muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

জাতীয়

পুলিশি নিরাপত্তায় বাসায় ফিরলেন ডিএজি এমরান

পুলিশি নিরাপত্তায় বাসায় ফিরলেন ডিএজি এমরান

নিজের নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কায় আশ্রয় চাইতে আজ শুক্রবার (৮ আগস্ট) বিকেলে সপরিবারে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসে হাজির হওয়া সদ্য বরখাস্ত ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (ডিএজি) এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে পুলিশি নিরাপত্তায় রাজধানীর লালমাটিয়ায় তার নিজ বাসায় ফিরে গেছেন। তাকে গ্রেপ্তার করা হবে না বলে সরকারের তরফ থেকে দূতাবাসকে আশ্বস্ত করা হয়েছে। দূতাবাসের কর্মকর্তারা এমরানকে এ তথ্য জানালে তিনি বাসায় ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

মার্কিন দূতাবাসের সামনে থাকা সাংবাদিকরা জানান, সন্ধ্যা ৬টা ৩৮ মিনিটে দূতাবাসের বাইরে থেকে একটি গাড়ি আসে। সেই গাড়িতে পরিবারসহ দূতাবাস ছেড়ে যান এমরান।

সোমবার রাত সোয়া ৮টায় এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া বলেন, শুক্রবার বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত দূতাবাসে অপেক্ষা করেছি। আমাকে গ্রেপ্তারের আশঙ্কা নেই বলে সরকারের পক্ষ থেকে দূতাবাসকে জানানো হয়েছে। দূতাবাসের কর্মকর্তারা আমাকে আশ্বস্ত করেছেন। পরে পুলিশ এস্কট দিয়ে আমাকে বাসায় পৌঁছে দিয়েছে।

তিনি বলেন, আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বক্তব্যে তিনি আশঙ্কা করেছিলেন যে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে। তাই মার্কিন দূতাবাসে গিয়েছিলেন। তবে তাঁর কোনো ক্ষতি হবে না, সে বিষয়ে আশ্বস্ত হয়ে বাসায় ফিরেছেন।

এর আগে শুক্রবার রাত পৌনে ৮টার দিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিশনার মো. শহিদুল্লাহ বলেন, দুই ঘণ্টা আগে পরিবার নিয়ে বরখাস্ত ডিএজি এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া ঢাকার মার্কিন দূতাবাসে এসেছিলেন। কিছুক্ষণ আগে তিনি বেরিয়ে গেছেন।

এর আগে শুক্রবার বিকেলে একটি ক্ষুদেবার্তার মাধ্যমে তিনি গণমাধ্যমকে জানান, 'আমি মার্কিন দূতাবাসে আজকে পুরো পরিবারসহ আশ্রয়ের জন্য বসে আছি। বাইরে পুলিশ। আজকে আমাকে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে ........। আমার ফেসবুক মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপে গত ৪-৫ দিন যাবত অনবরত হুমকি-ধামকি দেওয়া হচ্ছে। এই সরকার ভালবাসার প্রতিদান দেয় জেল দিয়ে। আমার আমেরিকার কোনো ভিসা নেই। স্রেফ ৩টা ব্যাগে এক কাপড়ে আমার ৩ মেয়েসহ কোনোক্রমে বাসা থেকে বের হয়ে এখানে বসে আছি। দোয়া করবেন আমাদের জন্য।'

তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের মূখপাত্র ব্রায়ান শিলার শুক্রবার সন্ধ্যায় বলেন, এ মুহূর্তে বিষয়টিতে আমাদের কাছে দেওয়ার মতো কোনো তথ্য নেই।

উল্লেখ্য, গত ২৮ আগস্ট নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে বর্তমান বিচারিক কার্যক্রম স্থগিত ও সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য প্রধানমন্ত্রী বরাবর ১০০ জনেরও বেশি নোবেল বিজয়ীসহ ১৬০ জনেরও বেশি বিশ্বনেতা একটি চিঠিতে স্বাক্ষর করেন।

এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই চিঠির প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন সংগঠন, প্রতিষ্ঠান ও পেশাজীবীদের পক্ষ থেকে। এরই ধারাবাহিকতায় অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় থেকে প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দেওয়ার কথা রয়েছে- এমন দাবি করে গত ৪ সেপ্টেম্বর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহমেদ।

সে সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, যে বিবৃতি দিয়েছেন ১৬০ জন নোবেল বিজয়ী এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন, আমি ওনাদের বিবৃতির সঙ্গে একমত। আমি মনে করি, অধ্যাপক ড. ইউনূস একজন সম্মানিত ব্যক্তি। তার সম্মানহানি করা হচ্ছে এবং এটা বিচারিক হয়রানি। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এ বিবৃতিতে সই করব না।

পরদিন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, চিঠিতে সই না করার বক্তব্য দিয়ে এমরান শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন। তারই ধারাবাহিকতা গত বৃহস্পতিবার এমরান আহম্মদ ভূঁইয়াকে তার পদ থেকে অব্যহতি দিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ।

রাষ্ট্রপতির আদেশে এ অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালে এমরান আহমেদকে বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

Tags: