ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যা ইউনিয়নের ‘আব্বা বাহিনী’র প্রধান আফতাব উদ্দিন ওরফে রাব্বির জামিন স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। একইসঙ্গে তাঁকে সংশ্লিষ্ট আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
রোববার আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম এই আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এম সাইফুল আলম। আফতাবের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক।
এর আগে সাইফুল ইসলাম ওরফে রাসেল হত্যার অভিযোগে করা মামলায় আফতাবকে গত ২১ মার্চ জামিন দেন হাইকোর্ট। পরে ওই জামিনের বিরুদ্ধে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। যা আজ রোববার চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে।
এম সাইফুল আলম বলেন, রাসেল হত্যা মামলার প্রধান আসামি আফতাব। সে আব্বা বাহিনীরও প্রধান। হাইকোর্টের জামিনের পর আফতাব কারামুক্তি পান। চেম্বার আদালত তাঁর জামিন স্থগিত করে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন। এরফলে তাকে কারাগারে যেতেই হচ্ছে।
এর আগে গত ১৭ জানুয়ারি দুপুরে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে আফতাবসহ ১২ জনের গ্রেপ্তারের তথ্য নিশ্চিত করেছিলেন।
গ্রেপ্তারকৃত বাকি ১১ জন হলেন: আলমগীর হোসেন ওরফে ঠান্ডু (৩৯), মো. আমির হোসেন (৩৮), মো. রনি (৩৫), মো. শিপন (৩১), মো. রতন শেখ (২৮), অনিক হাসান হিরা (৩০), রাজিব আহমেদ (৩৫), মো. সজিব (৩৬), ফিরোজ (৩১), মো. মাহফুজুর রহমান (৩৬) ও দেলোয়ার হোসেন দেলু (৩৭)।
পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, গত ১০ জানুয়ারি দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের তেলঘাট পারভিন টাওয়ারের নিচে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (বর্তমানে বহিষ্কৃত) আফতাব উদ্দিন রাব্বির অফিসে রাসেল নামে এক যুবককে হত্যা করা হয়। পরে আফতাব ও তার লোকজন আত্মগোপন করেন। পরে নিহত রাসেলের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা তোফাজ্জল হাওলাদার বাদী হয়ে ১৩ জনের নামে থানায় মামলা করেন।
পরে পুলিশ ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে ছয় সহযোগীসহ মামলার প্রধান আসামি আব্বা বাহিনীর প্রধান আফতাবকে গ্রেপ্তার করে। এছাড়া বিভিন্ন জেলায় অভিযান চালিয়ে আরও ছয় আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা জানান, রাসেল ও আব্বা বাহিনীর প্রধান আফতাব উদ্দিন রাব্বি ঘনিষ্ঠ বন্ধু। চাঁদার টাকা ভাগাভাগি ও লেনদেনকে কেন্দ্র করে দুজনের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এর জেরে আফতাবের অফিসে ডেকে নিয়ে আফতাব ও তার সহযোগীরা রাসেলের ওপর রাতভর নির্যাতন চালান।
পরদিন সকালে স্বজনরা রাসেলকে সেখান থেকে উদ্ধার করে মিটফোর্ড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনার পর আফতাবের অফিসে রাসেলকে নির্যাতনের একাধিক ভিডিও ফুটেজ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।