muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

কিশোরগঞ্জের খবর

কিশোরগঞ্জের মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ঢাকায় গ্রেপ্তার

কিশোরগঞ্জের মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ঢাকায় গ্রেপ্তার

কিশোরগঞ্জে স্ত্রী হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এক আসামি দীর্ঘ দুই বছর পলাতক থাকার পর ঢাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। আটককৃত আসামী জিয়া উদ্দিনকে (৪৩) কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের আব্দুস সোবাহানের ছেলে। সোমবার (৪ ডিসেম্বর) সকাল ৯টার দিকে রাজধানীর কদমতলী থানাধীন মেরাজনগর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সোমবার রাত ৯টায় র‍্যাব-১৪ কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আসামি জিয়া উদ্দিনকে গ্রেফতারের বিষয়টি জানায় র‍্যাব।

সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাবের কোম্পানী অধিনায়ক স্কোয়াড্রন লিডার মোঃ. আশরাফুল কবির জানান, ২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার হাতকাজলা গ্রামের মোঃ. হারেছ মিয়ার কন্যা রেখা আক্তারকে (২০) বিয়ে করেন হারেছ মিয়ার চাচাতো ভাইয়ের ছেলে জিয়া উদ্দিন। বিয়ের পর থেকে স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুর বাড়িতে বসবাস শুরু করেন। বিয়ের এক মাস পর থেকেই যৌতুকের জন্য স্ত্রী রেখাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করেন তিনি। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে তার মা বাবা বাড়ির পাশেই জায়গা কিনে একটি বাড়ি করে দেন। কিন্তু এতেও জিয়া উদ্দিনের চাহিদা মিটেনি। আবারও যৌতুকের জন্য নির্যাতন শুরু করেন।

২০০৬ সালের ১৪ জুলাই রাত অনুমান ৮টা থেকে সাড়ে ৮টার দিকে স্বামী জিয়া উদ্দিন নিজ ঘরে স্ত্রী রেখা আক্তারকে গলায় ধারালো দায়ের আঘাতে হত্যা করেন। হত্যাকাণ্ডের পর রেখার মা বাবা ও আশপাশের লোকদের সামনে দিয়ে পালিয়ে যান তিনি।

এ ঘটনায় নিহত রেখার পিতা মোঃ. হারেছ মিয়া বাদী হয়ে তাড়াইল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ এ মামলায় একমাত্র আসামি জিয়া উদ্দিনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করে। কিশোরগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে আসামীর বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি একমাত্র আসামি জিয়া উদ্দিনকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন। একইসঙ্গে আসামিকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানারও আদেশ দেন।

সাজা থেকে বাঁচতে আসামি জিয়া উদ্দিন কিশোরগঞ্জ ছেড়ে বিভিন্ন জায়গায় নাম ও ঠিকানা পরিবর্তন করে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন। এক পর্যায়ে সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ উপজেলার বেহেলি ইউনিয়নের চণ্ডিপুর গ্রামে আরেকটি বিয়ে করেন। পরে নারায়ণগঞ্জে ভাঙ্গারির ব্যবসা শুরু করেন তিনি। তাকে গ্রেফতারের জন্য র‍্যাব-১৪ কিশোরগঞ্জ ক্যাম্প গোয়েন্দা নজরদারী শুরু করে এবং অবশেষে রাজধানীর কদমতলী এলাকায় তার অবস্থান নিশ্চিত করে।

সোমবার সকাল ৯টার দিকে র‍্যাব-১৪ কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের কোম্পানী অধিনায়ক স্কোয়াড্রন লিডার মোঃ:আশরাফুল কবিরের নেতৃত্বে এবং র‍্যাব-১১ আদমজীনগর নারায়ণগঞ্জ এর সহায়তায় র‍্যাবের একটি দল অভিযান চালিয়ে জিয়া উদ্দিনকে গ্রেফতার করে। রাতে তাকে মিঠামইন থানায় হস্তান্তর করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিতি ছিলেন র‍্যাব-১৪ কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের উপ সহকারী পরিচালক মোঃ. হাফিজুর রহমান ও নুরুজ্জামান মিয়া।

Tags: