সর্বনিম্ন মূল বেতন ৮২৫০ ও সর্বোচ্চ ৭৫ হাজার টাকা সুপারিশ করে সরকারি চাকুরেদের নতুন বেতন কাঠামোর পর্যালোচনা প্রতিবেদন গতকাল বুধবার অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কাছে হস্তান্তর করেছেন মন্ত্রিপরিষদসচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইঞা। তাতে ড. ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় বেতন ও চাকরি কমিশনের বেশির ভাগ সুপারিশই রাখা হয়েছে। তবে সরকারি চাকুরেদের গ্রেড ১৬টি নয়, এখনকার মতোই ২০টি রাখার পক্ষে মত দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদসচিবের নেতৃত্বে গঠিত সচিব কমিটি।
ড. ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বে গঠিত কমিশন সর্বনিম্ন ৮২০০ ও সর্বোচ্চ ৮০ হাজার টাকা নির্ধারণের সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দিয়েছিল গত বছরের ২১ ডিসেম্বর। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে তা পর্যালোচনা করে সচিব কমিটি। তারা সর্বনিম্ন গ্রেডে ৫০ টাকা বাড়িয়ে সর্বোচ্চ গ্রেডে পাঁচ হাজার কমানোর পক্ষে মত দিয়েছে। বর্তমানে সর্বনিম্ন গ্রেডে ৪১০০ ও সর্বোচ্চ গ্রেডে ৪০ হাজার টাকা বেতন নির্ধারিত আছে। অর্থাৎ, গ্রেডওয়ারি কম-বেশি শত ভাগ বেতন বাড়ানোর সুপারিশ করেছে সচিব কমিটিও।
নতুন কাঠামোতে বেতনের হার
সর্বোচ্চ বেতন ৭৫ হাজার টাকা ও সর্বনিম্ন ৮ হাজার ২৫০ টাকা নির্ধারণ করে ২০টি গ্রেডে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অষ্টম পে-স্কেল চূড়ান্ত করা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ ও মুখ্যসচিবের বেতন ধরা হয়েছে ৯০ হাজার টাকা (নির্ধারিত) এবং সিনিয়র সচিবের বেতন ৮৪ হাজার টাকা (নির্ধারিত)। তবে নতুন বেতন কাঠামোতে বাদ দেওয়া হয়েছে সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল। এই বেতন ১ জুলাই থেকে দুই ধাপে বাস্তবায়ন করা হবে। পর্যালোচনা কমিটির সুপারিশ : পে-স্কেল পর্যালোচনা কমিটির সুপারিশে মন্ত্রিপরিষদসচিব ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্যসচিবের বেতন ৯০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। জাতীয় বেতন কমিশনের সুপারিশ ছিল এক লাখ টাকা। আর সিনিয়র সচিবের বেতন নির্ধারণ করা হয়েছে ৮৪ হাজার টাকা। এ ক্ষেত্রে কমিশনের সুপারিশ ছিল ৮৮ হাজার টাকা।
পর্যালোচনা কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী, গ্রেড-এক সচিবের বেতন ৭৫ হাজার টাকা, গ্রেড-দুই ৬৪ হাজার ৬০০ টাকা, গ্রেড-তিন ৫৬ হাজার ৫০০ টাকা, গ্রেড-চার ৫০ হাজার টাকা, গ্রেড-পাঁচ ৪৩ হাজার টাকা, গ্রেড-ছয় ৩৫ হাজার ৫০০ টাকা, গ্রেড-সাত ২৯ হাজার টাকা, গ্রেড-আট ২৩ হাজার টাকা, গ্রেড-নয় ২২ হাজার টাকা, গ্রেড-দশ ১৬ হাজার টাকা, গ্রেড-এগার ১২ হাজার ৫০০ টাকা, গ্রেড-বারো ১১ হাজার ৩০০ টাকা, গ্রেড-তের ১১ হাজার টাকা, গ্রেড-চৌদ্দ ১০ হাজার ২০০ টাকা, গ্রেড-পনেরো ৯ হাজার ৭০০ টাকা, গ্রেড-ষোল ৯ হাজার ৩০০ টাকা, গ্রেড-সতেরো ৯ হাজার টাকা, গ্রেড-আঠারো ৮ হাজার ৮০০ টাকা, গ্রেড-উনিশ ৮ হাজার ৫০০ এবং গ্রেড-বিশ (সর্বনিম্ন) ৮ হাজার ২৫০ টাকা। কমিশন সর্বনিম্ন বেতন ৮ হাজার ২০০ টাকা করার প্রস্তাব করেছিল। এ ক্ষেত্রে পে-স্কেল পর্যালোচনা কমিটি আরও ৫০ টাকা বাড়িয়েছে।
কমিশনের সুপারিশ : অষ্টম জাতীয় কমিশন ২০ গ্রেডের বিপরীতে ১৬টি গ্রেডের সুপারিশ করেছিল। এ ক্ষেত্রে মন্ত্রিপরিষদ ও মুখ্যসচিবের বেতন এক লাখ টাকা, সিনিয়র সচিবের বেতন ৮৮ হাজার টাকা নির্ধারণ করার সুপারিশ করেছিল। এ ছাড়া গ্রেড-এক ৮০ হাজার টাকা, গ্রেড-দুই- ৭০ হাজার টাকা, গ্রেড-তিন ৬০ হাজার টাকা, গ্রেড-চার ৫২ হাজার টাকা, গ্রেড-পাঁচ ৪৫ হাজার টাকা, গ্রেড-ছয় ৩৭ হাজার টাকা, গ্রেড-সাত ৩২ হাজার টাকা, গ্রেড-আট ও নয় মিলে গ্রেড-আট ২৫ হাজার টাকা, গ্রেড-নয় ১৭ হাজার টাকা, গ্রেড-দশ ১৩ হাজার টাকা, গ্রেড-১১ ও ১২ মিলে গ্রেড-এগারোতে ১১ হাজার ৫০০ টাকা, গ্রেড-বারো ১০ হাজার ৫০০ টাকা, গ্রেড-তেরোতে ১০ হাজার টাকা, গ্রেড-চৌদ্দ ৯ হাজার ৫০০ টাকা, গ্রেড-১৫ ও ১৬ মিলে গ্রেড পনেরো ৯ হাজার টাকা এবং ১৬-২০ মিলে গ্রেড ষোল হচ্ছে ৮ হাজার ২০০ টাকা।