muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

জাতীয়

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে না আসার দায় নিল ডিএনসিসি

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে না আসার দায় নিল ডিএনসিসি

দেশে প্রতিদিন ডেঙ্গু আক্রান্ত ও মৃতের হার বাড়ছে। এ অবস্থায় ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে না পারাকে দায়ী করে এর দায় নিজেদের কাঁধে নিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম শফিকুর রহমান।

ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে ডিএনসিসির চেষ্টার কোনও ত্রুটি নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি।

বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউট আয়োজিত ‘ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধি; গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন।

শফিকুর রহমান বলেন, ‘ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আমরা মূলত ওয়ার্ড ভিত্তিক কাজ করি। ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই আমরা ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গিয়ে মাইকিং করে সচেতনতা বৃদ্ধি করেছি। ঢাকা উত্তরের মেয়র যখন যেখানেই যাচ্ছেন ডেঙ্গু সচেতনতায় লিফলেট বিতরণ করছেন। এমনকি আমাদের ওয়ার্ড কাউন্সিলর যারা রয়েছেন, তারাও পাড়া-মহল্লায় গিয়ে লিফলেট বিতরণ করছেন। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সিটি করপোরেশন একরকম যুদ্ধের মধ্যেই আছে। শিক্ষার্থীদের সচেতন করার জন্য আমাদের পক্ষ থেকে বিশেষ একটি বই প্রকাশ করা হয়েছে এবং সেগুলো স্কুলগুলোতে দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও আমরা সচেতনতায় র‍্যালি করছি, বিভিন্ন মিটিং করে পরামর্শ নিচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘তারপরও যেহেতু দেশে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে নেই, সেহেতু সব দোষ আমরা নিজেদের কাঁধেই নিচ্ছি। কিন্তু আমরা সাধ্যমত সব ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে আমাদের কাজে কোনও ভুল নেই তা বলছি না। কাজের মধ্যে অনেক সীমাবদ্ধতা থাকে। তবে আমরা কাজ করছি না, এমনটি বলা যাবে না।’

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক নূরুন নাহার হেনা। এসময় তিনি বলেন, ‘দেশের যে কোনও ক্রান্তিলগ্নে সাংবাদিকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। মানুষের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধিতে সাংবাদিকরা সচেষ্ট।’

ডেঙ্গু প্রতিরোধে সরকারের কার্যক্রমের পাশপাশি ব্যক্তি পর্যায়ে ডেঙ্গু সচেতনতা সৃষ্টিতে সাংবাদিকদের সক্রিয় ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান তিনি।

নূরুন নাহার বলেন, মশা বাড়তে থাকলে আমরা যতই কাজ করি, কোনও লাভ হবে না। আগে মশা মারা নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে দুই সিটির অনেক দায়িত্ব আছে। নগরবাসীকেও দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে। সাংবাদিকদের এই বিষয়টা সাধারণ মানুষসহ দায়িত্বরতদের জানাতে হবে।

তিনি বলেন, ঢাকা, চট্টগ্রামের ড্রেনেজ সিস্টেমের সংস্কারে প্রতিবছর নতুন করে বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু একসঙ্গে কেন ভালো করে কাজটা করা যাচ্ছে না? আমাদেরকে মনে রাখতে হবে, রাজনীতি করতে গিয়ে যেন জনগণের অধিকারকে আমরা সীমাবদ্ধ করে না ফেলি।

কর্মশালা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই কর্মশালার মাধ্যমে মতামতের ভিত্তিতে এমন কিছু তথ্য আসবে যা ডেঙ্গু প্রতিরোধে পর্যালোচনা করার সুযোগ সৃষ্টি হবে। ডেঙ্গুজনিত স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিরসনে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা দরকার।

কর্মশালায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগতত্ত্ব বিভাগের উপপরিচালক ডা. আবুল কালাম আজাদ এবং সহকারী পরিচালক ডা. নূর জাহান আরা খাতুন বর্তমান ডেঙ্গু পরিস্থিতির সার্বিক চিত্র তুলে ধরেন। এসময় তারা ডেঙ্গু প্রতিরোধের সমাধানে এডিস মশার বিস্তার রোধে ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার, এডিস মশার লার্ভা ধ্বংসের জন্য জমা পানি ফেলে দেওয়া, রোগীকে যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে নেওয়া, স্যালাইনের পর্যাপ্ত মজুদ রাখা, মশা প্রতিরোধী ওষুধ ছিটানো, ব্যক্তি পর্যায়ে জনসচেতনতা সৃষ্টির ওপর গুরুত্বরোপ করেন।

এ কর্মশালায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালাধীন দপ্তরসমূহ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, সিটি কর্পোরেশনের প্রতিনিধি ও হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতিসহ গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের পরিচালক (প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠান) ড. মারুফ নাওয়াজ কর্মশালায় সঞ্চালনা করেন। ইনস্টিটিউটের উপপরিচালক তানিয়া খান কর্মশালার পরিচালক এবং সহকারী লাইব্রেরিয়ান কাজী ওমর খৈয়াম কর্মশালায় সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেন।

জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ফায়জুল হক, পরিচালক এ. কে. এম আজিজুল হক (প্রশাসন ও উন্নয়ন) এবং পরিচালক নজরুল ইসলাম (প্রশিক্ষণ প্রকৌশল), তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দপ্তর এবং সরকারি ও বেসরকারি মিডিয়ার ৭০ জন প্রশিক্ষণার্থী কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন।

Tags: