দেশের ইতিহাসে প্রথম নারী হিসেবে অর্থ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য চট্টগ্রামের ওয়াসিকা আয়শা খান। এর আগে কোনো নারী অর্থ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পাননি।
শুক্রবার (১ মার্চ) সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে ওয়াসিকা আয়শা খানকে প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন। এরপর তাকে অর্থ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাণিজ্যে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করা ওয়াসিকা আয়শা খান ১৯৭১ সালের ২৪ জুলাই জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা আতাউর রহমান খান কায়সার বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ।
ওয়াসিকা আয়শা খান ২০১৪ সালে ও ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর ৩১ নম্বর সংরক্ষিত নারী আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক হন।
বর্তমানে চিটাগাং আর্টস কমপ্লেক্সের উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। তিনি জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমানোর জন্য ওকালতি করা ক্লাইমেট পার্লামেন্ট বাংলাদেশ নামক নেটওয়ার্কের ভাইস চেয়ারপারসনের দায়িত্বও পালন করেছেন।
এছাড়াও মহিলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করা ওয়াসিকা আয়শা খান ২০২১ সালের জুনে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি হন।
ওয়াসিকা আয়শা খানের সঙ্গে আরও ছয়জন নতুন মন্ত্রিসভায় স্থান পেয়েছেন। এর মধ্যে শামসুন নাহারকে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী, রোকেয়া সুলতানাকে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী, নাহিদ ইজাহার খানকে সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে। মো. শহীদুজ্জামান সরকার পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী। পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন মো. আব্দুল ওয়াদুদ।
দেশের ইতিহাসে প্রথম নারী অর্থ প্রতিমন্ত্রী নিয়োগ পাওয়ার আগে ২০২২ সালে প্রথম নারী অর্থ সচিব পায় বাংলাদেশ। ওই বছরের ১১ জুলাই অর্থসচিব হিসেবে নিয়োগ পান ফাতিমা ইয়াসমিন। তার আগে কোনো নারী অর্থ সচিব হিসেবে নিয়োগ পাননি। এবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেলেন আরও এক নারী।
উল্লেখ্য, গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হয়। বিএনপিবিহীন এ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পায় আওয়ামী লীগ। ২৯৯টি আসনের মধ্যে ২২৩টিতে জয় পায় আওয়ামী লীগ। জাতীয় পার্টি পায় ১১টি আসন। বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) ও বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি একটি করে আসনে জয় পেয়েছে। এর বাইরে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন ৬২ জন।
পরে ১০ জানুয়ারি শপথ নেন নতুন নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা। এরপর ১১ জানুয়ারি গঠিত হয় নতুন মন্ত্রিসভা, ওইদিন সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যরা শপথ নেন। সে সময় প্রধানমন্ত্রীসহ নতুন মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন ৩৭ জন। এর মধ্যে ২৫ জন মন্ত্রী এবং ১১ জন প্রতিমন্ত্রী ছিলেন।