muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

ক্যাম্পাস

ছাত্র রাজনীতি ইস্যুতে ফের উত্তাল বুয়েট, শিক্ষার্থীদের ৬ দাবি

ছাত্র রাজনীতি ইস্যুতে ফের উত্তাল বুয়েট, শিক্ষার্থীদের ৬ দাবি

এক বিশেষ রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের ক্যাম্পাসে প্রবেশের ঘটনায় ফের উত্তাল হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)। ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধসহ ৬ দফা দাবি ও কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন শিক্ষার্থীরা। দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে এই আহ্বান জানান শিক্ষার্থীরা। তারা জানান, দাবি না মেনে নেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন তারা। এসময় বুয়েট ছাত্র কল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক (ডিএসডব্লিউ) অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমানের পদত্যাগ দাবি করেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের ৬ দফা দাবি ও কর্মসূচি

১. বিশ্ববিদ্যালয়ের সুস্পষ্ট বিধিমালা লঙ্ঘনের দায়ে ২৮ মার্চ মধ্যরাতে রাজনৈতিক সমাগমের মূল সংগঠক ২১তম ব্যাচের পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ রাব্বিকে বুয়েট থেকে স্থায়ী বহিষ্কার ও হলের সিট বাতিল করতে হবে। ২. ইমতিয়াজের সঙ্গে বুয়েটের বাকি যেসব শিক্ষার্থী জড়িত ছিলেন তাদের বিভিন্ন মেয়াদে হল ও টার্ম বহিষ্কার করতে হবে। ৩. রাজনীতি সংশ্লিষ্ট বহিরাগত যারা ক্যাম্পাসে ঢুকেছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, তারা কেন ও কীভাবে প্রবেশের অনুমতি পেলেন- এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট জবাবদিহি দিতে হবে বুয়েট প্রশাসনকে। ৪. ১ ও ২ নম্বর দাবি আগামীকাল শনিবার সকাল ৯টার মধ্যে বাস্তবায়ন করা না হলে বুয়েটের শিক্ষার্থীরা ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের (ডিএসডব্লিউ) পদত্যাগ চান।

৫. ক্যাম্পাসে মধ্যরাতে বহিরাগতদের প্রবেশের কারণে শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। এর প্রতিবাদ হিসেবে আগামীতাল শনিবার ও পরদিন রোববার টার্ম ফাইনালসহ সব অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করা হবে। ৬. আন্দোলনরত বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কোনো রকম হয়রানিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না, এই মর্মে লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে হবে।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, ২৮ মার্চ রাত ১টার দিকে বুয়েটে একটি বিশেষ রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের বেশ কজন শীর্ষস্থানীয় নেতা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন। অথচ রাত সাড়ে ১০টার পর যেখানে নিরাপত্তার কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীদেরই ক্যাম্পাসে ঢোকার অনুমতি নেই, সেখানে রাজনৈতিকভাবে সংশ্লিষ্ট বহিরাগতরা মধ্যরাতেই ক্যাম্পাসে অনুপ্রবেশ করে।

সাধারণ শিক্ষার্থীরা আরও বলছেন, ২৮ মার্চ রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে একের পর এক বহিরাগত রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার ক্যাম্পাসের মেইন গেটের সামনে আসতে থাকে। বিপুল সংখ্যক বহিরাগত ক্যাম্পাসে অনায়াসে প্রবেশ করতে থাকে এবং এক পর্যায়ে সেখানে উপস্থিত সাধারণ শিক্ষার্থীরা দেখতে পান, মিছিলের মতো করে বিশাল একটি জনবহর হাতে ফুলের তোড়া নিয়ে রাত ২টার পর ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে।

শিক্ষার্থীরা বলেন, এই বিশাল জনবহরের সবাই বহিরাগত। তাদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। সেসময় সাধারণ শিক্ষার্থীরা ওই ছাত্র সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের চিনতে পারেন।

বুয়েট শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা অনুযায়ী রাজনীতি নিষিদ্ধ এমন একটি ক্যাম্পাসে রাতের আঁধারে রাজনৈতিক সমাগম এবং বহিরাগতদের আগমন ক্যাম্পাসের মর্যাদার প্রতি অপমানজনক। একই সঙ্গে এটি একটি নিরাপদ ক্যাম্পাস এবং শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক শিক্ষা পরিবেশের নিরাপত্তাকে গুরুতরভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করে। উল্লেখ্য, ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হাতে আবরার হত্যার পর বুয়েট ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ হয় ছাত্র রাজনীতি। এর আগেও রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের ক্যাম্পাসে প্রবেশের ঘটনায় শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমেছিলেন।

Tags: