রাজধানীর বেইলি রোডের একটি ভবনে ভয়াবহ আগুনের ঘটনায় দ্বগ্ধদের কেউ শঙ্কামুক্ত নন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। শুক্রবার রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পরিদর্শন শেষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, এখন পর্যন্ত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মোট ৪৬ জন নিহতের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে। বাকি যে কয়জন হাসপাতালের চিকিৎসাধীন রয়েছেন, তারা কেউ শঙ্কামুক্ত নন। ‘আমরা সর্বোচ্চ চিকিৎসা দিয়ে তাদের জন্য চেষ্টা করছি। আমি এখন আবার চিকিৎসকদের নিয়ে বসব। একটি পরিকল্পনা করব কীভাবে কী করা যায়’ বলেও জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
এর আগে, স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ ঘটনায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আহতদের দেখতে যান। সেখানে তিনি আহতদের চিকিৎসার খোঁজ খবর নেন এবং সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
হাসপাতালগুলোর তথ্য অনুযায়ী, বেইলি রোডে আগুনের ঘটনায় দগ্ধ হয়ে ১০ জন শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে এবং দুইজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে গ্রিন কজি কটেজ নামের সাততলা ওই ভবনের দ্বিতীয় তলায় কাচ্চিভাই রেস্টুরেন্টে আগুনের সূত্রপাত। আগুন লাগার কিছু সময় পরই একটি গ্যাস সিলেন্ডার বিস্ফোরিত হওয়ায় আগুন ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। ২ ঘণ্টার চেষ্টা চালিয়ে সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, রাত পৌনে ১০টার দিকে বেইলি রোডে অবস্থিত কাচ্চিভাই রেস্টুরেন্টের নিচতলায় আগুন লাগে। গ্যাস সিলিন্ডারের লিকেজজনিত ত্রুটির কারণে আগুন লেগে থাকতে পারে বলে রেস্টুরেন্টে কর্মরত কর্মচারীদের মাধ্যমে তথ্য পায় তারা। রাত ৯টা ৫৬ মিনিটের দিকে সর্বপ্রথম ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে। পরে একে একে যোগ দেয় আরও ১২টি ইউনিট। কিন্তু এর আগেই ভবনজুড়ে আগুনের ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে। তখন জীবন বাঁচাতে সবাই দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করতে থাকেন। ভবনে আটকে থাকা লোকজনদের অনেকে ছাদে আশ্রয় নেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দ্বিতীয় তলায় আগুন লাগার পর তা ওপরের তলাগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। আতঙ্কিত লোকজন ওপরের দিকে উঠে যায়। এ সময় ভবন থেকে তাড়াহুড়ো করে নামতে গিয়ে কয়েকজন আহত হন। তাদের মধ্যে ১২ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অগ্নিকাণ্ডে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৪৪ জন নিহত হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। এর আগে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন ৪৩ জনের নিহতের তথ্য নিশ্চিত করেন। দগ্ধ হয়ে আরও অনেকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এর আগে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন ৪৩ জন নিহতের কথা জানান। এর মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩৩ জন, শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে ১০ জন এবং কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে ১ জন নিহত হয়। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা অনেক। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।