muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

খেলার খবর

ইতিহাস গড়া হলো না, হেরে সিরিজ শেষ বাংলাদেশের

ইতিহাস গড়া হলো না, হেরে সিরিজ শেষ বাংলাদেশের

নেপিয়ারে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে সিরিজ জয়ের জোর সম্ভাবনা তৈরি করেছিল বাংলাদেশ। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচটি বৃষ্টিতে পণ্ড হওয়ায় বাংলাদেশের চোখ ছিল সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে। যদিও সিরিজ নির্ধারণীতে রূপ নেয়া এই ম্যাচে বাংলাদেশকে বৃষ্টি আইনে ১৭ রানে হারিয়ে সমতায় সিরিজ শেষ করেছে কিউইরা। এর ফলে ১-১ সমতায় সিরিজ শেষ করেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে টাইগারদের। এই ম্যাচে আগে ব্যাট করে মাত্র ১১০ রানেই অল আউট হয়ে গিয়েছিল নাজমুল হোসেন শান্তর দল। এরপর ৪৯ রানের মধ্যে নিউজিল্যান্ডের ৫ উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচ জমিয়ে দিয়েছিল টাইগার বোলাররা। তবে বাংলাদেশের হাতের মুঠো থেকে ম্যাচ বের করে নিয়েছেন মিচেল স্যান্টনার ও জিমি নিশাম।

বাংলাদেশের দেয়া ছোটো লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই বিপাকে পড়ে নিউজিল্যান্ড। শেখ মেহেদীর বলে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে বেসামাল হয়ে ক্রিজের বাইরে চলে গিয়েছিলেন টিম সেইফার্ট। সেই সুযোগে স্টাম্পিং করে তাকে ফিরিয়েছেন রনি তালুকদার। পরের ওভারে আক্রমণে এসে আবারও সফল হয়েছেন মেহেদী। এই টাইগার স্পিনারের ফুল লেংথের বল তুলে মারতে গিয়ে মিড অফে ধরা পড়েছেন ড্যারিল মিচেল।

এর খানিক পরে গ্ল্যান ফিলিপসকে বোল্ড করে আউট করেন শরিফুল ইসলাম। এই পেসারের সিমে পড়ে একটু ভেতরে ঢোকা বলের লাইন মিস করে বোল্ড হন ১ রান করা ফিলিপস। ৩ উইকেট হারিয়ে ৩৫ রান করে পাওয়ার প্লে শেষ করে কিউইরা। শুরু থেকেই একপ্রান্ত আগলে রেখে খেলেছেন ফিন অ্যালেন। তাকে সাজঘরে ফিরিয়েছেন শরিফুল। এই পেসারের লেংথ বলে লাইন মিস করে বোল্ড ৩১ বলে ২৮ রান করা অ্যালেন।

এরপর মার্ক চ্যাপম্যান হয়েছেন রান আউট। মুস্তাফিজুর রহমানের বল কাভারে ঠেলে দিয়ে দুই রানের জন্য দৌড়েছিলেন অ্যালেন। দ্বিতীয় রান নেয়ার মাঝ পথেই ক্রিজের মধ্যে অ্যালেনের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় চ্যাপম্যানের। ততক্ষণে কাভার থেকে বল চলে আসে মুস্তাফিজের হাতে। তিনিও স্টাম্প ভেঙ্গে দেন। রান আউট হয়ে ফিরতে হয়ে চ্যাপম্যানকে। ৪৯ রানে ৫ উইকেট হারানো নিউজিল্যান্ডের ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিতে বেশি সময় লাগেনি।

স্যান্টনার ও জিমি নিশাম মিলে কিউইদের ম্যাচে ফিরিয়েছেন। ১৫তম ওভারের মাঝ পথে মাউন্ট মঙ্গানুইতে আঘাত হানে বৃষ্টি। ত্রীব্র বৃষ্টির কারণে ম্যাচ আর মাঠে গড়ানো সম্ভব হয়নি। নিশাম ২০ বলে ২৮ ও স্যান্টনার ২০ বলে ১৮ রান করে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন।

এর আগে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ভালো শুরু পায়নি বাংলাদেশ। টিম সাউদির করা প্রথম দুই বলে রান নিতে পারেননি সৌম্য। তৃতীয় বলে এক্সট্রা কাভার দিয়ে চার মেরে রানের খাতা খোলেন এই ওপেনার। যদিও পরের বলেই গুড লেন্থের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরতে হয় সৌম্যকে।

এরপর উইকেটে এসে টিম সাউদিকে স্ট্রেইট ড্রাইভ করে চার মেরে রানের খাতা খোলেন। পরের ওভারে অ্যাডাম মিলনেকে টানা দুই বলে দুই চার মারেন শান্ত। প্রথমটি মিড উইকেট দিয়ে আর পরেরটি অফ স্টাম্পের বাইরে জায়গা করে নিয়ে ডিপ এক্সট্রা কাভারের ওপর দিয়ে।

মিলনের দ্বিতীয় ওভারে কাভারের ওপর দিয়ে মারতে গিয়ে ফিন অ্যালেনের ক্যাচ হয়েছেন ১৭ রান করা শান্ত। এরপর ফিরে গেছেন রনি তালুকদারও। তিনি বেন সিয়ার্সের বলে ১০ বলে ১০ রান করে আউট হয়েছেন। যদিও বল ট্র্যাকিংয়ে দেখা গেছে, রিভিউ নিলে বেঁচে যেতেন রনি। বল মিস করে যেত লেগ স্টাম্প।

মিচেল স্যান্টনারের করা আগের বলেই শর্ট ফাইন লেগ দিয়ে চার মেরেছিলেন আফিফ হোসেন। ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন। তবে পরের বলেই এগিয়ে এসে খেলতে গিয়ে এজ হয়ে টিম সেইফার্টকে ক্যাচ দিয়েছেন এই ব্যাটার। ফলে চতুর্থ উইকেট হারায় টাইগাররা।

স্যান্টনারের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে ড্যাব করতে চেয়েছিলেন হৃদয়। কিউই ফিল্ডারদের জোরালো আবেদনে আম্পায়ার অবশ্য কট বিহাইন্ড দেননি। তাতে করে অবাক হয়েছিলেন কমেন্টেটররাও। তবে স্যান্টনার নেন রিভিউ। দেখা যায় বল হৃদয়ের ব্যাটে লেগেছে। ক্যাচটাও ঠিকঠাক নিয়েছেন স্যান্টনার। ফলে ১৬ রান নিয়ে ফিরে যেতে হয় থিতু হওয়া এই ব্যাটারকে।

টিকতে পারেননি বাংলাদেশের শেষ স্বীকৃত ব্যাটার শেখ মেহেদীও। তিনি ৪ রান করে স্যান্টনারের বলে আউট সাইড এজ হয়ে ক্যাচ দিয়েছেন সেইফার্টের হাতে। একপ্রান্ত আগলে রাখা শামীম পাটোয়ারি ফিরেছেন স্যান্টনারকে ফাইন লেগ দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে টিম সাউদিকে ক্যাচ দিয়ে মাত্র ৯ রানে। আর তাতেই ৬ বলের মধ্যে ৩ উইকেট নেয়ার স্বাদ পান স্যান্টনার।

সিয়ার্সের ওপর চড়াও হতে গিয়ে উইকেট বিলিয়ে দিয়েছেন শরিফুল ইসলাম। কাভারে তিনি ক্যাচ দিয়েছেন জিমি নিশামকে। টিম সাউদির স্লোয়ার বলে লেগ সাইডে খেলতে গিয়ে টপ এজ হয়ে তানভির ইসলাম ক্যাচ দিয়েছেন ইশ সোধিকে। রিশাদ হোসেনকে বোল্ড করে বাংলাদেশের ইনিংস গুটিয়ে দিয়েছেন মিলনে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর-

বাংলাদেশ- ১১০/১০ (১৯.২ ওভার) (রনি ১০, শান্ত ১৭, আফিফ ১৪, হৃদয় ১৬; স্যান্টনার ৪/১৬, মিলনে ২/২৩)

নিউজিল্যান্ড- ৯৫/৫ (১৪.৪ ওভার) (অ্যালেন ৩৮, নিশাম ২৮*, স্যান্টনার ১৮*; মেহেদী ২/১৮, শরিফুল ২/১৭)

Tags: