প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব, প্রবীণ সাংবাদিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইহসানুল করিম হেলাল মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি...রাজিউন)। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল রাত ৮টার দিকে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, কিডনিসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন।
ইহসানুল করিমের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এক শোকবার্তায় তিনি বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব হিসেবে তিনি অত্যন্ত সততা, দক্ষতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। দীর্ঘ সাংবাদিকতার ক্যারিয়ারে তিনি রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। তার মৃত্যুতে দেশের গণমাধ্যম হারাল একজন প্রিয় সহকর্মীকে আর আমি হারালাম একজন বিশ্বস্ত কর্মকর্তাকে।’ প্রধানমন্ত্রী মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
বিএসএমএমইউর পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মো. রেজাউর রহমান বলেন, ‘রোববার রাত ৮টার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তিনি বেশ কিছুদিন ধরে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন।’
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং সূত্রে জানা গেছে, শ্বাসকষ্ট, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপসহ বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যা নিয়ে দেড় মাস ধরে ইহসানুল করিম রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। গত সপ্তাহে তাকে বিএসএমএমইউতে স্থানান্তর করা হয়।
ইহসানুল করিমের জন্ম ১৯৫১ সালের ৫ জানুয়ারি। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার আগে তিনি রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব এবং বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৭২ সালে বাসসে নিজস্ব প্রতিবেদক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন ইহসানুল করিম। ১৯৯৭ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তিনি নয়াদিল্লিতে সংস্থাটির ব্যুরোপ্রধান ছিলেন। এছাড়া বিবিসি, পিটিআই, দ্য স্টেটমেন্ট, ইন্ডিয়া টুডেসহ বিদেশী বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে কাজ করেছেন তিনি।
২০১৩ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি বাসসের প্রধান সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে চার বছর দায়িত্ব পালনের পর অবসরে যান ইহসানুল করিম। একই বছরের ২০ মে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় তাকে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের প্রেস সচিব হিসেবে নিয়োগ দেয়। ২১ মে তিনি প্রেস সচিব হিসেবে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। পরে তাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রেস সচিব হিসেবে এক বছরের জন্য নিয়োগ দেয়া হয়। পরবর্তী সময়ে তার চুক্তির মেয়াদ দুই দফায় তিন বছর করে বাড়ানো হয়।