নির্বাচিত হলে ‘আখের মতো চিবিয়ে টাকা আদায় করা হবে’ বলে মন্তব্য করে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) শোকজ পেলেন বরগুনার আমতলী পৌরসভার মেয়র প্রার্থী নাজমুল আহসান নান্নু। সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) তাকে চিঠি দেওয়া হয়। একই সঙ্গে উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ধীরাজ কুমার বিশ্বাসের ওপর হামলার বিষয়ে জানতে চেয়ে আমতলী থানার ওসি শাখাওয়াত হোসেন তপুকেও চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
আমতলী পৌরসভা নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবদুল হাই আল হাদি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মেয়র প্রার্থী নাজমুল আহসান নান্নুর বিরুদ্ধে অপর মেয়র প্রার্থী মতিয়ার রহমান একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। একই সঙ্গে ওই বক্তব্যের ভিডিও আমাদের কাছে এসেছে।
তিনি বলেন, মেয়র প্রার্থী নাজমুল আহসান নান্নুর বক্তব্য পৌরসভা নির্বাচন আচরণ বিধিমালা ২০১৫ এর ৫ ও ১৮ ধারা লঙ্ঘন। যে কারণে আগামী দুই দিনের মধ্যে লিখিত জবাব চেয়ে তাকে (নান্নুকে) চিঠি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মেয়র প্রার্থী নাজমুল আহসান নান্নু ও তার সমর্থকদের বিরুদ্ধে আমতলী উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ধীরাজ কুমারকে মারধরের অভিযোগে আমতলী থানায় মামলা হয়েছে। বিষয়টি জানতে চেয়ে ওসিকে আমরা চিঠি দিয়েছি।
চিঠিতে বলা হয়েছে, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে নির্বাচনী কার্যালয়ে নেতা-কর্মী ও সমর্থকের এক সভায় প্রতিদ্বন্দ্বী মেয়র প্রার্থী নাজমুল আহসান নান্নু বলেন, ‘আমি নির্বাচিত হলে যেসব ভোটার আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের প্রতিবাদ ও আমার পক্ষে কাজ করবেন তাহাদের ট্রেড লাইসেন্স, বাড়ির প্ল্যান, ওয়ারিশ সার্টিফিকেটসহ সব কাজ চোখের পলকে করে দেব। আর যারা ওইসব প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের প্রশংসা করবেন তাহাদের আখের মেশিনে যেভাবে রস বের করে–সেইভাবে নিংড়িয়ে নিংড়িয়ে টাকা আদায় করা হবে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মেয়র পদপ্রার্থী নাজমুল আহসান নান্নু মোবাইল ফোনে বলেন, আমি শোকজ পেয়েছি। যথাসময়ে লিখিত জবাব দেওয়া হবে। অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।
অপর দিকে বর্তমান মেয়র মতিয়ার রহমান বলেন, ‘তপশিল ঘোষণার পরপরই মেয়র প্রার্থী নাজমুল আহসান নান্নুর সমর্থকেরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তারা আমার একাধিক কর্মী–সমর্থককে মারধর করেছে। এসব ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আমি রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশ যাতে বজায় থাকে আমার সেটাই প্রত্যাশা।’
আমতলী পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে ১০ জন, সাধারণ ওয়ার্ড ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে মোট ৪৬ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২২ ফেব্রুয়ারি। আর প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে ২৩ ফেব্রুয়ারি। ইভিএমে ভোটগ্রহণ হবে ৯ মার্চ।