লাল সবুজের পতাকা খচিত ব্যানারে অসহায় গাজাবাসীর জন্য ত্রান সহায়তা পৌঁছে দিচ্ছে মিশরে অধ্যায়নরত একদল বাংলাদেশি শিক্ষার্থী।
বাংলাদেশ ভিত্তিক বিশ্বের বিভিন্ন দেশের "বাঙ্গালী চ্যারিটিজ"ফাউন্ডেশনের সাথে তাদের লোগো সম্বলিত ব্যানার লাগিয়ে গাযার জনগণের কাছে বাঙ্গালী মুসলিমদের প্রেরিত সহায়তা পৌঁছে দিতে অত্যন্ত বিচক্ষণতার সাথে নিরলস ভাবে কাজ করছে বিশ্ব বিখ্যাত আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত একদল বাংলাদেশী শিক্ষার্থী।
ইতিমধ্যে তাদের সম্মিলিত উদ্যোগে বাংলার লাল-সবুজ পতাকা খচিত ব্যানারে "তিন মিলিয়ন ইজিপ্টশিয়ান পাউন্ড" এর সমমূল্যের খাদ্যদ্রব্য , পানীয়, শীতবস্ত্র, জরুরী ঔষধ সামগ্রী ও কাফনের কাপড় সহ প্রয়োজনীয় বিভিন্ন আসবাবপত্র গাজায় পাঠাতে সক্ষম হয়েছে তারা।
মিশরের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা ও গ্র্যান্ড ইমাম, শাইখুল আজহার, ড.আহমদ আততয়্যিব( হাফি) এর সরাসরি তত্ত্বাবধানে পরিচালিত, আল-আজহারের গাজা বিষয়ক সর্বাধিক বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোজ্ঞ চ্যারিটিজ ফান্ড "বাইতুয যাকাত এন্ড চারিটিজ ফাউন্ডেশন"এর মাধ্যমে এই সহায়তা পাঠাতে সক্ষম হয়েছে বলে জানান বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা।
কায়রোস্থ আজহার ভিত্তিক চ্যারিটিজ ফাউন্ডেশনের" সাথে বিশ্বের ১২০টি দেশের কয়েক শত চ্যারিটিজ ফান্ড সংস্থা সমঝোতা স্বাক্ষর সম্পাদিত করে তাদের দেশভিত্তিক লোগো সম্বলিত ব্যানারে গাজায় পৌঁছে দিচ্ছে এসব ত্রান সামগ্রী।
আজহার চ্যারিটিজ ফাউন্ডেশনে বাংলাদেশের প্রতিনিধি আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হুজাইফা খান বিভিন্ন চ্যারিটিজ সংস্থার পক্ষ থেকে এসব সমঝোতা স্বাক্ষর সম্পাদিত করে বাংলাদেশ ভিত্তিক বিভিন্ন চেরিটিজ ফাউন্ডেশন এর অনুদান সহ আজহারের মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়ার কাজ করে যাচ্ছে।
সেই সাথে অনুদান দাতাদের হাতে পৌঁছে দিচ্ছেন আজহারের পক্ষ থেকে অনুদান দাতাদের নাম সম্বলিত রিসিট, প্রশংসাপত্র ও সনদ সহ উৎসাহ ব্যঞ্জক নানা উপহার ও পুরস্কার।
আজহারের চ্যারিটিজ ফাউন্ডেশনের বাংলাদেশের প্রতিনিধি হুজাইফা খান এই প্রতিনিধিকে জানান, গাজার মানুষ আজ ভয়াবহ খাদ্য সংকটে ভুগছে। ক্ষুধার জ্বালায় গাযার মানুষ পশু-পাখির খাবার খাচ্ছে। সোনার টুকরো সন্তান হারিয়ে পাগল পারা মায়ের মাতম কাঁপিয়ে তুলছে আল্লাহর আরশ। শিশুদের আত্মচিৎকারে আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠছে। অনাহারে মারা যাচ্ছে শত শত শিশু। অপ্রতুল চিকিৎসা ব্যবস্থার কারণে ধুকে ধুকে মরছে হাজারো নারী শিশু। অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে, আমরা ২০০ কোটি মুসলমান আজ শুধু চেয়ে চেয়ে দেখছি। এসব দেখে অব্যক্ত যন্ত্রণায় হৃদয়টা চৌচির হয়ে যায়।
হুজাইফা খান আরও বলেন, গাজার সঙ্গে একমাত্র সীমান্ত "রাফা ক্রোসিং এর মাধ্যমেই সহযোগিতা পাঠানো যায়। তাই নিপীড়িত ও নির্যাতিত মাজলুম ফিলিস্তিনি জনগণের কাছে বাংলাদেশ ভিত্তিক বিভিন্ন দেশের চ্যারিটিজ ফাউন্ডেশনের অনুদান আজহারের নিজস্ব ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে গাযায় পৌঁছে দিতে আজহারের বাঙালি প্রতিনিধি হিসেবে নির্লস ভাবে কাজ করে যাচ্ছি আমি সহ বেশ কজন শিক্ষার্থী।
বাংলাদেশ ছাড়াও আমরা সহয়তা করছি আজহারের নিজস্ব অর্থায়নে পরিচালিত আন্তর্জাতিক এনজিও সহ ভারত ও বৃটেন ভিত্তিক বেশ কয়েকটি চেরিটিজ ফাউন্ডেশনের সাথে।
বিভিন্ন দেশের লোগো সম্বলিত ব্যানারে সহযোগিতা পাঠাতে আল-আজহারের যাকাত এন্ড চ্যারিটিজ ফাউন্ডেশন প্রতিটি দেশের লোগোর সাথে নিজেদের লোগো সম্বলিত স্টিকার যুক্ত করার পর ট্রাকগুলো গাযার উদ্দেশ্যে পাঠিয়ে দেই আমরা।
ত্রানসামগ্রী পাঠানোর আগে প্রথমত কায়রোতে ইন্সপেকশন করে সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স নিতে হয়। এরপর রাফা ক্রসিং এ রেড ক্রিসেন্টের মাধ্যমে গাজায় "ইউ এন আর ডব্লিউর" এর বিতরণ পয়েন্ট গুলোতে পৌঁছে। অতঃপর সীমান্তে ইসরাইলি সেনাবাহিনী ত্রাণগুলো পর্যবেক্ষণ করে অনুমতি দিলেই সহায়তা গুলো গাজায় প্রবেশ করানো সম্ভবপর হয়।
তরুন এই বাংলাদেশি শিক্ষার্থী আরো বলেন, বরাবরের মতো এবারও আমরা লাল সবুজের পতাকা খচিত ব্যানারে বাংলাদেশের সহায়তা গাযায় পৌঁছে দিতে নির্লস ভাবে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা আছি প্রথম কেবলার স্বাধীনতাকামী নিপীড়িত গাজা বাসীর পাশে। আপনিও আপনার অনুদান দিয়ে মানবতার কল্যাণে রাখতে পারেন অসামান্য অবদান।