ঘরের মাঠে ওয়ানডে বিশ্বকাপে ভারতকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। জুনিয়রদের সামনে সুযোগ ছিল সিনিয়রদের সেই হারের প্রতিশোধ নেয়ার। তবে তা করতে পারলেন না আর্শিন কুলকার্নি-উদয় সাহরানরা। এবারও অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারতকে ৭৯ রানে হারিয়ে আরও একটি বড় শিরোপা ঘরে তুলে নিল অজিরা।
গেল বছরের নভেম্বরে নিজেদের মাঠে ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে এই অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরেই শিরোপা হাতছাড়া করেছিল ভারত। অথচ অপরাজিত থেকেই ফাইনালে উঠেছিল তারা। এবারও সেই ঘটনারই পুনরাবৃত্তি ঘটালো ভারতীয় যুবারা। তারাও অপরাজিত থেকেই উঠেছে ফাইনালে। আর সেই ফাইনালে এসেই সব স্বপ্ন হলো ভেঙে চুরমার। যেখানে নিজেদের জাতীয় দলকে হারানোর প্রতিশোধ নেয়ার সুযোগ ছিল তরুণদের সামনে, সেখানে বিশাল ব্যবধানে হারের কষ্ট কতটুকু গভীর সেটা একমাত্র ভারতীয়রাই অনুভব করতে পারবেন।
রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) দক্ষিণ আফ্রিকার বেনোনিতে ম্যাচে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৭ উইকেটে ২৫৩ রান তোলে অস্ট্রেলিয়া। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ভারতীয়রা অলআউট হয়ে গেছে ১৭৪ রানে। ফলে অসিরা জয় পেয়েছে ৭৯ রানের। এ নিয়ে মোট ৪ বার অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের শিরোপা জিতলো হলুদজার্সিধারীরা।
অস্ট্রেলিয়ার চ্যালেঞ্জিং রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে এদিন বড় কোনো জুটি করতে পারেনি ভারত। ছোট ছোট জুটি করে ৭৭ বলে ৪৭ রানের ইনিংস খেলেছেন ওপেনার আদর্শ সিং। দলীয় ও ব্যক্তিগত ৩ রানে আরেক ওপেনার আর্শিন কুলকারনি আউট হয়ে গেলে মুশের খানের সঙ্গে ৬১ বলে ৩৭ রানের জুটি করেন সিং।
৩৩ বলে ২২ রান করে মুশের খান আউট হয়ে গেলে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েছে ভারত। নবম উইকেটে নামান তিওয়ারিকে অপরপ্রান্তে দাঁড় করিয়ে ৫২ বলে ৪৬ রানের জুটি করে হারের ব্যবধান কমান অ্যারাভেলি অ্যাভানিশ। এটিই এই ম্যাচে ভারতের সর্বোচ্চ জুটি। ৪৬ বলে ৪২ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে আউট হন অ্যাভিনিশ।
এর আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের শুরুর দিকে উইকেট হারালেও এরপর সতর্ক হয়েই খেলে অসিরা। ব্যাটিংয়ে নেমে ৮ বল খেলে কোনো রান না করেই আউট হয়ে যান ওপেনার স্যাম কন্টাস।
দলীয় ১৬ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারানোর পর আউট হয়ে গেলে অধিনায়ক হাগ ওয়েবগেনের সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটে জুটি করে দলকে বড় সংগ্রহ এনে দেওয়ার পথে হাঁটেন আরেক ওপেনার হ্যারি ডিক্সন।
২১তম ওভারে নামান তিওয়ারির আউটসাইডে দেওয়া লোভনীয় বলে ড্রাইভ করতে যান ওযেবগেন। ব্যাটের কানায় বল স্পর্শ করে পয়েন্ট অঞ্চলে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। দারুণ সুযোগ পেয়ে তা লুপে নিতে ভুল করেননি ফিল্ডার মুশের খান। ফলে ৭৮ রানের দুর্দান্ত জুটি ভেঙে যায়। হাফসেঞ্চুরি করতে না পারার আক্ষেপ নিয়ে ফিরতে হলো অসি অধিনায়ককে। ৬৬ বলে ৪৮ রান করেন ওয়েবগেন।
৫৬ বলে ৪২ রান করে আউট হয়ে যান ডিক্সনও। এরপর হার্জাস সিংয়ের সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে ৬৬ রানের দারুণ জুটি করেন উইকেটরক্ষক ব্যাটার রায়ান হিক্স। হার্জাস হাঁকান দুর্দান্ত ফিফটি। ৩ চার ৩ ছক্কার মারে ৬৫ বলে ৫৫ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। ২৫ বলে ২০ রান করেন হিক্স।
ভারতের হয়ে ৩৮ রানে ৩ উইকেট শিকার করেছেন রাজ লিমবানি। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৩টি করে উইকেট শিকার করেন মাহলি বেয়ার্ডম্যান ও রাফ ম্যাকমিলান। ২ উইকেট তুলে নেন কালাম ভিডলার।