ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তৃতীয় ধাপে কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন এডভোকেট মোজাম্মেল হক মাখন। তাঁর ওই বিজয় জনতার ভালোবাসার বিজয় বলে অভিমত দিয়েছেন উপজেলার সামাজিক, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও নির্বাচনর অবজারবেশন টিম।
নির্বাচনের তফসিলের পর থেকে ভোটগ্রহণ পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠ পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, বিছিন্ন কয়েকটা সহিংস ঘটনা ছাড়া অবাধ নিরপেক্ষ ভোটগ্রহণ হয়েছে। যা সুষ্ঠ নির্বাচন অনুষ্ঠানে কোনো রকম প্রভাব ফেলতে পারেনি। তবে চেয়ারম্যান পদে অধিকাংশ প্রার্থীরা সাধারণ ভোটার ও কর্মীদের পক্ষে আনতে কাড়ি-কাড়ি টাকা খরচ করেছেন। অন্যদিকে বিজয়ী প্রার্থী এডভোকেট মোজাম্মেল হক মাখন ছিলেন পুরোটাই ব্যতিক্রম। তাঁর নির্বাচনী অধিকাংশ ব্যয় নির্বাহ করেছেন সাধারণ কর্মী-সমর্থকরা।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের অবজারবেশন টিমের সদস্য মতিউর রহমান মাহবুব চৌধুরী বলেন, বিছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া এবারের ভোট অবাধ, সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে। তবে কয়েকজন চেয়ারম্যান প্রার্থী অধিক টাকা খরচ করে নির্বাচনের পরিবেশটা নষ্ট করেছে, যা আমাদের জন্য সুখকর নয়। তবে সধারণ জনতার ভালোবাসায় চেয়ারম্যান হয়েছেন মোজাম্মেল হক মাখন।
করিমগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রবিউল আওয়াল বলেন, জনপ্রতিনিধি হতে হলে যে মানুষের পাশে থাকতে হয়, নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক মাখন আমাদের সবাইকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছেন। শুধু টাকা খরচ করলেই জনপ্রতিনিধি হওয়া যায়না, সাধারণ মানুষের সুখে-দুঃখে পাশে থাকা, নিপীরিত মানুষের অধিকার আদায়ে কথা বলা এগুলোতে আজকের এই বিজয়ী প্রার্থীর বিগত দিনে যথেষ্ট ভূমিকা ছিল।
নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান এডভোকেট মোজাম্মেল হক মাখন বলেন, এ বিজয় জনতার বিজয়, এ বিজয় জনতার ভালোবাসার বিজয়। বিগত পনেরো বছর করিমগঞ্জ উপজেলার সর্বস্তরে যেভাবে মিশেছি, জনগণ তার প্রতিদান দিয়েছে। আমি উপজেলাবাসির প্রতি চিরকৃজ্ঞ। জীবনের বাকি সময়টুকু মানুষের কল্যাণে কাটিয়ে দিতে চাই।
এবার করিমগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৮ জন, পুরুষ ভাইস-চেয়ারম্যান পদে ৪ জন, মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান পদে ৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেছিলেন।
করিমগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন অ্যাডভোকেট মোজাম্মেল হক মাখন (হেলিকপ্টার)। নির্বাচনে তিনি এক হাজার ২৭৬ ভোটের ব্যবধানে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীকে পরাজিত করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
কেন্দ্র থেকে পাওয়া ফল অনুযায়ী, হেলিকপ্টার প্রতীকে নিয়ে অ্যাডভোকেট মোজাম্মেল হক মাখন পেয়েছেন ২৭ হাজার ৯২৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শফিউল আলম জনি (দোয়াত কলম) পেয়েছেন ২৬ হাজার ৬৪৮ ভোট। জাতীয় পার্টির প্রার্থী আমজাদ হোসেন খান দিদার (লাঙ্গল) পেয়েছেন ১৫ হাজার ৩৭১ ভোট। এছাড়া কাপ পিরিচ প্রতীকের প্রার্থী ফজলুর রহমান রাজু পেয়েছেন ১১ হাজার ২৫৬ ভোট।