ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেছেন, মিল্টন সমাদ্দারের ‘চাইল্ড এন্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’ আশ্রমে থাকা ব্যক্তিদের দায়িত্ব নিয়েছে শামসুল হক ফাউন্ডেশন নামের একটি প্রতিষ্ঠান। এখন থেকে মিল্টনের আশ্রমে থাকা বৃদ্ধ, অনাথ শিশু ও মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষদের থাকা, খাওয়া ও চিকিৎসা সেবার দায়িত্ব পালন করবে এই ফাউন্ডেশন। সোমবার (৬ মে) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সামনে ডিবি প্রধান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ আশ্রমে বর্তমানে ৪৫ জন শিশু আছে বলে আদালতকে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দার। শুনানির একপর্যায়ে তিনি বলেন, আশ্রমে বর্তমানে ৪৫টা বাচ্চা আছে। ডিবিকে বলেন তাদের নিয়ে যেতে।
রোববার (৫ মে) তিন দিনের রিমান্ড শেষে মিল্টন সমাদ্দারকে আদালতে হাজির করেন তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির মিরপুর জোনাল টিমের উপ-পরিদর্শক মোহাম্মদ কামাল হোসেন।
এরপর তাকে মানবপাচার আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোসহ সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে ডিবি পুলিশ। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেরা মাহবুব তাকে মানবপাচার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন। এছাড়া শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম শান্তা আক্তারের আদালত তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আদালতে মিল্টন সমাদ্দারের আর্জির ব্যাপারে জানতে চাইলে ডিবি প্রধান হারুন বলেন, আমরা মিল্টন সমাদ্দারকে নতুন মামলায় চারদিনের রিমান্ডে নিয়েছি। তথাকথিত মানবতার ফেরিওয়ালা সেজে মানুষদের প্রতারিত করে বৃদ্ধ, অনাথ, মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন মানুষকে দেখিয়ে তিনি যে টাকা কামাচ্ছিলেন তা তার অ্যাকাউন্টে জমা হচ্ছিল। তিনি কিন্তু এসব টাকা ওই আশ্রিত মানুষের পেছনে খরচ করছিলেন না, চিকিৎসা দিচ্ছিলেন না। তার বিরুদ্ধে আরও অনেক লোমহর্ষক তথ্য আমরা পেয়েছি। তদন্ত চলমান। তদন্ত শেষ না করে কিছু বলা ঠিক হবে না।
হারুন বলেন, আমরা একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে পেয়েছি। তিনি গতকাল আমাদের এখানে এসেছিলেন। আমরা তাকে অনুরোধ করেছি। প্রতিষ্ঠানের নাম আলহাজ্ব শামসুল হক ফাউন্ডেশন। প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার মিল্টন সমাদ্দারের ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ নামক আশ্রমের পুরো দায়িত্ব নিতে রাজি হয়েছেন। সব খরচ তিনি বহন করবেন। ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ আশ্রমের আশ্রিত গরীব, অসহায় মানুষগুলোকে সেবা সেখানেই দেবে আলহাজ্ব শামসুল হক ফাউন্ডেশন। আপাতত এটা চলবে। পরে অন্য চিন্তাভাবনা করবো।
মানবপাচার আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোসহ চার দিনের রিমান্ডে থাকা মিল্টন সমাদ্দার জিজ্ঞাসাবাদে নতুন করে কী তথ্য পেলেন জানতে চাইলে হারুন বলেন, যেসব তথ্য আমরা পেয়েছি, সেগুলো যাচাই বাছাই চলছে। সব অভিযোগেরই তদন্ত হবে। কোনোক্রমেই ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।
মিল্টন সমাদ্দারকে মাদকসেবী বলছেন। মাদকসেবনের ব্যাপারে কী ধরনের তথ্য পেয়েছেন? জানতে চাইলে হারুন বলেন, তিনি যে মাদক সেবন করেন, ইয়াবা খান সেটি তো তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন।