muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

দেশের খবর

স্ত্রীকে হত্যার পর ড্রামে ভরে পালিয়ে থাকা স্বামী গ্রেপ্তার

স্ত্রীকে হত্যার পর ড্রামে ভরে পালিয়ে থাকা স্বামী গ্রেপ্তার

চট্টগ্রামের পাহাড়তলীতে স্ত্রীকে হত্যা করে প্লাস্টিকের ড্রামে লাশ গুম করে রাখার ঘটনায় স্বামী আবুল হোসেন ওরফে লিটনকে (৪৫) গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

রবিবার ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার রাঘবপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আবুল হোসেন ওই এলাকার হাফেজ আহম্মদের ছেলে। ২০১৪ সালে পাহাড়তলী এলাকার ভাড়া বাসায় স্ত্রীকে হত্যার পর ড্রামে ভরে রেখে পালিয়েছিলেন লিটন।

সোমবার র‍্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. নুরুল আবছার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

র‌্যাব জানায়, মোছাম্মৎ নাছিমা বেগম (২৬) বাগেরহাট জেলার মৌজারডাঙ্গার বাসিন্দা। ২০০৮ সালে পার্শ্ববর্তী এলাকায় মো. কামরুল ইসলামের সাথে তার বিয়ে হয়। বিয়ের ২ বছর পর তাদের একটি কন্যা সন্তান জন্ম হয়। এর ২/৩ মাস পর তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়।

পরবর্তীতে নাছিমা বেগম সন্তানকে তার নানীর কাছে রেখে চট্টগ্রামে তার ভাই মো. সেলিম হোসেনের বাসায় থেকে গার্মেন্টসে চাকরি শুরু করেন। গার্মেন্টেসে চাকরি করার সময় আবুল হোসেন ওরফে লিটনের সাথে পরিচয় হয় এবং প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে নাছিমা পরিবারের কাউকে না জানিয়ে ২০১৩ সালে আবুল হোসেন ওরফে লিটনকে বিয়ে করেন।

বিয়ের পর তারা পাহাড়তলীর গ্রীনভিউ এলাকায় একটি বাসায় ওঠেন। বিয়ের ১৫/২০ দিন পর নাছিমা তার বড় ভাইকে বিষয়টি অবগত করেন। বোনের বিয়ের কথা শুনে তার ছোট ভাই হিরণ শেখ বোনের বাসায় বেড়াতে আসে। বেড়াতে আসার পর আবুল হোসেনের আগের বিয়ে ও ৭ বছরের কন্যার কথা তারা জানতে পারেন। এ ঘটনা নিয়ে নাছিমার সাথে আবুল হোসেনের ঝগড়াঝাটি হয়।

২০১৪ সালের ৩১ মার্চ হিরণ শেখ তার বোন নাছিমাকে মোবাইলে বার বার ফোন দেয়। ফোনে না পেয়ে তার বোনের স্বামী আবুল হোসনকে ফোন করে। আবুল হোসেন জানায়, তার সাথে তার স্ত্রীর ঝগড়া হয়েছে এবং সে বাইরে আছে। পরে রাতে হিরণ শেখ আবারও ফোন দিলে এবার লিটন জানায়, তার বোন ঘুমাচ্ছে। পরদিন ফোন দিলে আবুল হোসেন জানায়, তোমার বোন আমার সাথে ঝগড়া করে বাসা থেকে চলে গেছে। ৪ এপ্রিল নাছিমার ভাই ও বোনসহ চট্টগ্রামে আসেন তার খোঁজে।

পরে তালাবদ্ধ ওই ঘরের জানালা দিয়ে দেখতে গেলে ঘর থেকে দুর্গন্ধ পান। পরে বিষয়টি পুলিশকে জানালে, পুলিশ এসে রান্নাঘরে রঙের প্লাস্টিকের ড্রামের ভেতর থেকে পঁচা অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই সেলিম হোসেন বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর আদালতে পুলিশ চার্জশিট জমা দেয়। পরে আদালত আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

র‍্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. নুরুল আবছার জানান, হত্যা মামলার দায়েরের পর থেকে প্রায় ৯ বছর স্বামী আবুল হোসেন পলাতক ছিলেন। আবুল হোসেন গ্রেপ্তার এড়ানোর জন্য ছদ্মনাম নিয়ে ফেনীর সোনাগাজী থানার রাঘবপুর এলাকায় আত্মগোপন করে রয়েছে, এমন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রোববার (১ অক্টোবর) অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তিনি আরও জানান, লিটনের দ্বিতীয় স্ত্রীকে ঝগড়াঝাটির এক পর্যায়ে হত্যা করে পানি রাখার প্লাস্টিকের ড্রামের ভেতরে গুম করে রাখে, যেন কেউ জানতে না পারে। হত্যার পর থেকে সে দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে ছিল। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

Tags: