হত্যাকাণ্ডের সাত দিনের মাথায় ১৬ আসামির জামিন মঞ্জুর করায় বিচারককে লক্ষ্য করে জুতা নিক্ষেপ করেছেন মামলার বাদী। এতে হত্যা মামলার বাদী মিনারা আক্তারকে আটক করেছে পুলিশ।
সোমবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে পঞ্চগড় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ ঘটনা ঘটে।
জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক অলরাম কার্জীকে লক্ষ্য করে জুতা নিক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় মামলার বাদী মিনারা আক্তারকে (২৫) আটক করেছে আদালতের কোর্ট পুলিশ। মিনারা সদর উপজেলার সাতমেড়া ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া এলাকার মৃত ইয়াকুব আলীর মেয়ে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আইনজীবী আবু ইউনুস মোহাম্মদ লেলিন। তিনি বলেন, বিজ্ঞ আদালত আসামিদের জামিন দেয়ায় মিনারা ক্ষুব্ধ হয়ে জুতা খুলে বিচারককে লক্ষ্য করে নিক্ষেপ করে। জুতাটি বিচারকের সামনে থাকা গ্লাসে লেগে নিচে পড়ে যায়। এমন ঘটনা কোনভাবেই কাম্য নয়।
আদালত সূত্রে জানা যায়, গত ৫ ডিসেম্বর সদর উপজেলার সাতমেরা এলাকায় জমি নিয়ে দুই ভাইয়ের বিরোধের জেরে ইয়াকুব আলী (৮৩) নিহত হন। ওই দিনই রাতেই নিহতের মেয়ে মিনারা আক্তার বাদী হয়ে ইয়াকুবের ছোট ভাইসহ ১৯ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। সোমবার মামলার ১৬ আসামি আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে বিচারক অলরাম কাজী তাদের সবার জামিন মঞ্জুর করেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী হাবিবুল ইসলামও ইয়াকুব আলীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন। এ অবস্থায় সব আসামিকে জামিন দেয়া কোনভাবেই কাম্য নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বিবাদীপক্ষের আইনজীবী রাকিবুত তারেক বলেন, আসামিদের আগামী ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছেন আদালত। তাদের অধিকাংশই নারী। আর মামলায় যারা মূল আসামি, তারা আত্মসমর্পন করেনি। নির্যাতনের পর হত্যার কথা বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে ইয়াকুব হার্টঅ্যাটাকে মারা গেছেন বলেও দাবি করেন আসামিপক্ষের আইনজীবি। যেহেতু মামলায় জব্দ তালিকা এবং সুরতহাল রিপোর্ট নথিতে নেই, তাই সার্বিক বিবেচনায় এই জামিন দেয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
নিহতের পরিবার বিচারকের উপর হামলার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, টাকার বিনিময়ে বিচারক অন্যায়ভাবে আসামিদের জামিন দিয়েছেন। এ ঘটনায় ক্ষোভে মিনারা আদালত প্রাঙ্গণে চিৎকারসহ আর্তনাদ করলে তাকে আটক করে কোর্ট পুলিশ। নিহতের পরিবার এ ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন। এদিকে ঘটনার পর আদালত চত্বর এলাকা উত্তেজনা পরিস্থিতি বিরাজ করলে প্রায় একঘণ্টা আমলী আদালত-১ এর বিচারিক কার্যক্রম বন্ধ থাকে।
এ বিষয়ে জেলা আইনজীবি সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আব্দুল বারি বলেন, আদালত চলাকালীন একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার খবর শুনেছি। এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে এ বিষয়ে কোন অভিযোগ করা হয়নি। তাই সমিতির পক্ষ থেকে কোনো সিদ্ধান্তও নেয়া হয়নি।