ঢাকা: সৌদি আরব এবার বাংলাদেশ থেকে বিনামূল্যে ২০ হাজার নারীশ্রমিক নেবে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন। আসন্ন রমজানের আগেই এই শ্রমিক সৌদি আরবে পাঠানো হবে ।
ইতোমধ্যে ৩০ হাজার নারীশ্রমিকের ভিসা এসে পৌঁছেছে। তবে এসব নারীশ্রমিক পাঠাতে কোনো টাকা-পয়সা লাগবে না। বিমান ভাড়াসহ আনুসঙ্গিক সব খরচ নিয়োগকর্তা বহন করবে। এসব শ্রমিকরা প্রতিমাসে ন্যূনতম বেতন পাবেন ৮০০ রিয়াল।
বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে সৌদি আরবের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান তিনি।
মন্ত্রী জানান, দেশটি বর্তমানে ৫০ হাজার নারীশ্রমিক নিতে চায়। এ জন্য ১০০ রিক্রুটিং এজেন্সিকে ২০০ জন করে নারী শ্রমিক সংগ্রহ করতে বলে হয়েছে। যাতে তাদের চাহিদা অনুযায়ী আমরা যথা সময়ে নারী শ্রমিক পাঠাতে পারি।
মোশাররফ হোসেন বলেন, ইতোমধ্যে ৩০ হাজার নারীশ্রমিকের জন্য ভিসা এসে পৌঁছেছে। তবে চূড়ান্তভাবে আগামী মাসের মধ্যে ২০ হাজার নারী শ্রমিককে সৌদি আরব পাঠানো হবে।
মানবপাচার প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমরা শুধু বৈধ শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করি। অবৈধ শ্রমিকদের নিয়ে নয়। এটি স্বরাষ্ট্র-পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাজ। বৈধ-অবৈধ মিশ্রণ করলে অসুবিধা হবে। তবে স্বরাষ্ট্র-পররাষ্ট্র এ দুই মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে আমাদের পক্ষ থেকে কিছু করার থাকলে আমরা তা করব।
এসব নারী শ্রমিক পাঠাতে কোনো ভিসা জটিলতা হবে কিনা? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, এ ব্যপারে ভিসা জটিলতা হবে না। কারণ সৌদি আরবের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাদের সব ধরনের প্রস্তুতি আছে।
মালয়েশিয়াতে জিটুজি (সরকার টু সরকার) পদ্ধতিতে শ্রমিক যায়নি, এ বিষয়ে যে অভিযোগ করা হচ্ছে সেটি নিয়ে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, তারা চাহিদা যেমন পাঠিয়েছে তেমন শ্রমিক গেছে। যারা সমালোচনা করছেন তারা না ভেবেই করছেন। ‘সমালোচকদের কথায় আমরা বাজার উলোটপালট করতে পরি না’।
বিগত বিএনপি-জোট সরকার আমলে আড়াই লাখ শ্রমিক মালয়েশিয়াতে যায়, আর আমরা আওয়ামী লীগ সরকার আসার পর বিশ্ব মন্দার মধ্যেও ৫০ লাখ শ্রমিক পাঠিয়েছি।
নৌকায় করে মানবপাচারের ঘটনা নতুন নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এবার রেকর্ড হয়েছে বলে যে কথা বলা হচ্ছে তাও সঠিক নয়। এবার বিষয়টি সংবাদপত্রে বা মিডিয়াতে বেশি প্রচারের কারণে এমনটি মনে হতে পারে। মূলত দেশটিতে বর্তমানে শ্রমিক চাহিদা না থাকায় এটি ঘটেছে। মালয়েশিয়াতে কোনো শ্রমিকই প্রাইভেট পর্যায়ে যায় না। দেশটি সরাসরি আমাদের ডাটাবেজ থেকে শ্রমিক নেয়, কোনো এজেন্ট এর মধ্যে থাকে না।
তবে সাম্প্রতিককালে মালয়েশিয়া থেকে কেন আরো চাহিদা আসছে না, সে বিষয়ে দ্রুত একটি মিটিং করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার ৭ সদস্য বিশিষ্টি একটি প্রতিনিধি দল মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষৎ করেন। এতে নেতৃত্ব দেন সৌদি আরবের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি মিনিস্টার ড. আহমেদ আল ফাইদ। তারা বিভিন্ন রিক্রুটিং এজেন্সির সঙ্গেও বৈঠকে বসবেন বলে জানা গেছে।