রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) আরবান রেজিলিয়েন্স প্রজেক্টের অধীনে পরিচালিত গবেষণায় উঠে এসেছে, টাঙ্গাইলের মধুপুর ফল্টে ৬ দশমিক ৯ মাত্রার ভূমিকম্প হলে ঢাকার ৮ লাখ ৬৪ হাজার ৬১৯টি থেকে ১৩ লাখ ৯১ হাজার ৬৮৫টি ভবন ধসে পড়বে।
শনিবার (১ জুন) রাজউক আয়োজিত ভূমিকম্প ঝুঁকি মোকাবিলাবিষয়ক এক সেমিনারে এ তথ্য তুলে ধরেন রাজউকের প্রধান প্রকৌশলী এবং প্রকল্পের পরিচালক আবদুল লতিফ হেলালী।
আবদুল লতিফ হেলালী জানান, টাঙ্গাইলের মধুপুর ফল্টে ৬.৯ মাত্রার ভূমিকম্প হলে ঢাকার ৮ লাখ ৬৪ হাজার ৬১৯টি থেকে ১৩ লাখ ৯১ হাজার ৬৮৫টি ভবন ধসে বা ভেঙে পড়বে, যা মোট ভবনের ৪০.২৮ থেকে ৬৪.৮৩ শতাংশ। এ ছাড়া যদি সিলেট লাইনমেন্টে ৭.১ মাত্রার ভূমিকম্প হয়, তাহলে ঢাকার ৪০ হাজার ৯৩৫টি থেকে ৩ লাখ ১৪ হাজার ৭৪২টি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হবে; যা মোট ভবন সংখ্যার ১.৯১ থেকে ১৪.৬৬ শতাংশ।
প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, মধুপুর ফল্টে যদি সকালের দিকে ৬.৯ মাত্রার ভূমিকম্প হয়, তাহলে ঢাকায় ২ লাখ ১০ হাজার থেকে ৩ লাখ ১০ হাজার মানুষ নিহত হবে। দুপুরে হলে ২ লাখ ৭০ হাজার থেকে ৪ লাখ, এবং রাতে হলে ৩ লাখ ২০ হাজার থেকে ৫ লাখ মানুষ নিহত হবে।
হেলালী বলেন, রাজউক এলাকার অধীনে ঢাকায় ২১ লাখ ৪৭ হাজার ২১৯টি ভবন রয়েছে, যার মধ্যে পাকা ভবন ৫ লাখ ১৩ হাজার ৫০৭টি। ৩ হাজার ২৫২টি (পাকা) ভবনের উপর জরিপ পরিচালনা করা হয়। এগুলোর মধ্যে অতি-ঝুঁকিতে থাকা ৪২টি ভবন সম্পূর্ণ ভেঙে ফেলার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, বর্তমানের পরিকল্পনায় ভবিষ্যতের ঢাকাকে গড়ে তুলবে। ১২৫ বছর ধরে বড় কোনো ভূমিকম্প হয়নি। বিশেষজ্ঞরা বলেন সহসাই একটি বড় ভূমিকম্প হতে পারে। তাই এ বিষয়ে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করছে সরকার। যত দ্রুত সম্ভব এ কাজটি করতে হবে। টেকসই অবকাঠামোর ব্যাপারে সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। রাজউকের সাথে দেশি ও বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে শহরে ভূমিকম্প সহনশীলতার বিষয়ে কাজ চলমান রয়েছে।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী র আ ম উবায়দুল চৌধুরী বলেন, ভূমিকম্পের ঝুঁকি মোকাবিলায় সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন।
উবায়দুল চৌধুরী বলেন, বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ভূমিকম্পের ঝুঁকি বাড়ছে। বিদ্যমান দুর্বলতাকে কাটিয়ে সরকার দুর্যোগ ঝুঁকি এড়াতে কাজ করে যাচ্ছে। ভবনের তদারকির সঙ্গেসঙ্গে নিয়ম চাপিয়ে না দিয়ে– জনগণের মধ্যে ভূমিকম্প-সংক্রান্ত ঝুঁকির বিষয়গুলোতে সচেতনতা বাড়াতে হবে।
রাজউকের আয়োজনে চলা দুদিনের এই সেমিনার শেষ হবে ২ জুন। সেমিনারে রাজউক চেয়ারম্যান, সচিবসহ দেশি-বিদেশি অতিথিরা আলোচনা করেন।