muktijoddhar kantho logo l o a d i n g

জাতীয়

আমরা অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতাদখলের বিরোধী : প্রধানমন্ত্রী

মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠ ডেস্কঃ  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তুরস্কে সেনা অভ্যুত্থানের খবর এসেছে। কিন্তু সেই দেশের জনগণ সেই অভ্যুত্থান ব্যর্থ করে দিয়েছে। আমরা বরাবরই বলে আসছি আমরা অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতাদখলের বিরোধী।তুরস্কের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ‘জনগণই শক্তিআসেম সম্মেলন শেষে দেশে ফিরে এক সংবাদ সম্মেলনে রোববার এ সব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। গণভবনে বিকেল ৪টায় এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘যখন আমরা আসেম সম্মেলনে তখনই ফ্রান্সে হামলার ঘটনার খবর আসে। আমি তখনও নিন্দা জানিয়েছি, এখনও নিন্দা জানাচ্ছি। এরপরই তুরস্কের সেনা অভ্যুত্থানের খবর আসে।’

তিনি বলেন, ‘আসেম সম্মেলনে আমি আমার বক্তব্যে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের কথা তুলে ধরি। পাশাপাশি জঙ্গিবাদের মদদদাতা, অর্থদাতা, অস্ত্রদাতাদের খুঁজে বের করতে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করি।’

সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রবাদ রোধে সরকারের অবস্থান উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিভিন্ন দেশের কয়েকজন নেতার সঙ্গে সাইডলাইনে আমার বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে সন্ত্রাসবাদ প্রতিহতে সরকারের জিরো টলারেন্সের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছি। এ ছাড়া গুলশানে হামলার ঘটনা তদন্তে আমাদের উদ্যোগ জাপানের প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেছি।’

জাপান জানিয়েছে, গুলশানে হামলার ঘটনা বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগ ও অন্যান্য বিনিয়োগে কোনো প্রভাব ফেলবে না- যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

 

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখন দেখা যাচ্ছে উচ্চবিত্তরা ভালো খায়, ভালো থাকে, সব সুখ পেয়ে বেহেস্তে হুরপরী পাওয়ার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। মানুষ খুন করলে বেহেস্তের দরজা খোলে না। আগে যেমন গলা উঁচু কথা বলতাম গুলশানের এ ঘটনা  তা একটু হলেও অন্য দেশের কাতারে নিয়ে গেছে।’

তিনি বলেন, ‘সব শিক্ষক–ছাত্র সন্ত্রাসী নয় । গ্রাম পর্যায় থেকে এ জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে এর বিরুদ্ধে। সবচেয়ে কষ্ট একটা শিক্ষক কীভাবে তার ছাত্রকে এভাবে মরণের দিকে ঠেলে দিতে পারে। এটি দুর্ভাগ্যজনক। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ভলেনটিয়ার দিয়ে এদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আসেম সম্মেলনে বিশ্ব নেতাদের কাছে প্রস্তাব রেখেছি  জঙ্গি দমনে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে। সেখানেও আলোচনা হয়েছে কারা অস্ত্র ও ট্রেনিং দিচ্ছে তাদের বের করতে হবে। সেখানে হুর পরীর কথা এসেছে। আমি বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বলেছি, সকলের সহযোগিতা চাই। তবে বসে থাকলে হবে না।  আমরাও বসে নেই। তবে জঙ্গি হামলা এটি বাংলাদেশ প্রথম নয়। ৮১ সালের পর দেশে ফেরার পর থেকে এ ধরনের আক্রমণ চলেছে।’

গুলশান হত্যাকাণ্ডে দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমের প্রচারের ধরন নিয়ে সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘অপ্রিয় হলেও একটি সত্য কথা বলি, বাংলাদেশকে নেতিবাচকভাবে প্রচার করা দেশি মিডিয়া থেকেই বেশি হয়েছে। বিশ্ব মিডিয়ায় বাংলাদেশের মিডিয়ার মতো মৃতদেহ দেখানো হয় না। বাংলাদেশের মিডিয়া যা প্রচার করে তাই বিদেশি মিডিয়া নেয়। বিবিসি, সিএনএন তাই দেখিয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর একটার পর একটা ক্যু হয়েছে। মোট ১৮টি ক্যু হয়েছে। আওয়ামী লীগ ছাড়া যারা বাংলাদেশে ক্ষমতায় এসেছে তারা আগে নিজের আখের গড়েছে। আমি যখন আসেম সম্মেলনে অবস্থান করছি তখন তুরস্কে সেনাবাহিনী কিছু অংশ ক্ষমতা দখলের অপচেষ্টা করে।’

শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্ব মন্দার পর বিভিন্ন বাধার পরেও বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশে উন্নতি হয়েছে।পদ্মা সেতু প্রকল্প বিশ্বব্যংক বন্ধ করে দিয়েছে মাত্র একটি ব্যক্তির স্বার্থে। তারা আমার ছেলে, মে, বোন, আত্মীয় স্বজনে দুর্নীতি খুঁজে কিছুই পায়নি। আমি একটা চ্যালেঞ্জ দিয়ে পদ্মা সেতু তৈরি শুরু করি। বাংলাদেশ এখন একটি সম্মানজনক অবস্থায় চলে গেছে। যারা এদেশের স্বাধীনতা চায় না তারাই্ বাংলাদেশকে হেয় দেখতে চায়। ২০১৪ সালে অনেকে চায়নি নির্বাচন হউক।২০০৯ সালে নির্বাচনের ২ মাসের মাথায় পিল খানার ঘটনায় ৪০টা ব্যাটেলিয়ন বিদ্রোহ করে। এরপর ২০১৩ তে শুরু হয় আগুন সন্ত্রাস। সব কাটিয়ে আমরা এগিয়ে চলছি।’

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতির প্রচলন শুরু হবে কি না এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ছাত্ররাজনীতি কোথাও নিষিদ্ধ নেই। আমাদের রাজনীতি তো শুরু হয়েছে স্কুল থেকে। স্কুলের প্রাচীর টপকিয়ে আমরা মিছিলে অংশ নিতাম।’

তিনি বলেন, ‘বিশ্বে সকলের মধ্যে এ জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সচেতনতা দাঁড়িয়ে গেছে। যারা যুদ্ধাপরাধ, সন্ত্রাসের সঙ্গে আছে তারাই এর বিরুদ্ধে। তারা সর্প হয়ে দংশন করবে আর ওঝা হয়ে ঝাড়বে। আতঙ্ক সৃষ্টি করা তাদের উদ্দেশ্য।’

সম্প্রতি হত্যাকাণ্ডের বিচার নিয়ে প্রশ্নে জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটা ঘটনা হলে তার তদন্ত করতে সময় লাগে। যত বিচার সব আমি করছি। নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যুদ্ধাপরাধের বিচারসব অনেক বিচার আমিই করেছি। ঘটনা ঘটার পর সময় দিতে হবে। দুঃখজনক ২১ জন জঙ্গির মামলা হাইকোর্টে ঝুলে আছে। বারবার তাগাদা দেওয়ার পরও পদক্ষেপ নিচ্ছে না। সব বিভাগে সব ধরনের লোক আছে। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেও রাজনীতিকরণের কথা ওঠে।’

 

মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠ ডটকম/     ১৭ – ০৭-২০১৬ ইং/মো:হাছিব

Tags: