গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা ক্ষেত্রে পারিবারিক ব্যয় বেড়েছে। এক জরিপে বলা হয়েছে, প্রাথমিকে ২৫ শতাংশ এবং মাধ্যমিকে ৫১ শতাংশ বেড়েছে শিক্ষা ব্যয়।
‘বাংলাদেশে বিদ্যালয় শিক্ষা: মহামারী উত্তর টেকসই পুনরুত্থান’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বেসরকারি সংস্থাগুলোর মোর্চা গণসাক্ষরতা অভিযান এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
এডুকেশন ওয়াচের চেয়ারপারসন ও জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ প্রণয়ন কমিটির কো-চেয়ারম্যান কাজী খলীকুজ্জমান আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরীসহ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরেন, গণসাক্ষরতা অভিযানের উপপরিচালক ও গবেষক দলের সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান। সারাদেশের আটটি বিভাগের ১৬টি জেলার মধ্যে থেকে ২৬টি উপজেলা ও পাঁচটি সিটি করপোরেশন এলাকা থেকে তথ্য সংগ্রহ করে গবেষণাটি করা হয়েছে। গবেষণার জন্য প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক, শিক্ষা কর্মকর্তা ও জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা মিলিয়ে মোট সাত হাজার ২২৫ জন কাছ থেকে তথ্য নেয়া হয়েছে।
মোস্তাফিজুর রহমান জানান, শিক্ষার্থীদের ব্যয়ের চিত্রটি বের করা হয়েছে পঞ্চম শ্রেণি এবং নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার খরচের ভিত্তিতে। তিনি বলেন, ২০২২ সালে (জানুয়ারি-ডিসেম্বর) দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীর জন্য বার্ষিক পারিবারিক গড় ব্যয় ছিল ১৩ হাজার ৮৮২ টাকা। তবে শহরাঞ্চলে এই খরচ বেশি। মফস্বল এলাকায় প্রাথমিক শিক্ষার্থীপিছু বার্ষিক পারিবারিক ব্যয় ছিল ১০ হাজার ৬৩৭ টাকা; যা শহরাঞ্চলে ছিল ১৮ হাজার ১৩২ টাকা। কিন্তু পরের বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালের প্রথম ছয় মাসেই প্রাথমিকে এই খরচ ২৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে আট হাজার ৬৪৭ টাকা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২২ সালে মাধ্যমিক স্তরের একজন শিক্ষার্থীর জন্য পরিবারের ব্যয় ছিল ২৭ হাজার ৩৪০ টাকা। মফস্বল এলাকায় এ খরচ ২২ হাজার ৯০৯ টাকা এবং শহরাঞ্চলে ৩৫ হাজার ৬৬২ টাকা। কিন্তু গত বছরের প্রথম ছয় মাসে এই খরচ ৫১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ হাজার ৭১২ টাকা।
গবেষণার তথ্য বলছে, প্রাথমিক পর্যায়ে ৫৬ দশমিক ৫ শতাংশ ও মাধ্যমিকে ৫২ দশমিক ৬ শতাংশ শিক্ষার্থী মহামারির পরে তাদের নতুন শ্রেণির পাঠ অভিজ্ঞতা সম্পর্কে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছে। কিন্তু প্রায় অর্ধেক শিক্ষার্থী পাঠ বোঝার ক্ষেত্রে অসুবিধায় ছিল।