পবিত্র রমজান মাসের তৃতীয় দিনে অসহায় গাজা বাসীদের সাহায্যার্থে 'হেল্প গাজা” প্রচারাভিযানের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ সহ বিশ্বের ৮০টি দেশের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে ২হাজার টন খাদ্য সহ ১শত ট্রাকের একটি বহর মিশরের রা'ফা সীমান্ত দিয়ে গাজা উপত্যকায় প্রবেশ করেছে।
এ সকল ত্রান সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে; চাল, পাস্তা, মটরশুটি, চিনি, তেল, চা, খেজুর, পনির, শিশুদের জন্য দুধ, জুস ছাড়াও শীত নিবারণের কম্বল, পরিচ্ছন্ন ও ব্যক্তিগত ব্যাবহারিক সামগ্রী।
আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশি শিক্ষার্থী হোজাইফা খান জানায়, আল-আজহার কতৃপক্ষের অনুমতিক্রমে The World one ummah faundetion চ্যারাটি ফান্ড এর মাধ্যমে রমজানের শুরুতেই বাংলাদেশি টাকায় মোট ৩৫ লক্ষ টাকার ত্রান পাঠিয়েছি গাজা'র অসহায় মানুষের জন্য। এই অর্থ আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা Human first, Azhar welfare society Bangladesh ও White pigon নামের ছাত্র সংগঠনের মাধ্যমে সংগ্রহ করেছিল।
তাছাড়াও বাংলাদেশের একটি সুনামধন্য বেভারেজ কোম্পানি ৪৮ লক্ষ টাকার ত্রান পাঠানোর জন্য উপায় বের করতে World one ummah faundetion এর সাথে যোগাযোগ করছে।
মিশরের বিখ্যাত আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের জাকাত অ্যান্ড চ্যারিটি ফান্ড জানায়, গত ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় ত্রাণের যত চালান গেছে, তারমধ্যে রমজানের চালানটি বৃহত্তম। বাংলাদেশ ছাড়াও আরও যে আটটি দেশের ত্রাণ এই চালানে যুক্ত হয়েছে, দেশগুলো হলো— ইন্দোনেশিয়া, ভারত, যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব, ফ্রান্স, চীন, কানাডা এবং জার্মানি।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ইরেজ সীমান্তে অতর্কিত প্রতিরোধ হামলা চালায় গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী স্বাধীনতাকামী হামাসের যোদ্ধারা। হামলাকালে ইসরাইলী বাহিনী প্রতিরোধের চেষ্টা করলে সামরিক-বেসামরিক ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিকসহ ১ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হন। হামাসের যোদ্ধারা জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় ২৪০ জন ইসরায়েলি এবং অন্যান্য দেশের নাগরিককে।
১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিনের ভূমিতে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর গত ৭৫ বছরের ইতিহাসে সেদিন প্রথম একদিনে এতজন মানুষের হত্যা দেখেছে ইসরায়েল। সেই হামলার জবাবে সেদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী এবং তার এক সপ্তাহ পর বিমান বাহিনীর সঙ্গে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও। কার্যতঃ গাজায় ইসরাইলী বাহিনী গণহত্যা চালিয়ে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৩১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। আহত হয়েছে আরও প্রায় ৭২ হাজার। নিহত ও আহতদের মধ্যে একটি বড় অংশই নারী, শিশু, কিশোর-কিশোরী এবং বেসামরিক লোকজন। এছাড়া ইসরায়েলি বাহিনীর বোমায় ঘরবাড়ি হারিয়ে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন লাখ লাখ ফিলিস্তিনি।
এই যুদ্ধের শুরু থেকে হামাস ও ইসরায়েলের সরকারের মধ্যে মধ্যস্থতা করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিসর। হামাসের হাতে থাকা অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্ত করতে এই তিন দেশের উদ্যোগে গাজায় রমজান মাস থেকে ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব তোলা হয়েছিল, কিন্তু যুদ্ধের দুই পক্ষ হামাস ও ইসরায়েলের সরকারের মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় বহু আকাঙ্ক্ষিত যুদ্ধবিরতি আর হয়নি।
উল্লেখ্য, গত ৭ই অক্টোবর, ২০২৩ সাল থেকে ব্যাপক ইহুদিবাদী আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত ৩১হাজারের ও বেশি ফিলিস্তিনি শহীদ এবং ৭১হাজারের অধিক আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে বেশিরভাগ শিশু, মহিলা এবং বৃদ্ধ ।