মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ ডেস্কঃ
শ্বশুর বাড়িতে এখন ঘুমাচ্ছেন এসপি বাবুল আক্তার। স্ত্রী হত্যা মামলায় গতকাল শুক্রবার সারারাত মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) কার্যালয়ে ছিলেন তিনি। একটি অনুষ্ঠান থেকে তাকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
শনিবার সকাল থেকেই এ নিয়ে গণমাধ্যমে নানা কথাবার্তা হয়েছে। তবে সর্বশেষ খবরে জানা গেছে, বিকেল ৪টায় খিলগাঁও মেরাদিয়ায় শ্বশুর বাড়ি গিয়ে ক্লান্ত শরীরে ঘুমিয়ে পড়েছেন বাবুল আক্তার। তার পারিবারিক সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।
বাবুল আক্তারের শ্বশুর মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘বিকেল ৪টার কিছুক্ষণ পরেই সে (বাবুল আক্তার) বাসায় ফিরেছে। এরপর গোসল করে ঘুমিয়ে পড়ে। তার সাথে বিস্তারিত কথা বলা এখনো সম্ভব হয়নি।’
এর আগে, শুক্রবার রাতে শ্বশুরবাড়ি থেকে গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে বাবুল আক্তারকে ডেকে নেয়া হয় মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে। সেখানে স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তাদের সাথে তার রাতভর আলোচনা হয়। তবে কী কথা হয়েছে সে ব্যাপারে জানা যাচ্ছে না।
বিকেলে ডিবি ডিসি (পূর্ব) মাহবুবুল আলমের গাড়িতে করে বাবুলকে শ্বশুর বাড়িতে পৌঁছে দেয়া হয়।
এর আগে বাবুল আক্তারের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদ নয়, মামলার তদন্ত কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা হয়েছে। যেহেতু আমি মামলার বাদী, তাই কিছু বিষয়ে তাদের সাথে আলোচনা ছিল।’
এদিকে স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কামরুজ্জামানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ‘এই মামলায় এখন পর্যন্ত দু’জনকে আটক করা হয়েছে। তবে তারা এখনো ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দিতে রাজি হননি।’
তদন্ত সূত্রে আরো জানা যায়, মিতু হত্যায় সরাসরি জড়িত সন্দেহে আবু মুছা (৪৫) ও এহতেশামুল হক ভোলা (৩৮) নামে দুই ব্যক্তিকে ইতোমধ্যেই আটক করেছে পুলিশের একটি ইউনিট। এরা দু’জনই এসপি বাবুল আক্তারের সোর্স হিসেবে কাজ করতেন। ধারণা করা হচ্ছে, তৃতীয় কোনো পক্ষের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ভাড়াটে খুনি হিসেবে তারা মিতুকে হত্যা করেছে অথবা সাহায্য করেছে। তাছাড়া মিতু হত্যায় যে অস্ত্রটি ব্যবহার হয়েছে, সেটি নাকি বাবুল আক্তরের সোর্স বিভিন্ন সময় ভাড়া দিতো।
এর মধ্যে আবু মুছা দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী। অনেক সময় ভাড়াটে খুনি হিসেবেও কাজ করেন। এসপি বাবুল আক্তারের হাতে একবার গ্রেপ্তারও হয়েছিলেন তিনি। অন্যদিকে ভোলাও একজন সন্ত্রাসী ছিলেন। এখন তিনি ৩৫ নম্বর বকশিরহাট ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি। তার বিরুদ্ধেও রয়েছে একাধিক মামলা। বেশ কিছুদিন ধরে দু’জনই বাবুল আক্তারের সোর্স হিসেবে কাজ করছেন। আর এসব বিষয় নিয়েই ডিবি পুলিশ বাবুল আক্তারের সঙ্গে কথা বলবে বলেই জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, গত ৫ জুন নগরীর জিইসি’র মোড় এলাকায় ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাত ও গুলিতে খুন হন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। এ ঘটনার পরদিন পাঁচলাইশ থানায় বাবুল আক্তার বাদি হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ঘটনার রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে গোয়েন্দা পুলিশ, র্যাব, সিআইডি, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ও কাউন্টার টেররিজম ইউনিট (সিটিআই)। তবে মামলার মূল তদন্তে আছে চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। যদিও সবগুলো সংস্থা মিলে এখন পর্যন্ত এ ঘটনার তেমন কোনো ক্লু খুঁজে বের করতে পারেনি।