muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

জাতীয়

দ্বাদশ সংসদে সর্বকনিষ্ঠ এমপি আজিজ

দ্বাদশ সংসদে সর্বকনিষ্ঠ এমপি আজিজ

প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল জলিলের ছেলে নিজাম উদ্দিন জলিলের পর দেশের সর্বকনিষ্ঠ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনে ঈগল প্রতীকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য আজিজুল ইসলাম খন্দকার আজিজ। সার্টিফিকেট অনুযায়ী বর্তমানে তার বয়স মাত্র ২৮ বছর। দ্বাদশ সংসদে তিনিই সর্বকনিষ্ঠ।

গত ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে দুই হেভিওয়েট প্রার্থীকে হারিয়েছেন আজিজুল ইসলাম। তাদের একজন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার। অন্যজন, স্বতন্ত্র প্রার্থী ও দু’বারের উপজেলা চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এইচ এম আমির হোসেন।

স্থানীয়রা জানান, ছোট থেকেই এলাকার মানুষের বিপদে আপদে পাশে থাকতেন খন্দকার আজিজ। মানুষকে ভালোবেসে ছাত্রনেতা থেকে আজ সংসদ সদস্য হয়েছেন তিনি। সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য আজিজুল প্রার্থীদের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ হওয়াসহ নানা কারণে শুরুতে সেভাবে আলোচনায় ছিলেন না। কিন্তু সময়ে সাথে সাথে তিনি গণমানুষের নেতা হয়ে উঠেছেন। তার মধ্যে কেশবপুরবাসী নিজেদের উত্তম ভবিষৎ দেখতে পেয়েছে বলেই তাকে নির্বাচিত করেছেন।

রোববার (৭ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খন্দকার আজিজ ঈগল প্রতীকে ৪৮ হাজার ৯৪৭ ভোট পেয়েছিলেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শাহীন চাকলাদার পান ৩৯ হাজার ২৬৯টি ভোট। অপর প্রতিদ্বন্দ্বী এইচএম আমির হোসেন পেয়েছেন ১৭ হাজার ২০৯ ভোট। সে হিসেবে ৯ হাজার ৫৭৫ ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হন আজিজ।

জানা গেছে, ১৯৯৫ সালের ১৫ এপ্রিল যশোরের কেশবপুর উপজেলার ব্রহ্মকাটি গ্রামে খন্দকার রফিকুজ্জামান ও ফরিদা বেগমের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন আজিজ। নয় ভাই-বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট। মাত্র ২৭ বছর বয়সে জেলা পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আজিজুল ইসলাম। তার লেখাপড়ার হাতে খড়ি ব্রহ্মকাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এরপর বুড়ীহাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ২০১০ সালে এসএসসি ও কেশবপুর ডিগ্রি কলেজে থেকে ২০১২ সালে এইচএসসি পাস করেন। পরে পাঁজিয়া কলেজ থেকে ২০১৫ সালে ডিগ্রি পাশ করেন তিনি।

উপজেলার হদ গ্রামের বাসিন্দা ও সৌদি প্রবাসী হারুন অর রশিদ নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য আজিজ প্রসঙ্গে বলেন, আমরা সাবেক শিক্ষামন্ত্রী এ এস এইচ কে সাদেক সাহেবের মৃত্যুর পর ভালো নেতা পাইনি। শাহীন চাকলাদার যশোরে থাকেন। তিনি কেশবপুরের মানুষের নেতা হয়ে উঠতে পারেননি। দলমত নির্বিশেষে সব শ্রেণির জনগণ আজিজকে ভোট দিয়েছেন। এ ছাড়া আজিজ সবার মন জয় করে নিয়েছেন। যদি মানুষের পাশে দাঁড়ান তিনি বড় নেতা হতে পারবেন।

‘আপনার স্বপ্ন কি?’ জানতে চাইলে আজিজ বলেন, আমার স্বপ্ন আজীবন মানুষের কল্যাণে কাজ করা এবং নিজেকে মানব সেবায় নিয়োজিত রাখা।

‘সর্বকনিষ্ঠ এমপি হওয়ায় আপনার অনুভূতি কী? জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিজেকে ধন্য মনে করছি। এটা খুবই আনন্দের। জয়ের ব্যাপারে আমার শতভাগ বিশ্বাস ছিল। তবে ফলাফল ঘোষণার পরে বুঝতে পারছি মানুষ আমাকে কত বড় সম্মান দিলেন। আমি সারাজীবন কেশবপুরবাসীর কাছে কৃতজ্ঞ থাকব। তাদের পাশে থাকতে চাই। বিশেষ করে কৃষক, ভ্যানচালক থেকে শুরু করে ভেটে খাওয়া মানুষের কাছে আমি ঋণী। তাদের প্রতি সীমাহীন কৃতজ্ঞা। আমি যত বড়ই হই না কেন তাদের যেন ভুলে না যাই সে জন্য দোয়া করবেন।

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, নির্বাচনী এলাকার ভোটার, নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত সব কর্মকর্তাদের ও গণমাধ্যমের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন খন্দকার আজিজ। সবশেষে কেশবপুরবাসী যে তার ওপর আস্থা রেখেছেন সে জন্য আরেকবার ধন্যবাদ জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজাম উদ্দিন জলিল মাত্র ২৭ বছর বয়সে দেশের সর্বকনিষ্ঠ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। আর তারই পরে সদ্য অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সারাদেশে বিজয়ী সংসদ সদস্যদের মধ্যে খন্দকার আজিজই হলেন সর্বকনিষ্ঠ সংসদ সদস্য।

Tags: