muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

দেশের খবর

প্রেমের টানে ভারত থেকে নদী সাঁতরে বাংলাদেশে, এখন সুখের সংসার সঞ্জনা-লাভলুর

প্রেমের টানে ভারত থেকে নদী সাঁতরে বাংলাদেশে, এখন সুখের সংসার সঞ্জনা-লাভলুর

ভারতের নদীয়া জেলার চরমেঘনা এলাকার মেয়ে সঞ্জনা (২৩) ও বাংলাদেশের কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার জামালপুর সীমান্ত এলাকার ছেলে লাভলু হোসেন (২৫)। ২০১৯ সালে দুই দেশের সীমানা লাগোয়া পদ্মার শাখা (মাথাভাঙা) নদীতে গোসল করতে গিয়ে পরিচয় হয় তাদের। তারপর গড়ে ওঠে প্রেম। তিন মাসের প্রেম নানা বাধা পেরিয়ে শুভ পরিণয়ে রূপ নেয়। দুই সন্তান নিয়ে এখন তাদের সুখের সংসার।

এলাকাবাসী ও লাভলুর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, হিন্দু পরিবারের মেয়ে সঞ্জনার বাবা প্রথমে এই সম্পর্ক কোনোভাবেই মেনে নিতে রাজি হননি। একপর্যায়ে ভালোবাসার টানে সঞ্জনা নদী সাঁতরে এই দেশে চলে এসে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার পর তাদের বিয়ে হয়।

লাভলু জানান, ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর সঞ্জনার নাম রাখা হয় ফাতেমা খাতুন। আমাদের বিয়ে হলেও সঞ্জনার পরিবার প্রথমে তা মেনে নেয়নি। পরে মেনে নিলেও পাসপোর্ট না থাকায় সঞ্জনা তার বাবার বাড়ি যেতে পারে না। তবে তার নাগরিকত্ব জটিলতা প্রায় কেটে গেছে। আশা করি, কিছুদিনের মধ্যেই তার পাসপোর্ট করা সম্ভব হবে।’

এ বিষয়ে সঞ্জনা বলেন, ‘পাঁচ বছর আগে নদীর ঘাটে গোসল করতে গিয়ে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয় আমাদের। তখন দশম শ্রেণিতে পড়ি। একদিন স্কুল ফাঁকি দিয়ে বন্যার সময় ভরা নদী সাঁতরে চলে আসি লাভলুর বাড়িতে। পরে আইনি সব জটিলতা সামলে বিয়ে হয় আমাদের। সংসারে জন্ম নেয়া ছেলে-মেয়ে নিয়ে আমরা অনেক সুখে আছি।’

লাভলুর বাবা ইদ্রিস আলি বলেন, ‘সব বাধা পেরিয়ে ছেলের ভালোবাসাকে প্রাধান্য দিয়েছি। আমি সঞ্জনাকে নিজের মেয়ের মতো করেই দেখি। ভালোভাবে তারা সংসার করছে। তারা ভালো আছে।’

স্থানীয় প্রাগপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আশরাফুজ্জামান মুকুল বলেন, ‘শুরুতে আইনি জটিলতা ছিল। পরে তা ঠিক হয়েছে। তারা এখন সুখে সংসার করছে। আমরাও সামাজিকভাবে তাদের মর্যাদা দিয়েছি। তাদের বিপদ আপদে আমরা সব সময় পাশে আছি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে দৌলতপুর কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষক ও উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক সরকার আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রেম এমন এক জিনিস যা পরিবার, ধর্ম, কাঁটাতারের বেড়া কোনো বাধাই মানে না। তাদের ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে। শত বাধা উপেক্ষা করে তাঁদের প্রেম বিয়েতে রূপ নিয়েছে। জয় হোক সব ভালোবাসার।’

Tags: