চট্টগ্রামে এক শিশুকে ধর্ষণ ও খুনের মামলায় দুই আসামিকে পৃথক ধারায় দুবার আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক ফেরদৌস আরা এ রায় দেন।
দণ্ডিত আসামিরা হচ্ছেন- মো. জীবন (২৫) ও ইমন হাসান (২৬)। তবে উভয় সাজা একসঙ্গে কার্যকর হবে বলে আদালত রায়ে উল্লেখ করেছেন। রায় ঘোষণার সময় তারা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
খুনের শিকার সালমা আক্তার নগরীর পাঁচলাইশ থানার বাদুরতলা শাহ আমানত হাউজিং সোসাইটির বাসিন্দা মো. সোলায়মানের মেয়ে। বাসার পাশে একটি ক্যাডেট মাদ্রাসায় দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ত সে।
আদালত সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের ১৩ জুন শিশু সালমা কেনাকাটার জন্য দোকানের উদ্দেশে বাসা থেকে বের হয়। দুপুর ২টার পরও বাসায় ফিরে না যাওয়ায় খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। আশপাশের এলাকায় মাইকিং করা হয় নিখোঁজ সালমার সন্ধানে। কোথাও খোঁজ না পেয়ে ওইদিন সন্ধ্যায় পাঁচলাইশ থানায় একটি জিডি করেন শিশুটির পিতা।
পুলিশ তাদের বাসার আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে নিখোঁজ সালমার সন্ধানে নামে। ফুটেজে সালমাকে বাসার পাশে নঈমী ভবন নামে একটি মার্কেটের ভেতরে ঢুকতে দেখা যায়। ১৪ জুন রাতে ওই ভবনের পাশে থেকে সালমার নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় খুন শিশুটির পিতা সোলায়মান বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
২০১৭ সালের ২২ জুন জীবন এবং পরদিন ইমনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। নিহতের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে তাকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যার প্রমাণ পাওয়া যায়। ২০১৮ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি পাঁচলাইশ থানার তৎকালীন পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ ওয়ালী উদ্দিন আকবর এবং পরবর্তীতে এসআই পলাশ চন্দ্র ঘোষ তদন্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্রে দুই আসামিকে অভিযুক্ত করা হয়। চার্জগঠনের পর শুরু হয় বিচার। রাষ্ট্রপক্ষে ১৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।
ট্রাইব্যুনালের পিপি খন্দকার আরিফুল আলম জানান, অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় দুই আসামিকে আমৃত্যু কারাদণ্ড ও প্রত্যেককে ৩ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেন আদালত। এছাড়া অন্য একটি ধারায় তাদের আবারো আমৃত্যু কারাদণ্ড ও তিন লাখ টাকা অর্থদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। আদালতে উপস্থিত দুই আসামিকে সাজা পরোয়ানামূলে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।