muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

দেশের খবর

পুলিশ হেফাজতে দুদক কর্মকর্তার মৃত্যু : ওসিসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা

পুলিশ হেফাজতে দুদক কর্মকর্তার মৃত্যু : ওসিসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা

চট্টগ্রামে পুলিশ ‘হেফাজতে’ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক কর্মকর্তা ছৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর মৃত্যুর ঘটনায় আদালতে মামলা করা হয়েছে। মামলায় নগরের চান্দগাঁও থানার ওসি, তিন পুলিশ কর্মকর্তাসহ ৯ জনকে আসামি করা হয়েছে।

সোমবার (১৬ অক্টোবর) চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ড. বেগম জেবুননেছার আদালতে মামলাটি দায়ের করেছেন ভুক্তভোগীর স্ত্রী ফৌজিয়া আনোয়ার।

মামলার আসামিরা হলেন— চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খাইরুল ইসলাম, পরিদর্শক (তদন্ত) মনিবুর রহমান, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. ইউসুফ ও সোহেল রানা। এছাড়া বাকি পাঁচ আসামিরা হলেন— এস এম আসাদুজ্জামান, জসিম উদ্দিন, মো. লিটন, রণি আক্তার তানিয়া এবং কলি আক্তার।

মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে চান্দগাঁও থানার ওসি, পরিদর্শক (তদন্ত), এএসআইসহ ৯ জনকে আসামি করে মামলার আবেদন করা হয়। মামলার অভিযোগের বিষয়ে আদালতে ৩০ মিনিট শুনানি হয়। আদালত শুনানি শেষে মামলাটি থানায় রেকর্ড করার জন্য নির্দেশ দেন। পাশাপাশি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটকে তদন্তের নির্দেশ দেন।

উল্লেখ্য, গত ৩ অক্টোবর রাতে নগরের চান্দগাঁও থানার এক কিলোমিটার এলাকার বাসা থেকে দুদকের অবসরপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহকে (৬৪) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর পুলিশ হেফাজতে ‘অসুস্থ হয়ে’ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক কর্মকর্তার মৃত্যু হয়।

পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, হুমকি-ধমকি ও মানহানির অভিযোগে আদালতে দায়ের হওয়া একটি মামলায় পরোয়ানামূলে শহীদুল্লাকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়েছিল পুলিশ। তাকে চান্দগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জের (ওসি) কক্ষে বসানোর পর তিনি অসুস্থবোধ করতে থাকেন। হৃদরোগে আক্রান্ত শহীদুল্লাহ’র মুখে এ সময় ইনহেলার স্প্রে করেন তার সঙ্গে যাওয়া ছোট ভাই। তবে অবস্থার দ্রুত অবনতি হতে শুরু করলে ছোট ভাইয়ের চাহিদা অনুযায়ী পুলিশ শহীদুল্লাহকে বেসরকারি পার্কভিউ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে, শহীদুল্লার স্বজনরা জানিয়েছিলেন-জমি নিয়ে স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে তাদের বিরোধ ছিল। মামলার বিষয়ে তারা কিছু জানেন না। রাত ১১টার দিকে চান্দগাঁও থানার দুজন এএসআই গিয়ে শহীদুল্লাকে থানায় নিয়ে আসেন। সঙ্গে সঙ্গে স্বজনরা থানায় যান। উনি হার্টের পেশেন্ট; উনার ইনহেলার আর মেডিসিন লাগে সবসময়। তাকে থানায় নেয়ার সঙ্গে সঙ্গে ফটক বন্ধ করে দেন। ইনহেলার ও মেডিসিনও তার কাছে পৌঁছাতে দেয়নি। পরে ১২টার দিকে শহীদুল্লাহকে হাসপাতালে নিয়ে গেছে।

পরে বুধবার (৪ অক্টোবর) দুদকের সাবেক কর্মকর্তার মৃত্যুর ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)। এতে নগর গোয়েন্দা পুলিশের উত্তর জোনের উপ-কমিশনারকে প্রধান করা হয়েছে। কমিটির অপর সদস্যরা হলেন-নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (উত্তর) এবং বিশেষ শাখার সহকারী কমিশনার।

এরপরের দিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন ও অর্থ) এম এ মাসুদ স্বাক্ষরিত এক আদেশে অভিযানে থাকা দুই এএসআইকে (সহকারী উপ-পরিদর্শক) চান্দগাঁও থানা থেকে সরিয়ে দামপাড়া পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়। সিএমপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল- ‘তদন্তের স্বার্থেই তাদের সরানো হয়েছে।’

এদিকে, নগরের চান্দগাঁও থানা পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় মারা যাওয়া দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক উপ-পরিচালক ছৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর মামলায় সমন লুকিয়ে রাখায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বেঞ্চ সহকারী মোহাম্মদ হারুন অর রশীদকে ক্যাশিয়ার পদে বদলি করা হয়েছিল। এছাড়াও এক সদস্য বিশিষ্ট বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল।

Tags: