স্ত্রীর দায়ের করা যৌতুক ও নির্যাতনের মামলায় নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেনকে জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (২০ জুন) দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ উম্মে সরাবন তহুরা এ আদেশ দেন।
এর আগে চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিন আবেদন করলে আদালত তার আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) রকিবউদ্দিন আহমেদ।
মাকসুদ হোসেন জেলা জাতীয় পার্টির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। বর্তমানে তিনি দলটির নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সহসভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করছেন। জেলা জাতীয় পার্টির সহসভাপতি মাকসুদ হোসেন গত ৮ মে বন্দর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আনারস প্রতীকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। গত ১১ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে চেয়ারম্যানের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন তিনি।
তবে নির্বাচনের আগে গত ২৩ এপ্রিল মাকসুদের দ্বিতীয় স্ত্রী সুলতানা বেগম তার বিরুদ্ধে যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে নারায়ণগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলার আবেদন করেন।
শুনানি শেষে আদালত মামলা রেকর্ড (নথিভুক্ত) করে বিষয়টি তদন্তের জন্য বন্দর থানাকে নির্দেশ দেন। পরদিন বন্দর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলাটি রেকর্ড হয়।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, মাকসুদ হোসেন ১৯৯৮ সালে সুলতানা বেগমকে বিয়ে করেন এবং এ পরিবারে তাদের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। সুলতানা তার দ্বিতীয় স্ত্রী। মাকসুদ এর আগে বিয়ে করলেও সুলতানা তা জানতেন না। তাদের বিয়ের দুই বছর পর মাকসুদ তার পৈতৃক সম্পত্তির অংশ বিক্রি করে টাকা আনতে চাপ দেন বলে অভিযোগ সুলতানার।
তিনি টাকা দিতে অস্বীকার করলে অভিযুক্ত মাকসুদ তার স্ত্রী ও মেয়েকে শ্বশুর বাড়িতে রেখে যায়। মাঝে মধ্যে যোগাযোগ করতেন বলে অভিযোগ সুলতানার। এরপর ২০২২ সালের ১১ নভেম্বর আদালতে মামলা করতে বাধ্য হন তিনি।
ওই মামলাটি আদালতে বিচারাধীন জানিয়ে মাকসুদের দ্বিতীয় স্ত্রী সুলতানা বেগম অভিযোগ করেন, গত ২১ এপ্রিল তার স্বামী কয়েকজন বন্ধুসহ তার শ্বশুরবাড়িতে এসে পূর্বে করা যৌতুকের মামলা তুলে নেয়ার হুমকি দেন। এতে সুলতানা ও তার মেয়ে প্রতিবাদ করলে সুলতানার স্বামী মাকসুদ হোসেন তাদের মারধর করেন।