মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠ ডেস্কঃ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদে আইনপ্রণেতাদের সভাপতি মনোনীত হওয়া নিয়ে রায় আদালতের ‘আওতা’ ছাড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া।
এনিয়ে মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আব্দুর রহমানের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে অধিবেশনে সভাপতিত্বকারী ফজলে রাব্বী বলেন, “একটি প্রতিষ্ঠানকে কেন্দ্র করে এই মামলাটি দায়ের হয়েছিল।
“কিন্তু আমার মনে হয়, এ ক্ষেত্রে কোর্ট কিছুটা তার আওতার বাইরে গিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে অনেক আইনজীবী এই রায়ের সঙ্গে দ্বিমতও পোষণ করেছেন।”
ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজের পরিচালনা পর্ষদ নিয়ে এক মামলায় সম্প্রতি হাই কোর্টের এক রায়ে বলা হয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটিতে স্থানীয় সংসদ সদস্যদের সভাপতি মনোনীত হওয়া ও বিশেষ কমিটি গঠনের বিধান সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
হাই কোর্টের দেওয়া ওই রায় সুপ্রিম কোর্টও বহাল রাখে। এর ফলে সংসদ সদস্যরা স্কুল ও কলেজের পরিচালনা পর্ষদে সভাপতি মনোনীত হতে পারবেন না।
এই সংসদে কয়েকবারই বিচার বিভাগ নিয়ে ক্ষোভ ঝেড়েছেন আইনপ্রণেতারা
বিচার অপসারণের আইন সংশোধন নিয়ে সংসদ-বিচার বিভাগ পাল্টাপাল্টি অবস্থানের প্রেক্ষাপটে সর্বশেষ ঘটনা নিয়ে মঙ্গলবার অধিবেশনে আব্দুর রহমান আলোচনা তুলে শিক্ষামন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করেন।
অনির্ধারিত আলোচনায় দাঁড়িয়ে ক্ষমতাসীন দলের এই সংসদ সদস্য বলেন, “প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র অনুযায়ী সংসদ সদস্যরা বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কলেজগুলোতে সভাপতি হিসেবে থাকতে পারতেন।
“একথা সত্যিই আমি নিজে কখনোই একটি প্রতিষ্ঠানের সভাপতি থাকবার ব্যাপারে আগ্রহী নই। আমার নিজের নামের একটি টেকনিক্যাল কলেজ ছাড়া আমি কোথাও সভাপতি নাই। কিন্তু সংসদ সদস্যদের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতির পদ থেকে যেভাবে যে পদ্ধতিতে না থাকবার জন্য বলা হয়েছে, এতে আমাদের অধিকার ক্ষুণ্ন হয়েছে।”
সুপ্রিম কোর্ট বলছে, স্কুল-কলেজের পরিচালনা পর্ষদে আইনপ্রণেতাদের মনোনীত হওয়া সংবিধান পরিপন্থি
“সর্বোচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত আমরা মাথা পেতে গ্রহণ করব, একথা যেমনি সত্য, তেমনি আমার একটি প্রশ্নও থাকবে- এই সিদ্ধান্ত কি কেবল মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকা উচিৎ, না কি এটি এই মন্ত্রণালয়ের বাইরে আদালতের জগৎ পর্যন্ত গড়ানো উচিত। এই ব্যাপারটি আমাকে একটি প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।”
তার সঙ্গে একমত পোষণ করে অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী বলেন, “মাননীয় সংসদ সদস্য যথার্থই বলেছেন। আমিও দেখেছি যে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ একটি রায় দিয়েছেন।
“এই বিষয়ে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর একটি বক্তব্য বা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র জারি হওয়া দরকার, যাতে যে ধরনের একটি জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে, তা নিরসন হয়। এই বিষয়ে তার দৃষ্টি রাখার জন্য আমি মাননীয় সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রীকেও অনুরোধ করব।
মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠ ডটকম/ ১৪ -০৬-২০১৬ ইং/মো: হাছিবুর রহমান