muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

কিশোরগঞ্জের খবর

তরুণীকে ধর্ষণের পর হত্যা : ২৭ বছর ছদ্মবেশে থেকেও হলো না শেষ রক্ষা!

তরুণীকে ধর্ষণের পর হত্যা : ২৭ বছর ছদ্মবেশে থেকেও হলো না শেষ রক্ষা!

কিশোরগঞ্জে তরুণীকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার ২৭ বছর পর যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। নাম পরিচয় গোপন করে ঘটনার পর থেকেই পলাতক ছিলেন ওয়াহিদুল্লাহ নামের ওই ব্যক্তি।

গ্রেপ্তার ওয়াহিদুল্লাহ (৬৫) জেলার ভৈরব উপজেলার মৌটুপি গ্রামের মৃত রূপ বাদশাহর ছেলে।

সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কিশোরগঞ্জ আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগে রোববার রাতে পার্শ্ববর্তী সুনামগঞ্জ জেলার তাহেরপুর উপজেলার বিন্নারবন্দ ঘাট এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অবস) মোহাম্মদ আল আমিন হোসাইন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ জানায়, ১৯৯৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ভৈরব উপজেলার রসুলপুর গ্রামের বিল থেকে অজ্ঞাতনামা এক তরুণীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসে এই তরুণীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। পরে একই মাসে ভৈরব থানায় ধর্ষণের পর হত্যা মামলা রুজু হয়।

পুলিশ আরও জানায়, আসামি ওয়াহিদুল্লাহ রাজধানীর গুলশান এলাকায় বস্তিতে বসবাস করতেন। তিনি তেজগাঁও বেগুনবাড়ি এলাকার একটি গার্মেন্টসের সামনে গিয়ে বাদাম বিক্রি করতেন। এর সূত্র ধরে ওই গার্মেন্টসের দারোয়ান নিজামের সঙ্গে ওয়াহিদুল্লাহর বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। কিছুদিন পর নিজাম তার কথিত স্ত্রীকে (ভুক্তভোগী তরুণী) নিয়ে ভৈরব উপজেলার মৌটুপি গ্রামে ওয়াহিদুল্লাহর বাড়িতে দাওয়াতে আসেন। দাওয়াত শেষে বিকেলে তার কথিত স্ত্রী ঢাকায় চলে যাওয়ার বায়না ধরেন। পরে ওয়াহিদুল্লাহ, দারোয়ান নিজাম ও ওই তরুণী বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। পরদিন সকালে ওই তরুণীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

ওই ঘটনার পর থেকেই ওয়াহিদুল্লাহ আত্মগোপনে চলে যান। কিছুদিন ঢাকায় থাকার পর তিনি সুনামগঞ্জে চলে যান। সুনামগঞ্জে কয়লার শ্রমিক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেন। পরে জমি বর্গা নিয়ে কৃষি কাজ করতেন। এই সময়ের মধ্যে ওয়াহিদুল্লাহ ভৈরবের জমিজমা বিক্রি করে সুনামগঞ্জের তাহেরপুর উপজেলার বিন্নারবন্দ এলাকায় অদুদ মিয়া (ছদ্মনাম) নামে স্থায়ী নিবাস গড়ে তোলেন। আসামি ওয়াহিদুল্লাহ এবং তার পরিবারের সদস্যরা ওই এলাকায় নতুন পরিচয়ে বসবাস শুরু করেন।

কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আল আমিন হোসাইন জানান, ২০০২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর আসামি ওয়াহিদুল্লাহকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫ হাজার টাকা জরিমানা করে রায় ঘোষণা করেন আদালত। অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড প্রদান করেন।

কিন্তু ঘটনার পর থেকে ওয়াহিদুল্লাহ প্রায় ২৭ বছর যাবৎ পলাতক ছিলেন। পলাতক থাকা অবস্থাতেই আদালত তার সাজার রায় ঘোষণা করেন। গোপন সংবাদ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অবশেষে গতকাল ওয়াহিদুল্লাহকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।

Tags: