muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

দেশের খবর

বাবা-মায়ের সন্ধানে স্বামীকে নিয়ে খুলনায় ডেনমার্কের নারী

বাবা-মায়ের সন্ধানে স্বামীকে নিয়ে খুলনায় ডেনমার্কের নারী

বাবা-মায়ের সন্ধানে খুলনার পথে পথে ঘুরছেন আশা ওয়েলিস নামে ডেনমার্কের এক নারী। সঙ্গে রয়েছেন তার স্বামী মগেনস ফল্ক। গত তিনদিন ধরে খোঁজখবর নিয়েছেন কয়েকটি মন্দির, গির্জা, কবরস্থানসহ বিভিন্ন স্থানে। তবু হারানো সেই বাবা-মায়ের পূর্ণাঙ্গ কোনো তথ্য পাননি। বর্তমানে তারা মোংলায় রয়েছেন। সেখান থেকে সুন্দরবনে যাবেন। আশা ও তার স্বামী আগামী ৩০ মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশে থাকবেন।

আশা ওয়েলিস ১৯৭৪ সালের ১ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেন। তবে তিনি বাংলায় কথা বলতে পারেন না। তিনি বলেন, ১৯৭৪ সালের ১৪ অক্টোবর ঢাকার ইসলামপুর রোডের মিশনারিস অব চ্যারিটি থেকে ডেনমার্কের একটি পরিবার আমাকে ডেনমার্কে নিয়ে যায়। সেখানেই আমি বড় হয়েছি। আমার স্বামী এবং এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। তাদের নিয়ে আমি সুখে থাকলেও জন্মস্থানের কথা ভুলতে পারিনি। আমি জানি না কে আমার মা-বাবা। বাংলাদেশে কোনো আত্মীয়-স্বজন বেঁচে আছে কিনা তাও জানি না। আমি আমার শেকড়ের সন্ধানে এসেছি।

আশার সঙ্গে থাকা দোভাষী মোস্তফা চৌধুরী বলেন, শনিবার পর্যন্ত আমরা খুলনাতে ছিলাম। এখন মোংলাতে রয়েছি। এখান থেকে সুন্দরবন ট্যুর শেষে বরিশাল যাব। সেখান থেকে ঢাকায় যাব। এরপর আশা এবং তার স্বামী আগামী ৩০ মার্চ নিজ দেশে ফিরে যাবেন।

তিনি বলেন, আমরা সম্ভাব্য সব স্থানে আশার মা-বাবার খোঁজ করেছি। তবে সন্ধান মেলেনি। বিভিন্ন স্থানে কয়েকটি মোবাইল নম্বর দিয়ে এসেছি। তারা সন্ধান পেলে জানাবে বলে জানিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, প্রথমে আমরা ঢাকায় মিশনারিস অব চ্যারিটিতে গিয়েছিলাম। সেখানকার কর্মরতরা পুরানো কাগজপত্র দেখে জানান, ডলি মন্ডল নামে এক নারী আশাকে খুলনার সোনাডাঙ্গা এলাকার নির্মল হৃদয় শিশু সদনে রেখে এসেছিল। সদন থেকে তাকে পরে ঢাকার মিশনারিস অব চ্যারিটিতে পাঠানো হয়। সেখান থেকে আশাকে ডেনমার্কের একটি পরিবার শিশুটিকে তাদের দেশে দত্তক নিয়ে যায়। পাসপোর্টে তার নাম আশা ছিল। তবে ডেনমার্কে গিয়ে শিশুটি নাম হয় আশা ওয়েলিস।

মোস্তফা চৌধুরী বলেন, গত বৃহস্পতিবার খুলনায় নির্মল হৃদয় শিশু সদনে গিয়ে ডলি মন্ডলের ব্যাপারে খোঁজ নেওয়া হয়। তারা সম্ভাব্য কয়েকটি স্থানে খোঁজার পরামর্শ দেয়। এরপর বাগমারা গোবিন্দ মন্দির ও শীতলাবাড়ি মন্দিরে গিয়ে খবর নিয়েছি। কেউ তেমন কোনো তথ্য দিতে পারেনি। শনিবার আশা স্বামীকে নিয়ে ডলি মন্ডলের খোঁজে গিয়েছিলেন গণনবাবু রোডের যোসেফপাড়ায়। সেখান থেকেও ডলি মন্ডলের ব্যাপারে কোনো তথ্য মেলেনি। এক নারী বাবু খান রোডে সেন্ট যোসেফস ক্যাথিড্রালে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তাদের। ক্যাথিড্রালে গেলে ফাদার ও সিস্টাররা তাদের খালিশপুর নেভি গেটে খ্রিষ্টান কলোনিতে খোঁজ নেওয়ার পরামর্শ দেন। সেখানে গিয়েও ডলি মন্ডলের খোঁজ না পাওয়ায় তারা যান সিমেট্রি রোডে খিস্টান কবরস্থানে। সেখানকার কেয়ারটেকার পিটার তাদের ডলি মন্ডল নামে এক নারীর কবর দেখান। কিন্তু ডলি মন্ডলের বিস্তারিত পরিচয়ও কেউ বলতে পারেনি।

Tags: