জাহিদুল ইসলাম, ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি : নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের তিস্তা নদীর বালু যাচ্ছে সিন্ডিকেটের (চক্র) পেটে। তিস্তা নদীর বালু উত্তোলন করা হচ্ছে অবাধে। চক্রের সদস্য প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছে না। তবে প্রশাসন বলেছে, অবৈধ বালু উত্তোলন ঠেকাতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
জানা গেছে, ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের (মাষ্টার পাড়া) নামক স্থানে তিস্তা নদী হতে অবৈধভাবে দীর্ঘদিন ধরে বালু উত্তোলন করে ট্রাক্টরের মালিকদের কাছে প্রতি গাড়ি বালু ২০০/- টাকা করে বিক্রি করে আসছে ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ হাফিজুর রহমান। ট্রাক্টরে বালু নেওয়ার ফলে হুমকির মুখে পড়েছে নদীর তীরবর্তী বাঁধ, রাস্তাঘাট ও বসতবাড়িসহ আশপাশের সড়কগুলো চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে গাড়ি প্রতি ২০০/- টাকা বিক্রি করে আসছে স্থানীয় মেম্বার মোঃ হাফিজুর রহমান। পরবর্তীতে জনসাধারনের কাছে ট্রাক্টরের মালিকগন প্রতি ট্রাক্টর বালু ১৫০০ থেকে ২ হাজার টাকায় বিক্রি করে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রতিদিন গড়ে ২০-৩০ গাড়ি বালু উত্তোলন করা হয়। প্রতি ট্রাক্টরে গড়ে ১০০ সিফটি বালু ধরে। পরবর্তীতে জনসাধারনের কাছে ট্রাক্টরের মালিকগন প্রতি ট্রাক্টর বালু ১৫০০ থেকে ২ হাজার টাকায় বিক্রি করে। অথচ বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা (সংশোধন) আইন ২০২৩ এ বর্ণিত আছে। ব্যক্তি মালিকানাধীন জমির বালু বা মাটি উত্তোলন। কোনো ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি হইতে বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাইবে না, যদি (ক) উহা উর্বর কৃষি জমি হয়, (খ) বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে হয়, (গ) কৃষি জমির উর্বর উপরিভাগের মাটি বিনষ্ট হয়, (ঘ) পরিবেশ, প্রতিবেশ বা জীববৈচিত্রের ক্ষতি সাধিত হয়; বা ড্রেজারের মাধ্যমে বা অন্য কোনো কৌশলী প্রক্রিয়ায় বালু বা মাটি উত্তোলন করা হয়, যাহাতে উক্ত জমিসহ পার্শ্ববর্তী অন্য জমির ক্ষতি, চ্যুতি বা ধসের উদ্ভব হয়।এমন জমি থেকে বালি সংগ্রহ করা যাবে না।
ইউপি সদস্য মোঃ হাফিজুর রহমানকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, বালু যার দরকার হয় মাঝে মধ্যে নেয়। চেয়ারম্যান যদি বলে যে, ১০ টলি বালু লাগবে তাহলে তিস্তা নদী থেকে ১০ টলি বালু দেই। আবার যে যখন চায় তখন তাকে বালু দেই। এখানে বিনিয়োগের মধ্যে ৫০/- টাকা টলি প্রতি নেই। কিছুদিন আগে রাস্তার কাজের জন্য স্কেভেটার (ভেকু) দিয়ে প্রতিদিন ১০০ থেকে ২০০ টলি বালু নিয়ে গেছে। যার জন্য তাদের কাছ থেকে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা আমি নিয়েছি। আবার এক সপ্তাহ বা দশ দিনের মধ্যে একটি রাস্তার কাজ হবে সেখানে স্কেভেটার (ভেকু) দিয়ে বালু কাটলে টাকা নিবো।
এ ব্যাপারে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা আক্তারকে মুঠো ফোনে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, উপজেলা ভূমি অফিস থেকে কাউকে নদী থেকে বালু কাটতে লিখিত বা মৌখিক কোনো অনুমতি দেওয়া হয়নি। যদি কেউ অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করেন তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।