জাতিসংঘের ৭৮তম সাধারণ পরিষদের ভাষণে ইউক্রেনের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বিশ্বনেতাদের ঐক্যের আহ্বান জানানেল মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকালে বাংলাদেশ সময় (রাত) বক্তব্য দেন বাইডেন। সাধারণ পরিষদে উপস্থিত বিশ্বের ১৪৫টি দেশের নেতাদের উদ্দেশে ইউক্রেনে যুদ্ধ পরিস্থিতি তুলে ধরেন বাইডেন।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এ বছর প্রথম ভাষণ দেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। তারপরই মঞ্চে ওঠেন বাইডেন। চলতি সম্মেলনের আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক এই বছরের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে যোগ দিচ্ছেন না। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী আসনে থাকা পাঁচটি দেশের মধ্যে চারটিই অনুপস্থিত।
এবারের সম্মেলনে বাইডেন প্রথমত বৈদেশিক নীতির যে সমস্যাটি সমাধান করবেন বলে আশা করা হচ্ছে তা হলো ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ। সাধারণ পরিষদে বাইডেনের ভাষণ সম্পর্কে সাংবাদিকদের ব্রিফ করা মার্কিন কর্মকর্তারা জানান, জাতীয় নিরাপত্তাসহ জাতিসংঘের সনদ ও মানবাধিকার সমুন্নত রাখার প্রয়োজনীয়তার উদাহরণ হিসাবে বাইডেন ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি তার সমর্থনের ওপর জোর দেবেন। আরও বলেন, বাইডেন জাতিসংঘ এবং অন্যান্য অন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে শক্তিশালী করার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে কথা বলবেন। বিশ্বব্যাপী অবকাঠামো প্রকল্পের জন্য তহবিল সংগ্রহ ও জলবায়ু সংকট মোকাবিলাসহ আন্তর্জাতিকভাবে চাপসৃষ্টি করা বিভিন্ন বিষয়গুলোর ওপরও আলোকপাত করবেন। বিশ্বজুড়ে তার কৃতিত্বের প্রচার করবেন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও এদিন প্রথমবারের মতো সশরীরে ভাষণ দেন জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে। রুশ আগ্রাসনের পর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে এটি তার প্রথম বক্তৃতা। সম্মেলনের বক্তব্য পর্বের শেষে বাইডেন মধ্য এশিয়ার পাঁচটি দেশ, কাজাখস্তান, কিরগিজ প্রজাতন্ত্র, তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান ও উজবেকিস্তানের নেতাদের সঙ্গে দেখা করবেন। ওয়াশিংটনে ফিরে যাওয়ার আগে বুধবার ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা এবং ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গেও আলাদাভাবে দেখা করবেন। পরদিন বৃহস্পতিবার বাইডেন এবং জেলেনস্কি হোয়াইট হাউজে একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেবেন।
সম্প্রতি কিছু রিপাবলিকানদের সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছেন বাইডেন। জাতিসংঘে তার বক্তৃতা নির্বাচনি প্রচারে আরও একটু এগিয়ে যাওয়ার হাতিয়ার হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ, তিনি বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা সমাধানের বিষয় তুলে ধরার পাশাপাশি তার দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তিনি ও তার প্রশাসন যে পদক্ষেপগুলো নিয়েছেন তা তুলে ধরবেন। গভীর অর্থ সংকটে লড়াই করা দেশগুলোকেও সমর্থন করার পরিকল্পনাও করছেন। হোয়াইট হাউজের কর্মকর্তারা জানান, আগামী বছরগুলোতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রায় ২০০ বিলিয়ন ডলার ঋণ প্রবাহিত হতে পারে। আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের বৈদেশিক ও প্রতিরক্ষা নীতি অধ্যয়নের পরিচালক কোরি শেক বলেন, মার্কিন নীতি ব্যাখ্যা করার জন্য বাইডেনের জাতিসংঘে উপস্থিত হওয়া গুরুত্বপূর্ণ ছিল।