামেন মোহাম্মদ নবী। মারকুটে ব্যাটিংয়ে চাপে পড়া আফনিস্তানকে টেনে তোলেন এই ব্যাটার। হাশমতকে নিয়ে গড়েন ৮০ রানের জুটি, যেখানে নবীর একারই সংগ্রহ ৬৫ রান। মাত্র ৩২ বলে ৬ চার ও ৫ ছক্কায় এই রান করেন তিনি।

এরপর লংকান তরুণ স্পিনার দুনিথ ভালালাগে এসে খেলা ঘুরিয়ে দেন। এক ওভারের মধ্যে ফিরিয়ে দেন ১৩ বলে ২২ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলা করিম জানাত ও একপ্রান্ত আগলে পড়ে থাকা অধিনায়ক হাশমতকে। তবে শেষদিকে রশিদ খান (১৬ বলে ২৭*) ও নাজিবুল্লাহ জাদরান (১৫ বলে ২৩)। চেষ্টা করলেও তীরে গিয়ে তরী ডোবে আফগানিস্তানের।

এর আগে, লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৯১ রান করে শ্রীলংকা। এদিন ৬৩ রানের ওপেনিং জুটি গড়েন দুই লংকান ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা ও দিমুথ করুনারত্মে। তবে গুলবাদিন নাইবের তোপে পড়ে ৮৬ রানের মধ্যেই ৩ উইকেট পড়ে যায়। চতুর্থ উইকেটে ১০২ রানের জুটি গড়েন চারিথ আসালঙ্কা এবং মেন্ডিস। ১৮৮ রানের মাথায় আসালঙ্কাকে বিদায় করে ব্রেকথ্রু এনে দেন রশিদ খান। এরপরই শুরু হয় ছন্দপতন। রশিদ ও মুজিবের তোপে পড়ে ২২৭ রান তুলতেই হারিয়ে বসে প্রথম ৭ উইকেট। এরই মধ্যে দুর্ভাগ্যজনক এক রান আউটে কাটা পড়েন সেঞ্চুরির কাছে যাওয়া কুশল মেন্ডিস (৯২)।

এরপরই দারুণভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন মূলত বোলার দুনিথ ভালালাগে এবং মহেশ থিকসানা। নির্ধারিত ৫০ ওভারের শেষ বলে থিকসানা (২৪ বলে ২৮) আউট হলেও ততক্ষণে এই জুটি গড়ে ফেলেন ৬৪ রানের জুটি। ৩৯ বলে ৩৩ রানে অপরাজিত থাকেন ভালালাগে। শেষ পর্যন্ত ৮ উইকটে হারিয়ে ২৯১ রান তোলে লংকানরা।

আফগানিস্তানের হয়ে বল হাতে সবচেয়ে সফল গুলবাদিন নাইব। ১০ ওভারে ৬০ রানের বিনিময়ে ৪ উইকেট নিয়েছেন তিনি। ১০ ওভারে ৬৩ রান দিয়ে ২ উইকেট রশিদের। সমানসংখ্যক ওভারে মুজিব নিয়েছেন ১ উইকেট। তবে কোনো উইকেট না পেলেও সমান ওভারে মাত্র ৩৫ রান দিয়েছেন মোহাম্মদ নবী।

Tags: