দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ বন্ধে কিয়েভের শান্তি পরিকল্পনাকে ‘অবাস্তব’ বলে আখ্যা দিয়েছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। স্থানীয় সময় শনিবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে দেয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগে সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে দেয়া ভাষণে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি যুদ্ধ বন্ধে ১০ দফা প্রস্তাব দেন। কিয়েভের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে সংবাদ সম্মেলেন লাভরভ বলেন, এটা কোনোভাবেই কার্যকর করা যাবে না। এটা বাস্তব সম্মত নয়। এ কারণে এটা বাস্তবায়ন করাও সম্ভব নয়।
এছাড়াও কিয়েভকে অত্যাধুনিক সব অস্ত্র সরবরাহের মাধ্যমে পশ্চিমারা সরাসরি মস্কোর সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়েছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি। শুধু তাই নয়, রাশিয়ার উপর নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা দিয়ে বিশ্বব্যাপী খাদ্য ও জ্বালানি সংকটের জন্য অধিবেশনে পশ্চিমাদের দায়ী করেন তিনি। এমনকি তাদের ‘মিথ্যার সাম্রাজ্য’ বলেও অভিহিত করেন ল্যাভরভ।
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাস্তব অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ২০২২ সালের মার্চ ও এপ্রিলে সংলাপ হচ্ছিল, সবকিছুই ইতিমধ্যে শুরু হয়েছিল। কিন্তু দুই দিন পর বুচার ঘটনা ঘটল (ইউক্রেনের বুচা শহরে ইউক্রেনীয় ও রুশ বাহিনীর মধ্যে লড়াই)। কারণ, লন্ডন কিংবা ওয়াশিংটনের কেউ কেউ চায় না এই যুদ্ধ শেষ হোক।
লাভরভ বলেন, যে কারণে এখন আমরা সংলাপের কথা শুনলে, এ বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নেওয়া অবস্থানের কথা তুলে ধরি। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, হ্যাঁ, আমরা সংলাপের জন্য প্রস্তুত। কিন্তু আমরা যুদ্ধবিরতির কোনো প্রস্তাব গ্রহণ করব না। কারণ, আমরা একবার বিবেচনা করেছিলাম, কিন্তু তোমরা (ইউক্রেন ও তাদের মিত্ররা) আমাদের ধোঁকা দিয়েছিলে।
মস্কোর সঙ্গে সংলাপে বসতে পশ্চিমারা কিয়েভকে বাধা দিচ্ছে অভিযোগ করে লাভরভ বলেন, আমরা শুধু প্রস্তুতই ছিলাম না, আমরা সংলাপের বিষয়ে সম্মত হই। ২০২২ সালের এপ্রিলে আমরা একটি সমঝোতায় পৌঁছাই। আমার যেটা মনে হয়, এরপর জেলেনস্কিকে বলা হলো—যেহেতু তারা এত দ্রুত রাজি হয়ে গেল, চলুন তাদের নিঃশেষ করে দিই।’
এ ছাড়া জাতিসংঘ কৃষ্ণসাগর দিয়ে আবারও শস্য রপ্তানি চালুর প্রস্তাব দিয়েছে। তবে জাতিসংঘের প্রস্তাবের বিষয়ে লাভরভের বক্তব্য, এটা মোটেও কার্যকর নয়। কারণ, পশ্চিমারা এর আগে মস্কোকে দেয়া কোনো প্রতিশ্রুতি রাখেনি।