মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠ ডেস্কঃ
বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে যেখানেই সন্ত্রাসী হামলা হয়, তার কিছুক্ষণ পরেই সেই হামলার দায় স্বীকার করে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)। আর এ খবর জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েবসাইট সাইট ইনটেলিজেন্স থেকে।
এর আগেও দেশে লেখক-প্রকাশক, ব্লগারসহ বিভিন্ন ধর্মীয় গুরু ও বিদেশি হত্যার পর দায় স্বীকার করেছিল আইএস। এর ‘লিংক’ খুঁজছে বাংলাদেশ পুলিশ।
পুলিশ মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক বলেছেন, ‘সেই লিংক আপের বিষয়টি আমরা এখনও শনাক্ত করতে পারিনি। তবে বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। কারা এই দায় স্বীকার করে থাকে।’
গুলশানে জঙ্গি হামলার এক সপ্তাহ না কাটতেই বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) ফের বোমা বিস্ফোরণ ও গুলির শব্দে কেঁপে ওঠে কিশোরগঞ্জ। উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ ঈদ জামাতের মাঠের কাছে শোলাকিয়ায় এ হামলা চালায় জঙ্গিরা।
গুলশানে হামলার দায় আইএস স্বীকার করলেও শোলাকিয়ায় হামলার দায় এখনও কোনো জঙ্গি সংগঠন স্বীকার করেনি।
শনিবার (৯ জুলাই) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠের সন্ত্রাসী হামলার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক।
পরে তিনি পুলিশের সঙ্গে জঙ্গিদের গোলাগুলি চলাকালে ঘরের ভেতর নিহত ঝর্না রানি ভৌমিকের পরিবারের সদস্যদের কাছে যান। দুঃখ প্রকাশ করে তাদের সান্ত্বনা দেন পুলিশ প্রধান।
এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঢাকার গুলশানে যারা হামলা করেছে, তারাই শোলাকিয়ায় হামলা চালিয়েছে। তাদের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল ঈদগাহ মাঠের মুসল্লিদের উপর হামলা করা এবং তাদের হত্যা করা।’
তিনি বলেন, ‘ঈদের জামাতে যারা বোমা মেরে মানুষকে হত্যা করে তারা ইসলামের শত্রু, মানবতার শত্রু। এরা জেএমজির সদস্য এবং তালিকাভুক্ত জঙ্গি।’
শোলাকিয়ায় পুলিশের গুলিতে আহত আটক হামলাকারী শফিউল ইসলাম জিজ্ঞাসাবাদে ওইসব তথ্য পুলিশকে জানিয়েছে।
আইএস প্রসঙ্গে পুলিশ প্রধান আরও বলেন, ‘গুলশান ও শোলাকিয়ায় হামলাকারীরা একই গোষ্ঠীর। তারা জেএমবির সদস্য। তারা কেউ আইএসের নয়।’
শোলাকিয়ার হামলায় পুলিশের কোনো ব্যর্থতা নেই উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, ‘পুলিশ আহত হয়েও পুরো দুই ঘণ্টা গোলাগুলি করে, হামলাকারীদের প্রতিহত করে। এক্ষেত্রে পুলিশ সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে।’
শোলাকিয়ায় জঙ্গিদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গোলাগুলিতে দুই পুলিশ সদস্য, হামলাকারী জঙ্গি ও এক নারী নিহত হন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য। এদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
শোলাকিয়া মাঠের আড়াইশ মিটারের মধ্যে আজিমুদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের ফটকের কাছে নিরাপত্তার দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের ওপর এই হামলার ঘটনা ঘটে। ঈদের সকালে বিস্ফোরণ ও গোলাগুলির ঘটনায় শোলাকিয়া মাঠের জামাতে অংশ নিতে জড়ো হওয়া লাখো মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়।
১ জুলাই গুলশানে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার ঘটনায় বহু হতাহতের পর এবার প্রধান সব ঈদ জামাতেই বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। এর ভেতরেই দেশের বৃহত্তম ঈদ জামাতে ফের হামলা চালায় জঙ্গিরা।