ইসরাইলে যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য পৌঁছানোর সবচেয়ে বড় বাধা বিরোধী দল রিপাবলিকান। একাধিকবার চেষ্টার পরও বাইডেন সরকারের এ সাহায্য বিল পাশ হতে দিচ্ছেন না তারা। তাই আবারও কংগ্রেসে ইসরাইলের ‘আত্মরক্ষা বিল’ চাইলেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন।
বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউজের এক বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ‘হামাস এবং অন্যান্য হুমকি থেকে রক্ষার জন্য ইসরাইলের আত্মরক্ষা নিশ্চিতে’ সহায়তা বিলটি পাশের আহবান জানান। এমনকি গত সপ্তাহে এগিয়ে রাখা হামাস এবং ইসরাইলের মধ্যবর্তী যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব থেকেও সরে এসেছেন বাইডেন। উলটো নতুন সুর ইসরাইলের প্রেসিডেন্ট বেঞ্জামিন নেতিনিয়াহুর মুখে।
বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘যুদ্ধের সব লক্ষ্য অর্জনের আগে আন্তর্জাতিক চাপ প্রত্যাখ্যান করছি।’ আলজাজিরা।
দিন যত যাচ্ছে ইসরাইলের ভয়াবহতা ততই বিকৃত রূপ নিচ্ছে। বৃহস্পতিবার ত্রাণ গাড়ির সামনে লাইনে দাঁড়ানো হাজার হাজার মানুষের ওপর নির্বিচারে হামলা চালায় তারা। নিরীহ বেসামরিকদের মধ্যে নিহত হয়েছিলেন ১১৭ জন, আহতের সংখ্যা ৭০৬ জন। আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে এমন পৈশাচিক গণহত্যার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বহির্বিশ্বের অসংখ্য দেশ।
উত্তর গাজায় ঘটে যাওয়া এ ঘটনায় হতবাক হয়েছে চীন। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বেইজিং। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং বলেছেন, ‘আমরা হতাহতদের জন্য আমাদের শোক এবং আহতদের জন্য আমাদের সহানুভূতি প্রকাশ করছি’।
ফরাসি রাষ্ট্রপতি ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁও গাজায় মানবিক সহায়তা চাওয়া ১০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনিকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। এ ঘটনায় ইসরাইলি সৈন্যদের ভূমিকার বিষয়ে ‘সত্য ও ন্যায়বিচার’ দাবি করেছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করে ম্যাক্রোঁ জানান, ‘গাজা থেকে আসা চিত্রগুলোতে গভীর ক্ষোভ যেখানে বেসামরিক নাগরিকদের ইসরাইলি সৈন্যদের দ্বারা লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। আমি এই গুলি চালানোর তীব্র নিন্দা জানাই এবং সত্য, ন্যায়বিচার এবং আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধার আহবান জানাই।’ পাশাপাশি অবরুদ্ধ গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতিরও আহবানও জানান তিনি।
তুরস্কও ইসরাইলকে ‘মানবতার বিরুদ্ধে আরেকটি অপরাধ’ করার জন্য অভিযুক্ত করেছে। পাশপাশি গাজায় ‘দুর্ভিক্ষ’র তীব্র নিন্দা জানিয়েছে দেশটি।
একই বক্তব্য কলম্বিয়ারও। প্রতিবাদের পাশপাশি ইসরাইল থেকে অস্ত্র ক্রয় স্থগিত করেছে দেশটি।
ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইতালি, অস্ট্রেলিয়া এবং কাতারও।
জাতিসংঘের মহাসচিবও ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন- ‘আমি গাজায় বৃহস্পতিবারের ঘটনার নিন্দা করছি যেখানে জীবন রক্ষাকারী সাহায্য চাইতে গিয়ে ১০০ জনেরও বেশি লোক নিহত বা আহত হয়েছেন। গাজার মরিয়া বেসামরিক নাগরিকদের জরুরি সাহায্যের প্রয়োজন, যার মধ্যে রয়েছে উত্তরের সেইসব ব্যক্তিরা যেখানে জাতিসংঘ এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে সহায়তা দিতে পারেনি।’