মুক্তিযোদ্ধারকণ্ঠ ডেস্কঃ তিনি একজন প্রাক্তন সিনিয়র সচিব ও একজন নন্দিত লেখক, ক্রীড়া বিশ্লেষক। সারা দেশে এক নামেই পরিচিত ড. রণজিৎ বিশ্বাস।
চট্টগ্রামে এসে আকস্মিকভাবে মৃত্যুবরণ করেন এই জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব। তবে তার মরদেহ অপমানজনক শ্রদ্ধা নিবেদনের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন চট্টগ্রামের কয়েকজন সংবাদকর্মী ও তার ভক্তরা।
শুক্রবার রণজিৎ বিশ্বাসের মরদেহ শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে রাখা হয়েছিল কয়েকটি চেয়ারের ওপরে। শেষ শ্রদ্ধা জানাতে মরদেহ চেয়ারের ওপর রাখায় চট্টগ্রাম জুড়ে সমালোচনার ঝড় বইছে।
রণজিৎ বিশ্বাসের ভক্ত অনুরাগীরা মনে করছেন রণজিৎ বিশ্বাসের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর নামে তার মরদেহের প্রতি অসম্মান আর অবমাননা করা হয়েছে।
বেলা সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের একটি লাশবাহী গাড়িতে করে রণজিৎ বিশ্বাসের মরদেহ প্রেসক্লাবের সামনে আনা হয়। গাড়ি থেকে নামিয়ে মরদেহ কয়েকটি চেয়ার সারিবদ্ধ ও মুখোমুখি করে তার ওপর রাখা হয়। পরে চেয়ারের ওপর রাখা মরদেহের ওপর ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
প্রেসক্লাব চত্বরে রণজিৎ বিশ্বাসের মরদেহ চেয়ারের ওপর দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করে তার ভক্তরা বলেছেন, জীবিত থাকতেও রণজিৎ বিশ্বাসকে উপযুক্ত মূল্যায়ন ও সম্মান জানানো হয়নি। মারা যাওয়ার পরও তার লাশের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর নামে অশ্রদ্ধা আর অসম্মান করা হয়েছে।
সাইদুর রহমান পাটোয়ারী নামে এক রণজিৎ ভক্ত তার ফেসবুকে লিখেন, ‘অনেকগুলো ভণ্ডের মাঝে আমাদের প্রিয় রণজিৎ স্যার ঘুমিয়ে আছেন। ক্ষমা করবেন স্যার। পেছনে দেখা যায় বড় বড় ফুলের তোড়া, এগুলো না এনে ৫০০ টাকা খরচ করলেই তো একটা খাটের ব্যবস্থা করা যেতো। সব শালা ভণ্ড।’
চট্টগ্রামের সিনিয়র সাংবাদিক আল রাহমান তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেন,‘রণজিৎ বিশ্বাস দেশ ও জাতিকে অনেক কিছু দিয়ে গেছেন। কী পেলেন বিনিময়ে! তার কর্মকীর্তির মূল্যায়ন হয়নি এটা প্রকাশ্যে বললেন স্ত্রী শেলী বিশ্বাস। তার মরদেহ রাখার জন্যে একটি খাট বা পালঙ্ক জোগাড় কিংবা একটি ছোট্ট মঞ্চ তৈরি করতে পারেননি আয়োজকরা! প্লাস্টিকের চেয়ারের ওপর মরদেহটি রাখা হল।’
ফটোসাংবাদিক কমল দাশ তার ফেসবুকে লিখেন, ‘জেলা প্রশাসক ( ডেপুটি কমিশনার অর্থ জেলা প্রশাসক নয়) তাঁর রুচির দৈন্যতা, চিত্তের সংকীর্ণতা ও মানবতার প্রতি চরম অবমানাকর ব্যবহারে পদের মর্যদা হারিয়েছেন। তার বসেরও বস এই সিনিয়র সচিবের প্রতি এমন আচরণে তার শাস্তি হওয়া উচিত।’
আহমেদ মনসুর নামেক একজন লিখেছেন, ‘এত বড় মাপের একজন গুণী মানুষের মরদেহ যারা প্লাস্টিকের চেয়ারে রেখে চরম অসম্মান প্রদর্শন করেছে তাদের শাস্তি হওয়া উচিত। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই।’
মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠ ডটকম/ ২৪ -০৬-২০১৬ ইং/মো: হাছিবুর রহমান