muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

দেশের খবর

সিন্ডিকেটের কব্জায় ডালিয়া পাউবোর বালু, প্রশাসন নিরব

সিন্ডিকেটের কব্জায় ডালিয়া পাউবোর বালু, প্রশাসন নিরব

জাহিদুল ইসলাম, ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি :নীলফামারীর ডিমলায় ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিলটাপ ও পুকুর খননের স্তূপ করে রাখা বালু লুট পাট চলছে। ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন তিস্তা ব্যারেজ সংলগ্ন সিলটাপ ও পুকুর খননের স্তূপ করে রাখা বালু রাতে-দিনে লুটপাট করে নিয়ে যাচ্ছে একটি বালু সিন্ডিকেট চক্র। বালুর ইজারার দরপত্র, গড়িমসির কারণে এতে সরকার কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে।

ডালিয়া পাউবোর দায়িত্বে থাকা ওয়াটার বোর্ডের এস,ডি রাশেদীন ইসলাম জানান, এই বালু সরকারি সম্পদ, এই বালু দিয়ে ঠিকাদারের কাজ বা লুটপাট করে নিয়ে অবৈধভাবে বিক্রি করার কোনো এখতিয়ার নেই। তিনি আরো বলেন, এসব বালু ইজারার জন্য অনেকে দরপত্র আহ্বান করেন, আমরা সেভাবে কাগজপত্র পাঠিয়ে দেই। কিন্তু কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট তৈরি করে তাদের বিরুদ্ধে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। তারা নিজেরাও ইজারা নিচ্ছেনা, অন্যকে নিতে দিচ্ছেন না। তবে এ ব্যাপারে অবৈধভাবে বালু লুটের সিন্ডিকেট চক্রের কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এ ব্যাপারে ইউএনও স্যার দায়িত্বে আছেন ওনার সাথে কথা বলেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ডালিয়া পাউবো ২০২০-২১ অর্থবছরে তিস্তার সিলটাপসহ পাউবোর পার্শ্ববর্তী এলাকায় ৫টি নদী-খাল-পুকুর খননের কাজ বরাদ্দ দেয়। ড্রেজার মেশিনে খনন করা বালু তিস্তা নদী ও পুকুরের পাড় ঘেঁষে ওপরের জমিতে স্তূপ করে রাখা হয়। ওই সব স্থানে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে প্রচার করা হয়, ‘পাওবোর নদী খননের স্তূপ করা বালু সরকারি সম্পদ। এই বালু কেউ বিক্রি করতে পারবে না, যদি কেউ বালু বিক্রি কিংবা নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সরেজমিনে দেখা গেছে, ডালিয়া সিলটাপ ও পুকুরের পাশেই স্তূপ করা সরকারি বালুতে দিন- দুপুরে চলছে হরিলুট কারবার।

দেখাযায়, পাশেই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে, বাড়িতে ও ব্যক্তিগত পুকুর ভরাটে ব্যবহার করা হচ্ছে এই বালু। এসব কাজের জন্য বালু ক্রয় না করে পাউবোর নদীও পুকুর খনন প্রকল্পের সরকারি বালু দিয়েই চলছে কাজ।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও পাউবো কর্মকর্তাদের যোগসাজশে খালিশা চাপানী ইউপি সদস্য শাহানুর রহমান এর নেতৃত্বে, টলি মালিক মোসাদ্দেক আলী, রফিক ইসলাম, জামিনুর রহমান,অহিদুল ইসলামসহ আরো অনেকে ২০ থেকে ৩০ টি টলি দিয়ে এই বালু ভোররাতে কখনো দিনদুপুরে লুটপাট করে নিয়ে যায়। প্রতি ট্রলি বালু বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা দরে। এ ছাড়া এলাকাভিত্তিক গড়ে উঠেছে নানা ধরনের সিন্ডিকেট। এলাকাবাসী আরও জানান, পাউবো ডালিয়া অফিসের এলাকাজুড়ে খননের কোটি টাকার বালুর স্তূপ ছিল। শুধু প্রশাসনের তদারকির অভাবে বেশির ভাগ বালু লুট হয়েছে। এতে সরকার কোটি টাকার রাজস্ব হারালেও অসাধু ব্যক্তিরা রাতারাতি হচ্ছে আঙুল ফুলে কলাগাছ।

নাম বলতে অনিচ্ছুক বালু বহনকারী ট্রাক্টর শ্রমিকরা বলেন, ‘আমরা পেটের দায়ে ট্রাক্টর চালাই। মাটি ও বালু বহন করে সামান্য আয় করি। টলি মালিক শাহানুর মেম্বারের কথাতেই বালু তুলে নিয়ে যাচ্ছি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকেরা সব জানে ও দেখে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ট্রাক্টর মালিক বলেন, ‘বালু লুটেরারা বালু বিক্রি করে আর আমরা ভাড়ার বিনিময়ে গাড়ি দেই। একজন বালু ব্যবসায়ী দিনে কমপক্ষে ৫০ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকার বালু বিক্রি করছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজনের সামনেই বালু লুট হচ্ছে অথচ প্রশাসনের চোখে আমরাই চোর, আর বালু লুটেরারা ভালো মানুষ।’

এ বিষয়ে ইউএনও'র দায়িত্বে থাকা উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা এসিল্যান্ড ফারজানা আক্তার বলেন, আমি এ ব্যাপারে ইউএনও স্যারের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।

Tags: