সোহানুর রহমান সোহান, ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি : ভৈরব উপজেলার শিমুলকান্দি ইউনিয়নস্থ গোছামারা গ্রামে ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে ফসলি জমির মাটি জোরপূর্বক বিক্রি নিয়ে দু পক্ষের সংঘর্ষে ১৫ জন আহত হয়েছে। গতকাল রবিবার সকাল ১০ টার দিকে গ্রামের চক বাজার নামক স্থানে হামলা পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মিজানুর রহমান ভ‚ইয়া বলেন, কোদালকাটি খাল খনন প্রক্রিয়া নিয়ে গত প্রায় ২ মাস ধরে জমির মালিকদের সঙ্গে ড্রেজার মালিকদের বিরোধ চলে আসছিল। গত বৃহষ্পতিবার ভৈরব সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইকবাল হোসেন রুমন মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ড্রেজিং কাজে ব্যবহৃত পাইপ ভেঙ্গে ফেলে ড্রেজিং বন্ধ ঘোষনা করেন।
গোছামারা গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য ও জমির মালিক মোঃ শাহজাহান জানান, একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট চক্র প্রায় আড়াই মাস ধরে কোদালকাটি খাল খননের নামে অর্ধশতাধিক জমির মালিকের ফসলি জমি ড্রেজার দিয়ে প্রায় ৪০ ফুট গভীর গর্ত করে জোরপূর্বক কোটি কোটি টাকার মাটি বিক্রী করেছে। প্রশাসনের বাধার মুখে চক্রটি রাতের আঁধারে প্রায় ৫০টি ড্রেজার দিয়ে জমি কেটে মাটি বিক্রী করে আসছে। এ ব্যাপারে এলাকার কৃষকগন প্রতিবাদসহ মানববন্ধন ও প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়ে আসছে। এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, জনৈক ঠিকাদার লাখ লাখ টাকায় প্রভাবশালী মহলকে ম্যানেজ করে জোর পূর্বকভাবে অবৈধ বালু উত্তোলনের কার্যক্রম চালিয়ে আসছে।
এলাকার সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ বাবুল মিয়া জানান, গত বৃহষ্পতিবার ড্রেজিং কার্যক্রমে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার সময় মোঃ শাহজাহান এর লোকজন ড্রেজার মালিক সরফত উল্লাকে মারধর করে। এ নিয়ে রবিবার সকালে ঝগড়া সৃষ্টি হয়। এ সময় রুবেল মিয়া(৩০), জিলানী(৩৮), শফিকুল(৪৫), সৌরভ(১৮), জীবন(১৯),আমির হোসেন(৫৫), মহরম আলী সরকার (৫৬), এবাদুল(১৬), জোবায়ের(২২), আবু সালাম(৫৫), জাবেদ সরকার (২২), নাসির উল্লাহ(২৮), রহিমা(৪০) কে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এছাড়াও গুরুতর আহত রশিদ(৫০) কে ভাগলপুর হাসপাতালে প্রেরন করা হয়।
জমির মালিক দিলরুবা বেগম আহাজারি করে জানান, শক্তিশালী চক্র আমার জমির মাটি কেটে বিক্রী করে ফেলেছে। বিচার চেয়েও প্রতিকার পাচ্ছিনা।
এ ব্যাপারে ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান সবুজকে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
ঘটনার পর ভৈরব থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। বর্তমানে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। কৃষি জমির উপর নির্ভরশীল এলাকার কৃষকগন জানান, আমরা ফসলি জমি হারিয়ে অসহায় জীবন যাপন করছি। জমি ফেরত চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।