পৃথিবীর জনসংখ্যা যতই বাড়ুক, চিন্তা নেই। পৃথিবীর বাইরেও মানুষের থাকার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা খুঁজে পেয়ে গেছে নাসা। চাঁদের মতো এই জায়গা নিয়ে পরিশ্রম করতে হবে না। জায়গাটি আগে থেকেই নাকি মানব বসবাসের যোগ্য। আর সেই জায়গাটিই খুঁজে পেয়েছে নাসার টেলিস্কোপ! এটি ব্যবহার করেই নাকি পৃথিবীর মতো বায়ুমণ্ডলসহ একটি এক্সোপ্ল্যানেট খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
জানা গেছে, এই এক্সোপ্ল্যানেটটি পৃথিবীর চেয়ে কিছুটা চওড়া এবং এর তাপমাত্রা প্রায় ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই এক্সোপ্ল্যানেটটি মাত্র কয়েক দিনেই তার নক্ষত্রকে একবার প্রদক্ষিণ করে।
জনবসতি গড়ে তোলার জন্য, এই এক্সোপ্ল্যানেট নিয়ে আশা প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা। তারা আশা করছেন, এই গ্রহে প্রাণের সম্ভাবনা থাকতে পারে। সম্ভাব্য এই নতুন গ্রহটি গ্লিস ১২বি (Gliese 12b) নামে পরিচিত, যা বিজ্ঞানীদের ভাষায় এক্সোপ্ল্যানেট। গ্লিস ১২বি পৃথিবী থেকে প্রায় ৪০ আলোকবর্ষ দূরে মীন রাশিতে অবস্থিত একটি ছোট এবং শীতল লাল বামন নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করে চলেছে।
গ্লিস ১২বি এক্সোপ্ল্যানেটটি আবিষ্কার করেছে নাসার ট্রান্সিটিং এক্সপ্লোনেট সার্ভে স্যাটেলাইট (Transiting Exoplanet Survey Satellite/TESS)।বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই এক্সোপ্ল্যানেটের প্রস্থ পৃথিবীর তুলনায় প্রায় ১.১ গুণ বলে অনুমান করা হচ্ছে। এই প্রস্থই এক্সোপ্ল্যানেটটিকে আমাদের গ্রহের পাশাপাশি শুক্রের মতো করে তোলে, যাকে পৃথিবীর যমজ বোন বলা হয়। গ্লিস ১২বি তার নক্ষত্রকে মাত্র ১২.৮ দিনেই একবার প্ৰদক্ষিণ করে। যেহেতু এই লাল বামন গ্লিস ১২বি সূর্যের আকারের প্রায় এক চতুর্থাংশ, তাই এটি পৃথিবীর নক্ষত্রের চেয়েও অনেক বেশি শীতল।
অর্থাৎ যদিও গ্লিস ১২বি তার লাল বামন নক্ষত্র থেকে সূর্য এবং পৃথিবীর মধ্যে দূরত্বের মাত্র ৭ শতাংশ সমান দূরত্বে রয়েছে, তাই এটি এখনও বাসযোগ্য অঞ্চল। এই এলাকাটি 'গোল্ডিলক্স জোন' নামেও পরিচিত।
গ্লিস ১২বি সূর্য থেকে শুক্রের প্রাপ্ত বিকিরণের প্রায় ৮৫ শতাংশ গ্রহণ করে, কিন্তু শুক্রের পৃষ্ঠের তাপমাত্রা ৮৬৭ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৪৬৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস) এর তুলনায় এর পৃষ্ঠের তাপমাত্রা ১০৭ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস) বলে মনে করা হয়।
যদিও পৃথিবী এবং শুক্র উভয়ই সূর্যের বাসযোগ্য অঞ্চলে রয়েছে, একটিতে জীবন সম্ভব এবং একটি অনুকূল পরিবেশ রয়েছে, অন্যটি একটি অবাসযোগ্য আগুনে পরিবেশ, যেখানে তাপমাত্রা এত গরম যে সীসাও গলে যেতে পারে।
অবশ্য গ্লিস ১২বি আবিষ্কারের পেছনে থাকা বিজ্ঞানী দল এখনও নিশ্চিতভাবে বলতে পারেননি যে, এই এক্সোপ্ল্যানেটে সত্যিই বায়ুমণ্ডল আছে কিনা। তাই পৃথিবীর মতো এটিও বাসযোগ্য হতে পারে কিনা- তা স্পষ্ট নয়। তবে গবেষকরা আশাবাদী।